কলকাতা, 5 ফেব্রুয়ারি: শহর কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্য ফোর্ট উইলিয়ামের নাম বদলে হল 'বিজয় দুর্গ'। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, ঔপনিবেশিক মনোভাব পরিত্যাগ করতেই ব্রিটিশদের দেওয়া নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেনার পূর্বাঞ্চলের প্রধান কার্যালয় বা ইস্টার্ন কমান্ডের নাম বদল অবশ্যই এক তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ ।
ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতরেও বেশ কয়েকটি ভবনের নাম বদলে গিয়েছে । সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতীয় সেনার এক আধিকারিক। তিনি জানান, ধীর ধীরে ঔপনিবেশিক মানসিকতা ত্যাগ করা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই ভাবনা থেকই সেন্ট জর্জ গেটের নাম বদলে হয়েছে শিবাজি গেট ।
ম্যানেকশ থেকে বাঘাযতীন
পাশাপাশি কিচেনার গেটের নামও বদলে গিয়েছে। ভারতীয় সেনার প্রথম ফিল্ড মার্শাল শ্যাম ম্যানেকশ'র নামে গেটেটির নাম হবে ম্যানেকশ গেট । এই পরিবর্তনের অবশ্য বিশেষ কারণও আছে। 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনিই ছিলেন ভারতীয় সেনার প্রধান। শুধু তাই নয়, সেনা বাহিনীর প্রাক্তন থেকে শুরু করে বর্তমান আধিকারিকদের অনেকই মনে করেন মুক্তিযুদ্ধে তাঁর রণনীতির কাছেই হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে । জন্ম হয় নতুন দেশ, বাংলাদেশের ৷
অধুনা বিজয় দুর্গের ভিতরে একটি ভবনের নাম ছিল রাসেল ব্লক । সেটিরও নাম বদল হচ্ছে । এখন থেকে নতুন নাম হবে বাঘাযতীন ব্লক । ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঘাযতীন একটি উজ্জ্বল নাম । ভালো নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় হলেও সকলের কাছেই তিনি বাঘাযতীন। 1915 সালে ওড়িশায় ইংরেজ পুলিশের গুলিতে তাঁর প্রাণ যায় ।
ইতিহাস ফিস ফিস কথা বলে
ফোর্ট উইলিয়াম তৈরি হয় 1781 সালে । ব্যবসা করতে ভারতে এসে শাসক হয়ে যাওয়া ইংরেজদের তৈরি এই স্থাপত্য আজও কলকাতার অন্যতম দর্শনীয় স্থান । 1757 সালে পলাশির যুদ্ধে জয়ের পর ধীরে ধীরে বণিকের মানদণ্ড হয়ে উঠল শাসকের রাজদণ্ড। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনে তৈরি হয় এই ফোর্ট উইলিয়াম।
মধ্য কলকাতার বুকে 170 একর এলাকা জু়ড়ে রয়েছে এই দুর্গ। চৌরঙ্গি, পলাশি, কলকাতা,ওয়াটার গেট, সেন্ট জর্জ এবং ট্রেজারি এই 6টি মূল প্রবেশদ্বার রয়েছে। তার মধ্যে সেন্ট জর্জ গেটের নাম বদলে গিয়েছে । স্বাধীনতার পর 1962 সালে ইস্টান কমান্ডের প্রধান কার্যালয় হিসেবে এই ফোর্ট উইলিয়ামকে বেছে নেওয়া হয় । এবার থেকে নতুন নাম হল 'বিজয় দুর্গ'।