খানাকুল, 10 জুন: আরামবাগ লোকসভায় ভোট হয়েছে গত 20 মে। ভোটের আগের দিন তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে জখম হয়েছিলেন শাসকদলের এক কর্মী ৷ রবিবার রাতে মৃত্যু হল তাঁর । মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম মনোরঞ্জন দিগার (45) । তাঁর বাড়ি খানাকুলের রামচন্দ্রপুর এলাকায় । ঘটনায় ভাষা হারিয়েছেন মৃতের পরিবারের লোকজন ।
জানা গিয়েছে, 19 মে রাতে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন । সেই সময় বেশ কিছু বিজেপি কর্মী অস্ত্র নিয়ে তাদেঁর উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন মনোরঞ্জন দিগার ও আরও বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী । প্রথমে তাদের খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
ভোটের দিন আরামবাগ হাসপাতালে বসে মনোরঞ্জন দিগার অভিযোগ করেন, হঠাৎ রাজহাটী 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তপন বাগ-সহ আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীরা রড, শাবল ও কাঠারি হাতে নিয়ে তাঁদের ঘিরে ধরে । তারপরই চলে মারধর। এমনকী উপপ্রধান তপন বাগ পিস্তল নিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন মনোরঞ্জন।
এই ঘটনায় মনোরঞ্জন দিগারের এক ভাইয়ের নাক কেটে দেওয়া হয় ও আর এক ভাইয়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল বলেও অভিযোগ । তাঁরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তবে মনোরঞ্জনকে কয়েকদিন আগেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় । তারপর বাড়িতেই চলছিল তাঁর চিকিৎসা । তবে রবিবার রাতে হঠাৎই মাথার যন্ত্রণা শুরু হয় মনোরঞ্জনের । তারপর তাঁকে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা ।
এই বিষয়ে খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক বলেন, "যে কোনও মৃত্যুই বেদনাদায়ক । তবে এই মৃত্যুতে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা রাজনৈতিক রং চড়ানোর চেষ্টা করছে । তৃণমূল কর্মী মনোরঞ্জন দিগারের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে । তবে 19 তারিখ তপন বাগের কপালেও কুরুলের কোপ মারা হয়েছিল । তিনি এখন সুস্থ । মনোরঞ্জন দিগারের মৃত্যুকে নিয়ে মিথ্যে কথা রটাচ্ছে তৃণমূল । পুরো বিষয় প্রশাসনকে আমরা জানিয়েছি । প্রশাসনের উপর ভরসা আছে । ওনারাই দেখছেন সমস্তটা ।"
তবে তৃণমূলের খানাকুল 2 নম্বর ব্লকের সভাপতি রমেন প্রামাণিক বলেন, "মনোরঞ্জন দিগার আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন । এই ঘটনায় অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি চাই আমরা । উপপ্রধান তপন বাগ ও বিধায়ক সুশান্ত ঘোষকে উপযুক্ত শাস্তি না দিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব ।"