দুর্গাপুর, 19 ফেব্রুয়ারি: 800 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষম নতুন ইউনিট প্রতিস্থাপনের জন্য নিজেদের বেদখল হওয়া জমি পুনরুদ্ধার গিয়ে সম্প্রতি বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনকে ৷ এবার একইভাবে নিজেদের জমি ঘিরতে গিয়ে প্রবল বাধার মুখে পড়তে হল দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষের ঠিকা কর্মীদের ৷ আর এই ঘটনার পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে শিল্পনগরীতে কি তবে শিল্পের ভবিষ্যৎ অথৈ জলে?
সোমবার ডিএসপি গোপালমাঠের জগুরবাঁধ প্লটে নিজেদের জমি পাঁচিল দিয়ে ঘেরার জন্য ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের পাঠালে এলাকার মানুষ তাঁদের আটকায় ৷ ঠিকাদার সংস্থার জেসিবি দিয়েই ভাঙা হয় কংক্রিটের পিলার। নির্মাণের আগে তৈরি লোহার কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। দিনকয়েক আগে ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজেদের ফাঁকা জমিতে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে ৷ সোমবার সকালে চলছিল জেসিবি দিয়ে মাটি খননের কাজ ৷ কাজ শুরু হতেই এলাকার কয়েকশো মানুষ ঠিকাদার সংস্থার সুপারভাইজার-সহ অন্যান্য কর্মীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে দেন। স্বাভাবিকভাবেই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় ৷
বিক্ষোভের মুখে পড়ে ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা কাজ বন্ধ করে সেই জেসিবি দিয়ে কাঠামো নষ্ট করে ৷ এরপর তারা এলাকা ছেড়েও চলে যায়। বিক্ষোভকারী নারায়নী বাউরি এবং ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় সাফ জানান, গ্রীষ্মকালে এলাকা জুড়ে পানীয় জলের সংকট দেখা দেয় তখন তাদের এই জগুরবাঁধের এই জলাশয়ের জলই ভরসা। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ জোর করে প্রাচীর দিয়ে তা দখল করতে চাইছে। কর্তৃপক্ষ জমির দলিল দেখালে তবেই জমিতে পাঁচিল দিতে পারবেন ঠিকা কর্মীরা।
অন্যদিকে, ঠিকা সংস্থার সুপারভাইজার সপ্তর্ষি ঘোষের দাবি, সোমবার সকালে ডিএসপি'র নির্দেশমতো কাজ করছিলেন তাঁরা। কিন্তু স্থানীয়রা তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তারপরেই তারা কাজ বন্ধ করে দেন। বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি ৷ ইস্পাত কারখানার নগর প্রশাসন ভবনের এক আধিকারিক প্রিয়ব্রত বটব্যাল জানান, বিষয়টি তাঁরাও শুনেছেন ৷
সবমিলিয়ে ডিভিসির পর কারখানার সম্প্রসারণের জন্য নিজেদের জমি উদ্ধার করতে গিয়ে হিমশিম ডিএসপি। এভাবেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকারে বাধ্য হচ্ছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা। লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোট হারানোর ভয়ে মুখে কুলুপ আঁটছেন রাজনৈতিক কর্তারাও। স্বাভাবিকভাবেই শিল্পনগরী দুর্গাপুরে শিল্পের ভবিষ্যৎ ঘোর অন্ধকারে ৷
আরও পড়ুন: