জলপাইগুড়ি, 21 ফেব্রুয়ারি: ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে আরও তৎপর রেল ও বনবিভাগ ৷ তাদের সহায়তায় 30 হাজার মার্কিন ডলার খরচে লাগানো হতে চলেছে এলিসেন্স ডিভাইস । জলপাইগুড়ির জেলার চাপড়ামারি অভয়ারণ্য ও বক্সার ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া দমনপুর হাতির করিডোরে এই এলিসেন্স ডিভাইসগুলি লাগানো হবে। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ে হাতির করিডোরে সেন্সর লাগানো হয়েছে ৷ তার ফলে গত এক বছরে 627টি হাতিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভয়েস ফর এশিয়ান এ্যালিফেন্টের ।
জানা গিয়েছে, রেললাইনের কাছাকাছি হাতি এলেই জানিয়ে দেয় এলিসেন্স ডিভাইস । যার ফলে আগে থেকেই সচেতন হয়ে যান লোকো পাইলট ও বনবিভাগের আধিকারিকরা। তাতে রেললাইনে উঠে গেলেও ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি সংস্থার ৷ তাই প্রথম পর্যায়ে সাফল্য পাওয়ার পরই রেল ও বনবিভাগের সহযোগিতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ করতে চলেছে ভয়েস ফর এশিয়ান এ্যালিফেন্ট ও স্ন্যাপ ফাউন্ডেশন । ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে ডিভাইস লাগাতে ভয়েস ফর এশিয়ান এ্যালিফেন্ট সাপোর্ট ফান্ডিং করেছে । ডিভাইসগুলি বানিয়ে তাদের সহযোগিতা করছে স্ন্যাপ ফাউন্ডেশন ।
ভয়েস ফর এশিয়ান এ্যালিফেন্ট সংস্থার কর্ণধার সঙ্গীতা আইয়ার বলেন, "আমরা ট্রেনের ধাক্কায় হাতির হানা রুখতে ডিভাইস লাগাচ্ছি । এতে 30 হাজার মার্কিন ডলার খরচ হবে । স্ন্যাপ ফাউন্ডেশন টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছে ৷ তারাই সেন্সর বানিয়েছে । ডিভাইসটি পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরাই বানিয়েছেন । গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রেললাইনের হাতির করিডোরে লাগানো সেন্সরের তথ্য অনুযায়ী 627টি হাতির আনাগোনার সংকেত দিয়েছে এই এলিসেন্স প্রোজেক্ট ডিভাইস। আমরা মনে করছি 627টি হাতিকেই আমরা বাঁচাতে পেরেছি । কোনও হাতির যাতে মৃত্যু না যায় সেই কারণেই এই উদ্যোগ । বক্সার দমনপুরে ও জলপাইগুড়ির চাপড়ামারিতে মোট 40টি ডিভাইস লাগানো হবে । হাইট সেন্সর বার যেমন থাকছে, তেমনই রেলওয়ে ট্র্যাকের আশেপাশে 40 মিটার ব্যাসার্ধে কোন হাতি এসে পড়লেই সংকেত দেবে ডিভাইসটি ।"
স্ন্যাপ ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর কৌস্তুভ চৌধুরী জানান, 2023 সালে প্রথম ধাপে ডায়না,মরাঘাট,বিন্নাগুড়ি,রেড ব্যাংক এলাকায় রেললাইনের পাশে হাতির করিডোরে এলিসেন্স ডিভাইস লাগিয়ে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে । হাতি রেললাইনের কাছাকাছি এলেই রেল ও বনবিভাগের কাছে এই ডিভাইস সংকেত দিয়েছে । এই ডিভাইস মূলত হাতির শারীরিক গঠনের কথা চিন্তা করেই বানানো হয়েছে । ডিভাইসের আশেপাশে হাতি এলে তার যে কমপক্ষে উচ্চতা থাকে, সেই উচ্চতায় সেন্স করবে । কিন্তু হাতির সঙ্গে বাচ্চারা যাতায়াত করলে তাদেরও সেন্স করবে না । কারণ বাচ্চা উচ্চতায় ছোট ।
তিনি বলেন, "সম্প্রতি চাপড়ামারি ও রাজাভাতখাওয়াতে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর পর আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ে জলপাইগুড়ি জেলার চাপড়ামারি ও আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দমনপুর এলাকায় রেললাইনের পাশে এই ডিভাইস লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছি । রেলও একটি আইটিডি ডিভাইস লাগাচ্ছে ৷ কিন্তু তার ফলে রেললাইনের 10 মিটারের মধ্যে সেটা সেন্স করবে হাতিকে । কিন্তু আমাদের ডিভাইস 40 মিটারের মধ্যে থাকা হাতির আগমনের সংকেত দেবে । এর ফলে অনেক আগ থেকেই আমরা সতর্ক হতে পারব । রেললাইনের উপর দিয়ে এ্যালিফেন্ট ক্রসিং জোনে 40টি ডিভাইস লাগানো হবে ।"
আরও পড়ুন: