কলকাতা, 2 অগস্ট: গ্রেফতারির 24 ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের নয়া 'কুকীর্তির' সন্ধান পেল ইডি ৷ তদন্তকারীদের অনুমান, আনিসুর রহমান কর বাঁচানোর জন্য তার একাধিক আত্মীয়কে রেশন দুর্নীতিতে সামিল করেছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের অভিযোগ আনিসুর এবং তার ভাই লতিফ একাধিক আত্মীয়র আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড ব্যবহার করে তাদেরকে কৃষক দেখিয়ে রাজ্য সরকারের রেশনের চাল বেআইনি পদ্ধতিতে তুলেছিল ৷ বৃহস্পতিবার ইডি আধিকারিকরা দুই ভাইকে প্রায় 14 ঘণ্টা ম্যারাথন জেরা করেন ৷ বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি থাকায় তাদের গ্রেফতারও করা হয় ৷
সূত্রের খবর, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এসএসকেএম হাসপাতালে থাকাকালীন একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠি উদ্ধার করে ইডি। সংশ্লিষ্ট চিঠি থেকে তদন্তকারীরা এই দুই ভাইয়ের নাম জানতে পারেন ৷ সেই চিঠি থেকেই আরও জানা গিয়েছে, দুই ভাই রাজ্য সরকারের রেশনের চাল বেআইনিভাবে বিক্রি করে প্রায় 45 কোটি টাকা পায়। সেই টাকা বালুর তিনটি সংস্থায় যায় ৷ এই তদন্তে সেই চিঠির ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ইডির গোয়েন্দারা ৷
অন্যদিকে, এর আগে এই ঘটনায় বিভিন্ন জায়গায় 21 ঘণ্টা ধরে চিরুনি তল্লাশি চালায় ইডি। সেখান থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের পাশাপাশি লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার হয়। এরপরই গতকাল দুই গুণধর ভাইকে সল্টলেক সিজিও কম্পেক্সের ইডি দফতরে ডাকা হয় ৷ দীর্ঘক্ষণ ধরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর কোনও যথাযথ উত্তর না মেলায় অবশেষে তাদেরকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা ।
রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির পর রেশন ও পুর নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে ৷ গত বছরের শেষ থেকে রেশন দুর্নীতির তদন্তে গতি আসে ৷ গ্রেফতার হন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ৷ এরপর বছরের একেবারে শুরুতে সন্দেশখালি এলাকায় প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি ৷ সেখানে গিয়ে মার খেতে হয় আধিকারিকদের ৷ এরপর ধীরে ধীরে আরও বেশ কয়েকজনে গ্রেফতার করা হয় ৷ শেষমেশ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর চিঠি থেকেই তদন্তের নতুন হদিশ মিলল ৷