ETV Bharat / state

বোনকে নিয়ে ইডি দফতরে রথীন্দ্রকুমার দে, 100 দিনের কাজে দুর্নীতির তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ - ED interrogation

ED interrogates Rathindra Kumar Dey: বোন ইতি চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ইডি দফতরে হাজিরা দিলেন প্রাক্তন নির্বাহী সহায়ক রথীন্দ্রকুমার দে ৷ 100 দিনের কাজে দুর্নীতির তদন্তে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 9, 2024, 1:54 PM IST

Updated : Feb 9, 2024, 3:39 PM IST

বোনকে নিয়ে ইডি দফতরে রথীন্দ্রকুমার দে

কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: 100 দিনের কাজে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রথীন্দ্রকুমার দে ও তাঁর বোন ইতি চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ ইডির তলব পেয়ে আজ সকালেই তাঁরা ইডি দফতরে হাজিরা দেন । 100 দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি।

শুক্রবার সকাল 10টা নাগাদ ইডি দফতরে যান মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাক্তন নির্বাহী সহায়ক রথীন্দ্রকুমার দে ও তাঁর বোন ইতি চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁদের 100 দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর । জানা গিয়েছে, আজ তাঁরা ইডি অধিকারিকদের হাতে কিছু নথি তুলে দেবেন । রথীন্দ্রকুমার দে-র আইনজীবীর অভিযোগ, সেই নথিতেই প্রমাণ রয়েছে যে, দুর্নীতি হয়েছে বুঝতে পেরে উপরমহলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন রথীন্দ্র ৷ তবে তাঁর কথায় আমলই দেওয়া হয়নি ৷

কী আছে সেই নথিতে ?

রথীন্দ্রকুমার দে যে নথি আজ পেশ করবেন, তাতে লেখা রয়েছে যে, 2005 সাল থেকে 2017 সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত নওদা ব্লকের 2 নম্বর কেদারচাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং 2017-19 সাল পর্যন্ত বেলডাঙা -1 ব্লকের মহুলা -1 ও সুজাপুর-কুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতর নির্বাহী সহায়ক হিসাবে তিনি কাজ করেছেন । তিনি তৎকালীন বিডিও লিটন সাহার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি পঞ্চায়েত স্তরে যাতে ভালোভাবে রূপায়িত হয় সেই দিকে নজর রাখতেন । তখনই তিনি লক্ষ্য করেন যে, কয়েকজন পঞ্চায়েত প্রধান, দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা ও জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি ব্যাপকভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন ৷

এই নিয়ে জেলা প্রশাসন ও রাজ্যের আমলাকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হলেও তৎকালীন জেলা প্রশাসন এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি । উলটে দুর্নীতিগ্রস্ত জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি ও তৎকালীন এডিএম, জেলা পরিষদ ক্ষমতার অপব্যবহার করেন ৷ নওদা ও বেলডাঙা এক ব্লকের বিডিও এবং পুলিশের সহায়তায় গ্রামের মানুষকে ভয় দেখিয়ে সই নকল ও সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয় ৷ তদন্তের নামে জেলা থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত কয়েকটি ক্যাজুয়াল স্টাফ দিয়ে পঞ্চায়েতের কর্মীদের দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিয়ে নেওয়া হয় ৷ এবং কোনও শোকজ ছাড়াই মিথ্যা মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয় বলে অভিযোগ রথীন্দ্রকুমার দে-র ।

তিনি তাঁর নথিতে আরও দাবি করেছেন যে, বিডিও এবং প্রধানের অনুমোদিত এবং নিজস্ব পাসওয়ার্ড ও ডিজিটাল ডঙ্গলের মাধ্যমে সই ছাড়া 100 দিনের কাজের মাস্টাররোল তৈরি করা বা কোনও বিল পেমেন্ট করা বা মাস্টাররোলের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করা কোনওটাই সম্ভব না অর্থাৎ 100 দিনের কাজ করাই সম্ভব নয় ।

রথীন্দ্রকুমার দে-র আইনজীবী সৌমেন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, "যে সিস্টেমে মনরেগা প্রকল্পে কাজ হয়, তাতে ডিএম-এর অথরাইজ অফিসার হল পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিও । এখানে একটা মাস্টাররোল তৈরি হয় বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের মাধ্যমে । তারপর টাকাগুলোকে ট্রান্সফার করা হয় একটা নোডাল এজেন্সির মাধ্যমে । সেখানে রথীন্দ্র হলেন নির্মাণ সহায়ক ও তাঁর বোন আলাদা টেন্ডার নিয়ে কাজ করতেন । এই দুর্নীতির মূল পান্ডা হলেন বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধান ৷ পাসওয়ার্ড তাঁদের হাতেই থাকে । রথীন বাবু পাঁচবার কমপ্লেন করেছেন যে, এখানে দুর্নীতি হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হোক । এখানে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল । রথীন্দ্রর কোনও অধিকারই নেই টাকা পাঠানোর ।"

আরও পড়ুন:

  1. মনরেগা দুর্নীতির তদন্তে বহরমপুরের প্রাক্তন পঞ্চায়েত কর্মী ও তাঁর বোনকে তলব ইডির
  2. নামবিভ্রাট ! বাহিনী নিয়ে ভুল ঠিকানায় হানা, ইডির বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ চুঁচুড়ায়
  3. 100 দিনের কাজে দুর্নীতি, সকালে থেকেই জেলায় জেলায় ইডির হানা

বোনকে নিয়ে ইডি দফতরে রথীন্দ্রকুমার দে

কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: 100 দিনের কাজে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রথীন্দ্রকুমার দে ও তাঁর বোন ইতি চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ ইডির তলব পেয়ে আজ সকালেই তাঁরা ইডি দফতরে হাজিরা দেন । 100 দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি।

শুক্রবার সকাল 10টা নাগাদ ইডি দফতরে যান মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাক্তন নির্বাহী সহায়ক রথীন্দ্রকুমার দে ও তাঁর বোন ইতি চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁদের 100 দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর । জানা গিয়েছে, আজ তাঁরা ইডি অধিকারিকদের হাতে কিছু নথি তুলে দেবেন । রথীন্দ্রকুমার দে-র আইনজীবীর অভিযোগ, সেই নথিতেই প্রমাণ রয়েছে যে, দুর্নীতি হয়েছে বুঝতে পেরে উপরমহলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন রথীন্দ্র ৷ তবে তাঁর কথায় আমলই দেওয়া হয়নি ৷

কী আছে সেই নথিতে ?

রথীন্দ্রকুমার দে যে নথি আজ পেশ করবেন, তাতে লেখা রয়েছে যে, 2005 সাল থেকে 2017 সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত নওদা ব্লকের 2 নম্বর কেদারচাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং 2017-19 সাল পর্যন্ত বেলডাঙা -1 ব্লকের মহুলা -1 ও সুজাপুর-কুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতর নির্বাহী সহায়ক হিসাবে তিনি কাজ করেছেন । তিনি তৎকালীন বিডিও লিটন সাহার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি পঞ্চায়েত স্তরে যাতে ভালোভাবে রূপায়িত হয় সেই দিকে নজর রাখতেন । তখনই তিনি লক্ষ্য করেন যে, কয়েকজন পঞ্চায়েত প্রধান, দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা ও জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি ব্যাপকভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন ৷

এই নিয়ে জেলা প্রশাসন ও রাজ্যের আমলাকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হলেও তৎকালীন জেলা প্রশাসন এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি । উলটে দুর্নীতিগ্রস্ত জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি ও তৎকালীন এডিএম, জেলা পরিষদ ক্ষমতার অপব্যবহার করেন ৷ নওদা ও বেলডাঙা এক ব্লকের বিডিও এবং পুলিশের সহায়তায় গ্রামের মানুষকে ভয় দেখিয়ে সই নকল ও সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয় ৷ তদন্তের নামে জেলা থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত কয়েকটি ক্যাজুয়াল স্টাফ দিয়ে পঞ্চায়েতের কর্মীদের দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিয়ে নেওয়া হয় ৷ এবং কোনও শোকজ ছাড়াই মিথ্যা মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয় বলে অভিযোগ রথীন্দ্রকুমার দে-র ।

তিনি তাঁর নথিতে আরও দাবি করেছেন যে, বিডিও এবং প্রধানের অনুমোদিত এবং নিজস্ব পাসওয়ার্ড ও ডিজিটাল ডঙ্গলের মাধ্যমে সই ছাড়া 100 দিনের কাজের মাস্টাররোল তৈরি করা বা কোনও বিল পেমেন্ট করা বা মাস্টাররোলের মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করা কোনওটাই সম্ভব না অর্থাৎ 100 দিনের কাজ করাই সম্ভব নয় ।

রথীন্দ্রকুমার দে-র আইনজীবী সৌমেন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, "যে সিস্টেমে মনরেগা প্রকল্পে কাজ হয়, তাতে ডিএম-এর অথরাইজ অফিসার হল পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিও । এখানে একটা মাস্টাররোল তৈরি হয় বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের মাধ্যমে । তারপর টাকাগুলোকে ট্রান্সফার করা হয় একটা নোডাল এজেন্সির মাধ্যমে । সেখানে রথীন্দ্র হলেন নির্মাণ সহায়ক ও তাঁর বোন আলাদা টেন্ডার নিয়ে কাজ করতেন । এই দুর্নীতির মূল পান্ডা হলেন বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধান ৷ পাসওয়ার্ড তাঁদের হাতেই থাকে । রথীন বাবু পাঁচবার কমপ্লেন করেছেন যে, এখানে দুর্নীতি হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হোক । এখানে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল । রথীন্দ্রর কোনও অধিকারই নেই টাকা পাঠানোর ।"

আরও পড়ুন:

  1. মনরেগা দুর্নীতির তদন্তে বহরমপুরের প্রাক্তন পঞ্চায়েত কর্মী ও তাঁর বোনকে তলব ইডির
  2. নামবিভ্রাট ! বাহিনী নিয়ে ভুল ঠিকানায় হানা, ইডির বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ চুঁচুড়ায়
  3. 100 দিনের কাজে দুর্নীতি, সকালে থেকেই জেলায় জেলায় ইডির হানা
Last Updated : Feb 9, 2024, 3:39 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.