কলকাতা, 6 অগস্ট: ফের ময়দানে ইডি । তবে এবার গরু পাচার কিংবা রেশন দুর্নীতি নয় । এবার ইডি তদন্তে নামল অনলাইন গেমিং অ্যাপের প্রতারণার মামলায় । জানা গিয়েছে, এই অনলাইন গেমিং অ্যাপ মূলত ভারতীয়দের সঙ্গে প্রতারণা করত এবং সেখান থেকে কোটি কোটি টাকার মুনাফা তারা চিনে পাঠাত । এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রের খবর, এই ঘটনায় তারা কালিকাপুরের একটি অভিজাত আবাসনে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ।
প্রতারণার কৌশল- এই অনলাইন গেমিং অ্যাপ মূলত ভারতীয়দের সঙ্গে প্রতারণা করত । প্রথমে এই অনলাইন গেমিং অ্যাপে ভারতীয়দের বেশি করে বিনিয়োগ করতে বলা হত । যাঁরা বিনিয়োগ করতেন তাঁরা তাঁদের ফোন নম্বর, ইমেল আইডি এবং বাড়ির ঠিকানা নথিবদ্ধ করতেন ৷ সেখানে প্রথম প্রথম কিছু আকর্ষণীয় উপহার পাঠানো হত । যাতে অ্যাপের উপর বিনিয়োগকারীর বিশ্বাস বৃদ্ধি হয় সেই কারণে এই কৌশলে । বিশ্বাস অর্জনের পর ধীরে ধীরে গেমিং অ্যাপের তরফ থেকে আরও টাকা বিনিয়োগ করতে বলা হত ।
প্রতারণার পরবর্তী ধাপ- যখনই বিনিয়োগকারীরা লক্ষাধিক টাকা সেখানে বিনিয়োগ করতেন তখন তাঁদের বলা হত, এবার তাঁরা মুনাফা তুলতে পারবেন ৷ আর যেই বিনিয়োগকারীরা তাঁদের মুনাফা তুলতে যেতেন, তখনই তাঁরা দেখতেন সংশ্লিষ্ট গেমিং অ্যাপের তরফ থেকে অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে । তাঁরা যে সকল মোবাইল থেকে ফোন করতেন সেইগুলিও ব্লক করা রয়েছে । এই মর্মে কাশিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় । পুলিশ এই ঘটনার তদন্তের পর বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলায়, আদালত এই দায়ভার দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে।
ইডির তদন্ত- আর সেই মতোই মঙ্গলবার একটি অভিজাত আবাসনের দ্বিতীয় তলায় চলছে চিরুনি তল্লাশি । তবে ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ইডি স্পষ্টভাবে কিছু জানায়নি ।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে শহর কলকাতায় অনলাইন গেমিং অ্যাপের প্রতারণার তদন্তে নেমে ইডির গোয়েন্দারা একটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেন । সেই ঘটনায় রীতিমতো ঘুম উড়েছিল কলকাতা পুলিশের । কারণ, মেটিয়াবুরুজ থানা এলাকায় গেমিং অ্যাপের যে মালিকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেই ঘটনায় আগেই তদন্তভার শুরু করেছিল পার্কস্ট্রিট থানা ৷
তবে পুরো ঘটনাটিতে পার্কস্ট্রিট থানার পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় অবশেষে তদন্তে নামে ইডি । প্রশ্ন ওঠে, মহানগরের বুকে একটি বাড়িতে কোটি কোটি টাকার খোঁজ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা পেলেন, অথচ পার্কস্ট্রিট থানার পুলিশ কর্মীরা কেন তার সন্ধান পেলেন না ? সেই সময় থানার আইও'কে সরিয়ে দিয়েছিল লালবাজার । পরপর শহরে অনলাইন গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার ঘটনায় কেন তদন্ত শুরু করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে অপারগ হচ্ছে কলকাতা পুলিশ ? এই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন ৷