কলকাতা, 9 জুলাই: নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মানিক ভট্টাচার্য ও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র খুবই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন । হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এবং ফোন কলের মাধ্যমে এই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রমাণ রয়েছে ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও এই দু'জনই আর্থিক দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ৷ কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসে এমনই দাবি করল ইডি ।
সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল । আগের দিনের মতো এদিন ফের মানিক ভট্টাচার্যকে কাঁদতে দেখা যায় । তিনি চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, "আমার ছোট ভাই আমার পুত্রসম, সে আমার বিরুদ্ধে স্টেটমেন্ট দিয়েছে ।" একথা বলতে বলতেই ফের কেঁদে ফেলেন তিনি ৷
বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চে মানিক ভট্টাচার্যের জামিন মামলার শুনানি চলছে । সেখানেই অনলাইনে হাজির ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য । গত শুনানিতেও মানিকের বক্তব্য শোনেন বিচারপতি । আজ জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, "এধরনের আর্থিক অপরাধ বা দুর্নীতি সমাজের বিভিন্ন স্তরে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ।"
প্রসঙ্গক্রমে তিনি অনুব্রত মণ্ডল, গৌতম কুণ্ডুর আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার উল্লেখ করেন । একইসঙ্গে আর্থিক দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ও মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে ইন্টারলিঙ্ক রয়েছে বলে জানান তিনি । সুজয়কৃষ্ণ, মানিক ভট্টাচার্যের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে উল্লেখ করেন ইডির আইনজীবী ।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিশেষ সিবিআই আদালতে মানিক ভট্টাচার্য ইডির তদন্তকে কটাক্ষ করে বলেন, "এ যেন সেই সপ্তম অষ্টম শ্রেণির অঙ্কের মতো ৷ প্রতিদিন একটি বাঁশে দু'ফুট করে উঠছি আর এক ফুট করে নামছি । যখনই চার্জিশিট দেওয়ার কথা ওঠে তখনই ইডি বলে তাদের তদন্তের আরও অনেক বাকি আছে । আসলে তদন্তের নামে কিছুই হচ্ছে না ।"
মানিক ভট্টাচার্য জেলবন্দি রয়েছেন প্রায় দু'বছর । কলকাতা হাইকোর্টের গত শুনানিতে তিনি রীতিমতো কান্নাকাটি করে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক বলে আর্জি জানিয়েছিলেন । কারণ হিসেবে বলেন, তিনি অসুস্থ । আর কতদিনই বা বাঁচবেন !