হাওড়া, 24 জানুয়ারি: ট্রেন বন্ধের জেরে দ্বিতীয় দিনেও বালি সেতুতে ধরা পড়ল যাত্রী হয়রানির ছবি ৷ দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে রইলেন নিত্যযাত্রীরা ৷ যানজটের সৃষ্টি হল জাতীয় সড়কে ৷ তবে নির্ধারিত সময়েই সম্পূর্ণ হবে কাজ, যাত্রীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে রেলের তরফে ৷
শুক্রবার সকালে বালিঘাট স্টেশনের কাজ পরিদর্শনে আসেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ কে দেউস্কর । নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ডানকুনি-শিয়ালদা শাখায় ট্রেন লাইনের গাডার পরিবর্তনের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার বলেন, "যেভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল তার থেকে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে ৷ খুব জটিল ও চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল ৷ কিন্তু রেলের আধিকারিকরা খুব ভালোভাবে কাজ করছে, যা প্রশংসনীয় ৷"
যদিও এই কাজের দরুণ যাত্রী ভোগান্তির কথা একপ্রকার স্বীকার করে নেন মিলিন্দ কে দেউস্কর ৷ তাঁর কথায়, "এই কাজ যাত্রী ও রেলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ৷ এর ফলে রেলের নিরাপত্তা আরও বাড়বে ৷ যাত্রীদের ধন্যবাদ দেব তারা এত ধৈর্য্য রেখেছে এবং আমাদের বহু প্রতীক্ষিত এই কাজ করতে সাহায্য করছে ৷ যাত্রী হয়রানির সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব আমরা ৷"
অন্যদিকে যাত্রীদের সুবিধার্থে বালি হল্ট ও নিবেদিতা সেতু সংলগ্ন জাতীয় সড়কের দেওয়াল ভাঙা হয়েছে ৷ যার ফলে জাতীয় সড়কের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ ৷ এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জাতীয় সড়কের নিরাপত্তার বিষয়ে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন শিয়ালদা ডিভিশনের ডিআরএম দীপক নিগম ।
তিনি বলেন, "আরপিএফ বিষয়টি দেখেছে ৷ আজ বিকেলের মধ্যে কিছু বন্দোবস্ত করে দেব ৷ রাজ্যের পরিবহণ বিভাগ ও ট্রাফিক পুলিশের তরফে আমরা পুরো সহযোগিতা পাচ্ছি ৷ আমাদের অনুরোধে ট্রাফিকের নির্দেশিকা বেরিয়েছে ৷ তবে অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ অন্য রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের একটু সমস্যা হচ্ছে ৷ তবে এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি ফল পাবে জনগণ ৷ পরিকল্পনা মতো কাজ চলছে ৷ 100 ঘণ্টার ব্লক উঠিয়ে সময় মতোই ট্রেন পরিষেবা ফের স্বাভাবিক হবে ৷"
ডানকুনি শিয়ালদা শাখায় রেললাইনের কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল । অন্যদিকে অফিস টাইমে যাত্রী ভোগান্তির ছবি চরম পর্যায় । বালি ব্রিজের দক্ষিণেশ্বর থেকে বালির দিকে আসার লেনটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে ৷ যার ফলে বালি থেকে কলকাতামুখী লেনটিতে রাস্তায় দু'দিক থেকে যান চলাচল করার জন্য তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে । সঠিক সময় অফিসে না পৌঁছাতে পারায় নিত্যযাত্রীরা ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন ।
সল্টলেক সেক্টর ফাইভে নিজের অফিসের বাসের জন্য অপেক্ষারত অভিজিৎ গুপ্ত বলেন, "কাজটা জরুরি ছিল, তবে প্রশাসনকে আরও প্রস্তুতি নিয়ে নামার প্রয়োজন ছিল । আমি আশা করব, পরবর্তী সময়ে এই ধরনের কাজে হাত দেওয়ার আগে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে তারপর করা হবে । এই বিষয়ে প্রশাসন আরও ভাবনাচিন্তা করুক ।"
অপর এক অপেক্ষারত যাত্রী যশবন্ত সিং বলেন, "আধঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি ৷ অফিসের জন্য দেরি হয়ে গিয়েছে । আমরা সাধারণ মানুষ ৷ হয়রানি তো হচ্ছে ৷ এই নিয়ে কী আর বলব ।" নিত্যযাত্রী মণীশ সান্যালের কথায়, "অফিস পৌঁছতে পারব কি না জানি না ৷ রেলের কাজ করা দরকার ৷ তবে আরও পরিকল্পনা নিয়ে করলে ভালো হতো ৷ এর ফলে মানুষের হয়রানি হচ্ছে ৷"