সোনামুখী (বাঁকুড়া), 19 নভেম্বর: হাসপাতালের শৌচালয় থেকে অপরিণত ভ্রূণ তুলে নিয়ে গেল কুকুর ৷ চরম গাফিলতির অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে । অমানবিক ছবিটি ধরা পড়েছে বাঁকুড়ার সোনামুখী হাসপাতালে ৷
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক প্রসূতি সোমবার রাতে পেটের যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয় সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে । পরিবারের দাবি, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর ইউরিন টেস্টের কথা বলেন । সেই অনুযায়ী ওই প্রসূতি ইউরিন সংগ্রহের জন্য শৌচালয়ে যান । সেখানেই প্রসূতি একটি অপরিণত ভ্রূণের জন্ম দেন বলে পরিবারের দাবি ।
প্রসূতির আত্মীয় কল্পনা রায় বলেন, "তড়িঘড়ি আমরা কর্তব্যরত নার্সদের ঘটনাস্থলে ডাকতে যাই ৷ তবে নার্সরা আসতে দেরি করেন । পরে আমরাই মহিলাকে প্রসূতি বিভাগে নিয়ে যাই ৷ কিন্তু অপরিণত ভ্রূণটি শৌচালয়েই পড়ে থাকে । কিছুক্ষণ পরে সেখানে গিয়ে দেখি, ওই অপরিণত ভ্রূণটি আর শৌচালয়ে নেই ৷"
রোগীর পরিবারের লোকেদের দাবি, তাঁরা দেখেন, কুকুর একটি অপরিণত ভ্রূণকে মুখে করে নিয়ে ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছে শৌচালয় থেকে । এরপরেই ঘটনা নিয়ে সরব হন প্রসূতির পরিবারের লোকেরা ৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তাঁদের বচসা শুরু হয় ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সোনামুখী থানার পুলিশ । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তড়িঘড়ি প্রসূতিকে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেয় বলে অভিযোগ ।
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালে নিরাপত্তা এবং কর্মীদের গাফিলতি নিয়ে । ঘটনার পরদিন সকালবেলাতেও দেখা যায় সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে একাধিক পথ কুকুর ঘোরাফেরা করছে । তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছে ৷ রাতে যাঁরা ডিউটিতে ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হবে । যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এখনও এই ঘটনাটি নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷
ঘটনার পরে সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে এসে সরেজমিনে তদন্ত করল বিষ্ণুপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধি দল । বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার দু’জন ডেপুটি সিএমওএইচ সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে আসেন এবং প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে । সংগ্রহ করেন বিভিন্ন তথ্যও ।
তবে ঘটনাটিকে মানতে নারাজ বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ 1 মীনাক্ষী মাইতি ৷ তিনি বলেন, "ওই মহিলা এক মাস দশ দিনের গর্ভবতী ছিলেন ৷ পরিবার যা অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । পরিবারের দেওয়া ছবিটা ভুয়ো ।"