দুর্গাপুর, 27 অক্টোবর: দীর্ঘ 16 ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার এক আধিকারিকের দেহ উদ্ধার। কারখানার ভিতরে লিফটের নীচ থেকে তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছে ৷ এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ৷ মৃত আধিকারিকের নাম সমিত ভট্টাচার্য (54) ৷ সিটি সেন্টারের সেইল কো-অপারেটিভ বাঘাযতীন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার অন্য দিনের মতোই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় কাজে গিয়েছিলেন সমিত । সকাল 11টার পর আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান ৷ তাঁর গাড়ি, ব্যাগ, টিফিন বক্স সব যথাস্থানেই ছিল ৷ শুধু তাঁকেই পাওয়া যাচ্ছিল না ৷
দুর্গাপুর থানায় নিখোঁজের অভিযোগ করা হয় ৷ কারখানার ভিতরে তল্লাশি শুরু হয় ৷ নিয়ে আসা হয় পুলিশ কুকুরও। এরপর রবিবার ভোররাত 3টে নাগাদ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জংশন বাংকারে একটি লিফটের নীচে সমিত ভট্টাচার্যের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন কারখানার কর্মীরা ৷ খবর দেওয়া হয় কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে ৷
সমিত ভট্টাচার্যের দেহ উদ্ধার করে দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে (মেইন হাসপাতাল) নিয়ে যাওয়া হয় ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পদস্থ আধিকারিকরা ৷ আত্মহত্যা, খুন নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য রহস্য ? পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ ৷ আধিকারিকের মৃত্যুর ঘটনায় ইস্পাত কারখানার সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি একযোগে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে ৷
লিফটের নীচে কীভাবে ওই আধিকারিকের মৃতদেহ পাওয়া গেল ? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে ফোনে জানান, "আমরা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি ৷ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি ৷ খুব দ্রুত আমরা মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটন করতে পারব ৷"
সিআইটিইউ-র সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "তিনি জিএম পদাধিকারী ৷ তিনি বিভিন্ন সাইটে প্রতি মুহূর্তে ইনস্পেকশন করতেন ৷আর তাই ওঁর ফোন কখনও 'নট রিচেবল' থাকে, আরারও কখনও বাজে ৷ কালও তাই হচ্ছিল। খানিক পরে বোঝা যায় সমিত ভট্টাচার্যকে আর পাওয়া যাচ্ছে না ৷ তাঁর দু'টি গাড়ি, একটি চারচাকা, একটি বাইক ছিল ৷ কোথাও না পেয়ে আমরা নিখোঁজ ডায়েরি করি ৷" এই ঘটনায় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ একটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতা ৷
ইস্পাত কারখানার আরেক কর্মী দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, "এর আগেও এক আধিকারিকের মৃত্যু হয়েছিল ৷ তাঁকেও পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ পরে গাড়ির সামনে থেকে তাঁর অচেতন দেহ পাওয়া যায় ৷ এই ঘটনাটিও একইরকম দুর্ভাগ্যজনক ৷" ৷