ETV Bharat / state

বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ পড়তে পারে কাঁটাতারের ওপারের ভারতীয় ভূ-খণ্ডে - Effects of Bangladesh Unrest

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 10, 2024, 10:43 PM IST

Updated : Aug 11, 2024, 2:22 PM IST

Effects of Bangladesh Unrest: বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ আসতে পারে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় ৷ বিশেষত, ছিটমহল অর্থাৎ, কাঁটাতারের ওপারের ভারতীয় ভূখণ্ডে ৷ যা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তবর্তী গ্রামের ভারতীয় নাগরিকরা ৷

Effects of Bangladesh Unrest
বাংলাদেশের অশান্তির জেরে আতঙ্কে সীমান্ত পাড়ের ভারতীয় ভূখণ্ডের বাসিন্দারা ৷ (নিজস্ব চিত্র)

জলপাইগুড়ি, 10 অগস্ট: আতঙ্কে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডের বাসিন্দারা ৷ কারণ, ভারতের ভূখণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ মিশে গিয়েছে ৷ সীমান্তবর্তী বাংলাদেশে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনা এপার থেকে প্রত্যক্ষ করছেন ভারতীয় নাগরিকরা ৷ আর তার জেরেই আতঙ্কিত তারা ৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, যে কোনও মুহূর্তে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়তে পারে কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৷

বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ পড়তে পারে ওপারের ভারতীয় ভূ-খণ্ডে ৷ (নিজস্ব ভিডিয়ো)

লুটপাটের আশঙ্কা করছেন সীমান্ত পাড়ে বসবাসকারী ভারতীয়রা ৷ জলপাইগুড়ি জেলার কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে পঞ্চগড় জেলায় বেছে বেছে আওয়ামী লিগের নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ৷ যদিও, ভারতীয় সীমানায় বিএসএফ ইতিমধ্যেই কড়া পাহাড়া দিচ্ছে ৷

তবুও, কাঁটাতারহীন এলাকায় বসবাসকারীদের আতঙ্কে দিন কাটছে ৷ অরক্ষিত সেই সব সীমান্ত এলাকায় অবিলম্বে কাঁটাতারের বেড়ার দাবি করছেন ভারতীয়রা ৷ বুধবার বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার মানুষজন অত্যাচারিত হয়ে ভারতে আশ্রয়ের জন্য সীমান্তে চলে আসে ৷ যদিও, বিএসএফ তাদের বাঁধা দেয় ৷ এরপর তারা রাতে ফিরেও যায় ৷ পঞ্চগড় জেলার সংখ্যালঘু গ্রাম যেমন লাহিড়ীপাড়া, বানিয়াপাড়া, বলগ্রাম, সুন্দরাপাড়া, বানি ডুবি, চিরাকুটি, কাখিপাড়া, সানসের পাড়ার বাংলাদেশের নাগরিকরা ভারতে আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে করে বিএসএফের কাছে ৷

তারা সীমান্তে ভারতের ধরধুরা পাড়া এলাকায় চলে আসে ৷ এরপরেই বিএসফের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয় ৷ এরপরেই ভারতীয় ভূখণ্ডে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে ৷ তাঁরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশের দিক থেকে যে কোনও মুহূর্তে অশান্তির ঘটনা ভারতে ছড়িয়ে পড়তে পারে ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরাও সেই আশঙ্কা করছেন ৷

শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন বাংলাদেশ জুড়ে আন্দোলন ৷ তার জেরে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ তারপরেই বিজয় উল্লাসের পাশাপাশি, আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের আন্দোলনকারীরা ৷ বিভিন্ন দিকে ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে আন্দোলনকারীরা ৷ যা দেখা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উন্মুক্ত ভূখণ্ডেও ৷ এই ঘটনায় আতঙ্কে সীমান্তে বসবাসকারী ভারতীয়রা ৷ ইতিমধ্যেই, তারা বিএসএফ-এর দ্বারস্থ হয়েছে ৷ শিলিগুড়ি রাধাবাড়ি সেক্টরের ডিআইজি ইতিমধ্যেই ভারতীয় ভূখণ্ডে গিয়ে তাদের আশ্বস্থ্য করেছেন ৷

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে বিএসএফ। প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক প্রভাব যাতে ভারতীয় গ্রামগুলিতে না পড়ে ও কেউ যাতে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে ঢুকতে না পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখছে BSF ৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে ৷ জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খুদিপাড়া, খেকিডাঙ্গা,অনতুপাড়া, বাঙালপাড়া, হিন্দুপাড়া ও সিপাইপাড়ার মতো ছয়টি গ্রাম ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার ওই প্রান্তে রয়েছে ৷ এছাড়া সিট সাকাতি গ্রামটিও কাঁটাতারের বেরার ওপারে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য আকরাম আলি বলেন, "বাংলাদেশে ঝামেলা চলছে ৷ কিন্তু, আমরা আতঙ্কের মধ্যেই আছি ৷ আমাদের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে ৷ তিনদিকে উন্মুক্ত বাংলাদেশ ভূখণ্ড ৷ ফলে অনায়াসে বাংলাদেশিরা এইসব গ্রামে প্রবেশ করে আক্রমণ করতে পারে ৷ বিএসএফ বাইরে নিরাপত্তা দিচ্ছে ৷ আমরা তিন কিলোমিটার দূরে থাকি ৷ তাই আতঙ্কের মধ্যেই আছি ৷ আমাদের ডান দিক, বাঁ-দিকে বাংলাদেশ ৷ ফলে আমরা ভয়ে আছি ৷ আওয়ামী লীগের সদস্যদের বাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে ৷ লুটপাটের একটা আশঙ্কা করছি ৷"

সিংপাড়ার বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, "বিএসএফ আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে ঠিকই ৷ ওপারের ঝামেলা এদিকে আসতে পারে, এই ভয়েই আছি ৷ গ্রামবাসীদের নিয়ে বিএসএফের তরফে একটি বৈঠক হয়েছিল ৷ গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফ সমন্বয় সাধন করে খবরাখবর নিচ্ছে ৷ আমাদের সতর্ক থাকতে বলেছে ৷ সমস্যা হলে জানাতে বলেছেন ৷"

স্থানীয় বাসিন্দা সামুল হক বলেন, "আমাদের পাশেই বাংলাদেশ ৷ আমাদের ছয়টা গ্রাম তারকাটার বেড়ার ওপারে আছে ৷ এই গ্রামের মানুষরা আতঙ্কিত হয়ে আছে। কারণ, বিএসএফ টহল দিচ্ছে ঠিকই ৷ কিন্তু, বিএসএফ তো সবসময় থাকছে না, তাই ভয় হচ্ছে ৷ ঘটনা তো মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যেতে পারে ৷ আমরা চাই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হোক ৷ আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, যাতে কাঁটাতারের বেরা দ্রুত করা হয় ৷"

জলপাইগুড়ি, 10 অগস্ট: আতঙ্কে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডের বাসিন্দারা ৷ কারণ, ভারতের ভূখণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ মিশে গিয়েছে ৷ সীমান্তবর্তী বাংলাদেশে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনা এপার থেকে প্রত্যক্ষ করছেন ভারতীয় নাগরিকরা ৷ আর তার জেরেই আতঙ্কিত তারা ৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, যে কোনও মুহূর্তে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়তে পারে কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৷

বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ পড়তে পারে ওপারের ভারতীয় ভূ-খণ্ডে ৷ (নিজস্ব ভিডিয়ো)

লুটপাটের আশঙ্কা করছেন সীমান্ত পাড়ে বসবাসকারী ভারতীয়রা ৷ জলপাইগুড়ি জেলার কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে পঞ্চগড় জেলায় বেছে বেছে আওয়ামী লিগের নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ৷ যদিও, ভারতীয় সীমানায় বিএসএফ ইতিমধ্যেই কড়া পাহাড়া দিচ্ছে ৷

তবুও, কাঁটাতারহীন এলাকায় বসবাসকারীদের আতঙ্কে দিন কাটছে ৷ অরক্ষিত সেই সব সীমান্ত এলাকায় অবিলম্বে কাঁটাতারের বেড়ার দাবি করছেন ভারতীয়রা ৷ বুধবার বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার মানুষজন অত্যাচারিত হয়ে ভারতে আশ্রয়ের জন্য সীমান্তে চলে আসে ৷ যদিও, বিএসএফ তাদের বাঁধা দেয় ৷ এরপর তারা রাতে ফিরেও যায় ৷ পঞ্চগড় জেলার সংখ্যালঘু গ্রাম যেমন লাহিড়ীপাড়া, বানিয়াপাড়া, বলগ্রাম, সুন্দরাপাড়া, বানি ডুবি, চিরাকুটি, কাখিপাড়া, সানসের পাড়ার বাংলাদেশের নাগরিকরা ভারতে আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে করে বিএসএফের কাছে ৷

তারা সীমান্তে ভারতের ধরধুরা পাড়া এলাকায় চলে আসে ৷ এরপরেই বিএসফের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয় ৷ এরপরেই ভারতীয় ভূখণ্ডে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে ৷ তাঁরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশের দিক থেকে যে কোনও মুহূর্তে অশান্তির ঘটনা ভারতে ছড়িয়ে পড়তে পারে ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরাও সেই আশঙ্কা করছেন ৷

শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন বাংলাদেশ জুড়ে আন্দোলন ৷ তার জেরে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ তারপরেই বিজয় উল্লাসের পাশাপাশি, আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের আন্দোলনকারীরা ৷ বিভিন্ন দিকে ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে আন্দোলনকারীরা ৷ যা দেখা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উন্মুক্ত ভূখণ্ডেও ৷ এই ঘটনায় আতঙ্কে সীমান্তে বসবাসকারী ভারতীয়রা ৷ ইতিমধ্যেই, তারা বিএসএফ-এর দ্বারস্থ হয়েছে ৷ শিলিগুড়ি রাধাবাড়ি সেক্টরের ডিআইজি ইতিমধ্যেই ভারতীয় ভূখণ্ডে গিয়ে তাদের আশ্বস্থ্য করেছেন ৷

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে বিএসএফ। প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক প্রভাব যাতে ভারতীয় গ্রামগুলিতে না পড়ে ও কেউ যাতে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে ঢুকতে না পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখছে BSF ৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে ৷ জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খুদিপাড়া, খেকিডাঙ্গা,অনতুপাড়া, বাঙালপাড়া, হিন্দুপাড়া ও সিপাইপাড়ার মতো ছয়টি গ্রাম ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার ওই প্রান্তে রয়েছে ৷ এছাড়া সিট সাকাতি গ্রামটিও কাঁটাতারের বেরার ওপারে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য আকরাম আলি বলেন, "বাংলাদেশে ঝামেলা চলছে ৷ কিন্তু, আমরা আতঙ্কের মধ্যেই আছি ৷ আমাদের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে ৷ তিনদিকে উন্মুক্ত বাংলাদেশ ভূখণ্ড ৷ ফলে অনায়াসে বাংলাদেশিরা এইসব গ্রামে প্রবেশ করে আক্রমণ করতে পারে ৷ বিএসএফ বাইরে নিরাপত্তা দিচ্ছে ৷ আমরা তিন কিলোমিটার দূরে থাকি ৷ তাই আতঙ্কের মধ্যেই আছি ৷ আমাদের ডান দিক, বাঁ-দিকে বাংলাদেশ ৷ ফলে আমরা ভয়ে আছি ৷ আওয়ামী লীগের সদস্যদের বাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে ৷ লুটপাটের একটা আশঙ্কা করছি ৷"

সিংপাড়ার বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, "বিএসএফ আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে ঠিকই ৷ ওপারের ঝামেলা এদিকে আসতে পারে, এই ভয়েই আছি ৷ গ্রামবাসীদের নিয়ে বিএসএফের তরফে একটি বৈঠক হয়েছিল ৷ গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফ সমন্বয় সাধন করে খবরাখবর নিচ্ছে ৷ আমাদের সতর্ক থাকতে বলেছে ৷ সমস্যা হলে জানাতে বলেছেন ৷"

স্থানীয় বাসিন্দা সামুল হক বলেন, "আমাদের পাশেই বাংলাদেশ ৷ আমাদের ছয়টা গ্রাম তারকাটার বেড়ার ওপারে আছে ৷ এই গ্রামের মানুষরা আতঙ্কিত হয়ে আছে। কারণ, বিএসএফ টহল দিচ্ছে ঠিকই ৷ কিন্তু, বিএসএফ তো সবসময় থাকছে না, তাই ভয় হচ্ছে ৷ ঘটনা তো মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যেতে পারে ৷ আমরা চাই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হোক ৷ আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, যাতে কাঁটাতারের বেরা দ্রুত করা হয় ৷"

Last Updated : Aug 11, 2024, 2:22 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.