কলকাতা, 4 অক্টোবর: প্রায় 10 ঘণ্টার পর শেষ হল জুনিয়র চিকিৎসকদের প্যান জিবি-এর দীর্ঘ বৈঠক ৷ পূর্ণ কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে কি না, সেই নিয়ে এখনও সুনিশ্চিত কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে । তবে সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুর 2টোয় একটি প্রতিবাদ মিছিল করতে পারেন তাঁরা ৷ এসএসকেএম অথবা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে মিছিল যাবে ধর্মতলা পর্যন্ত । যদিও এখনও পর্যন্ত পথ সুনিশ্চিত হয়নি ।
সূত্রের খবর, মিছিলের পরই জেনারেল বডির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট ৷ সেই সঙ্গে, আন্দোলনের রূপরেখা আগামিদিনে কী হবে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । এই মিছিলের পর অনশন আন্দোলনের ঘোষণা করতে পারেন জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ বলে সূত্রের খবর ৷ তবে তাতে যোগ নাও দিতে পারে রাজ্য়র সমস্ত মেডিক্যাল কলেজগুলি ৷
আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত, সেই নিয়ে বৃহস্পতিবার সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ বৈঠকে, পূর্ণ কর্মবিরতি থেকে সরে অন্য কোনও পথে আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সিনিয়র চিকিৎসকরা ৷ সেই বৈঠকের পরই জিবি বৈঠক শুরু করেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷
আরজি করের জিবি বৈঠকের পর এদিন রাতে 9টা থেকে রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিরা প্যান জিবি বৈঠক শুরু করেন ৷ পূর্ণ কর্মবিরতির বদলে কোন পথে আন্দোলন করা যেতে পারে, বৈঠকে সেই নিয়ে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর ৷ বৈঠক শেষ হয় শুক্রবার ভোর 6টায় ৷
প্রসঙ্গত, 42 দিন পর পূর্ণ কর্মবিরতি তুলে নেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । তবে তার কিছুদিন পরই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ঘটনাকে সামনে রেখে 1 অক্টোবর থেকে ফের কর্মবিরতি চালু করেন তাঁরা । কিন্তু দ্বিতীয়বারের এই কর্মবিরতি বহু সিনিয়র চিকিৎসক মেনে নেননি । জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে বিভেদ ৷
এদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৷ জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়া জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিতে মামলায় আবেদন করা হয় ৷ মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্য শুক্রবার প্রধান বিচারপতির এজলাসে উত্থাপন করা হবে ৷
আন্দোলনের প্রথম থেকেই আরজি কর হাসপাতালে 'থ্রেট কালচার'এর বিরুদ্ধে সরব হন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ আশিস পাণ্ডেকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ।
পড়ুন: কর্মবিরতির বিরুদ্ধে সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ, কী মত জুনিয়র ডাক্তারদের ?
মূলত সিবিআইয়ের অভিযোগ, সন্দীপ ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং কাছের মানুষ এই আশিস পাণ্ডে। আরজি করের টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতিও তিনি ৷ আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত নেমে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, আশিস হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের রীতিমতো হুমকিও দিতেন ৷
এছাড়া, গত 9 অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে যখন তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের সময়ে সেমিনার হলে অর্থাৎ প্লেস অফ অকারেন্স বা অকুস্থলে দেখা গিয়েছিল আশিসকে । আরজি কর হাসপাতালে যে সকল ক্যাফে কিংবা দোকান রয়েছে সেইগুলিও বকলমে এই আশিস পাণ্ডেই দেখাশোনা করতেন বলে জানা গিয়েছে ।