পোলবা, 6 অগস্ট: বেশ কিছুদিনের বৃষ্টি ও ডিভিসির জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হুগলি জেলায় ৷ আরামবাগ, খানাকুল, জাঙ্গিপাড়া, পোলবা, পাণ্ডুয়া-সহ বেশকিছু ব্লক জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। এর ফলে ধান ও সবজি চাষের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত হুগলিতে 1 লক্ষ 16 হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। তার মধ্যে 33 শতাংশ ধান জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে সমস্ত ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাবে।
- হুগলির ধানচাষ- হুগলিতে 1লক্ষ 80 হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। প্রথম দিকে বৃষ্টির ঘাটতি থাকলেও, এই কয়েকদিন অনেকটা বৃষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়েছে কয়েক বছরের তুলনায়। তার মধ্যে যেভাবে ডিভিসি জল ছাড়ছে, তাতে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখনও বীজতলা থেকে ধান রোপণের কাজ চলছে। একসপ্তাহের বেশি ধান গাছ জলের তলায় থাকলে পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গাছ নষ্ট হয়ে গেলে নতুন করে বীজ রোপণ করতে হবে কৃষকদের। তাতে চাষের ক্ষেত্রে দেরি হওয়ার সম্ভবনা থাকছে। অন্যদিকে, নতুন বীজের অভাব রয়েছে যথেষ্টই। কৃষকদের দ্বিতীয়বার চাষ করতে গেলে খরচও বাড়বে। সরকরি তরফে কৃষকদের বীজ ও ঋণের ব্যবস্থা না-করলে সমস্যার মুখে পড়বেন কৃষকরা ৷
পোলবার এক চাষি রাজু দাস বলেন, "ডিভিসির ছাড়া জলের জন্য হুগলির চাষিদের ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে । সমস্ত চাষের জমি থেকে বীজতলা সবকিছু জলের তলায় চলে গিয়েছে। অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারের তরফে যদি নতুন করে বীজের ব্যবস্থা না-করা হয় তাহলে চাষিদের আবারও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
আরেক কৃষক সাইফুদ্দিন মল্লিক বলেন, "গত এক সপ্তাহ ধরে যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে চারিদিক ডুবে গিয়েছে ৷ যদি জল আরও বাড়তে থাকে আর চাষ করাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। আগে যা কৃষি ঋণ আছে সেটাই আমরা দিতে পারেনি। সরকার যদি আমাদের দিকে না নজর দেয় ফের ধান চাষেও ক্ষতি হবে।"
হুগলি জেলার কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মারদানা বলেন, "বর্তমানে 1 লক্ষ 16 হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ও ডিভিসি যে ভাবে জল ছাড়ছে, তাতেই হুগলি বিস্তীর্ণ অংশ ডুবে গিয়েছে। যে পরিমাণ ধান রোপণ হয়েছে, তার 33 শতাংশ জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ জানা যায়নি। জমি থেকে জল নেমে গেলে ফাঙ্গিসাইড স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। কৃষকরা কৃষি দফতরে জানালে নতুন বীজ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।"