মেদিনীপুর, 20 সেপ্টেম্বর: বন্যা প্লাবিত এলাকাগুলিতে ত্রাতা আশা কর্মীরাই ৷ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বন্যার জলে ডুবে যাওয়া অঞ্চলগুলিতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বাদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসেছেন আশা কর্মীরা ৷ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শঙ্কর ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশংসা করেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ৷
তিনি বলেন, "আগামী 7 দিনের মধ্যে যে সমস্ত গর্ভবতী মায়েদের প্রসবের তারিখ রয়েছে। তাঁদের স্পিড বোটে করে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে নিয়ে এসেছি ৷ ঘাটাল মাদার্স হাট থেকে শুরু করে শালবনি মাদার্স হাটে তাঁদের রাখা হয়েছে ৷ সেখানে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা তাঁদের তত্ত্বাবধান করছেন ৷ এমন 80 জনের মধ্যে 10 জনের এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৷"
এখনও পর্যন্ত 19 টি মেডিক্যাল টিম করা হয়েছে ৷ জেলার 476 টি ত্রাণ শিবিরে পর্যাপ্ত ওষুধ, ওআরএস এবং অ্যান্টিভেনাম মজুত রাখা হয়েছে ৷ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, 15 জনকে সাপে কামড়েছে ৷ তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর ৷ এই বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, "বন্যাকবলিত এলাকা এবং ত্রাণ শিবিরগুলিতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই পর্যন্ত 19টি মেডিক্যাল টিম গড়া হয়েছে ৷ চন্দ্রকোণা, ঘাটাল, দাসপুর-সহ বিভিন্ন জায়গার স্বাস্থ্য শিবির খোলা হয়েছে ৷ এই বন্যা বিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে আশাকর্মীরা রাত-দিন এক করে কাজ করছে ৷ জেলায় মোট 476 টি ত্রাণ শিবিরে পর্যাপ্ত ওষুধ, ওআরএস এবং অ্যান্টিভেনাম মজুত রাখা হয়েছে ৷"
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শঙ্কর ষড়ঙ্গী আরও বলেন, "ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লক- ক্ষীরপাই, চন্দ্রকোনা, ঘাটাল, দাসপুর 1 ও দাসপুর 2, এবং তার সঙ্গে ডেবরা, দাঁতন 2, পিংলার কিছু অংশ, কেশিয়াড়ির কিছু অংশ, মেদিনীপুর পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড, ঘাটাল পুরসভার প্রায় 13টি ওয়ার্ড বন্যা কবলিত হয়েছিল ৷" তিনি জানান, ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার ফলেই এই বন্যা হয় ৷
একদিন আগেই প্লাবিত এলাকা দেখতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তবে জল বাড়তে থাকায় বেশিরভাগ জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি সাহায্যকারী কর্মীরা ৷ বেশ কিছু জায়গায় ইলেকট্রিক না থাকায় জল কষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে ৷ এই ঘটনার মধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা প্রাণপন লড়ে যাচ্ছেন মানুষের জন্য।সেই তথ্যই দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ৷
প্রসঙ্গত, জেলা প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত বন্যার কারণে জেলায় 3 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ কেশপুরের জগন্নাথপুরে বছর দশেকের নাবালক শেখ গিয়াসউদ্দিন বন্যা দেখতে গিয়ে তলিয়ে যান ৷ অন্যদিকে নারায়ণগড়ের রথিপুরে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে ৷ এছাড়াও, খড়গপুর গ্রামীণে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে পুকুরে তলিয়ে গিয়ে ৷