বর্ধমান, 12 সেপ্টেম্বর: জুনিয়র চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনে বুধবারের রাতের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডিন তাপস ঘোষকে। যদিও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনে নয় ডিনের দায়িত্বে থাকা তাপস ঘোষ অনেকদিন ধরেই সেই পদ ছাড়তে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেই জন্য তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারী চিকিৎসক পড়ুয়াদের দাবি ছিল, আরজি কর-কান্ডে নাম জড়িয়েছে চিকিৎসক অভীক দে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসদের। তাঁদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা ডিন অফ অ্যাফেয়ার্স তাপস ঘোষ। পাশাপাশি আরজি কর-কাণ্ড ঘটার দু'দিন পরে অর্থাৎ 11 অগস্ট মাঝরাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজর লেকচারার থিয়েটার রুমে অভীক দে তাঁর অনুগত ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন। সিসিটিভি ফুটেজে সেই সমস্ত কিছু থাকার কথা। অথচ দেখা যাচ্ছে মেডিকেল কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে 11 অগস্টের ফুটেজ মিসিং। 10 ও 12 অগস্টের ফুটেজ থাকলেও শুধু 11 তারিখের কেন সিসিটিভি ফুটেজ নেই ? । এর উত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ অভীক দের মতো দুর্নীতিগ্রস্থদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। তাই 11 অগস্ট রাতের ফুটেজ উধাও। কারা, কীভাবে সেই ফুটেজ মুছে ফেলল সেটা জানার জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন তাঁরা।
যদিও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ স্টোরের একটা নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটি আছে। সমস্ত ফুটেজ স্টোর করে রাখা আছে তদন্তের প্রয়োজন হলে সেই ফুটেজ দেওয়া হবে। তবে ওই দিনের ফুটেজ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি। অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
"ছাত্রছাত্রীদের দাবি ছিল ডিন অফ অ্যাফেয়ার্স ডাক্তার তাপস ঘোষকে সরিয়ে দিতে হবে ৷ এদিকে তাপস ঘোষ যেহেতু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি-র পাশাপাশি ডিনের দায়িত্বে আছেন, তাই তিনি ডিন পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে অনেকদিনই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ভালো কাজের জন্য তাঁকে কলেজের স্বার্থেই আমরা রেখে দিয়েছিলাম। তবে এদিন তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেটা আমি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের(NMC) সচিবকে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ৷ কারণ এই শিক্ষাবর্ষে যেহেতু এখনও ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে, সেক্ষেত্রে ডিন হিসেবে তাপস ঘোষের নামই দেওয়া আছে। সেইজন্য আমি ইমেল করেছি। অনুমতি মিললেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।"
11 অগস্টের রাতে সিসিটিভি ফুটেজ কোথায় গেল ? এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, "সিসিটিভি ফুটেজ তো নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু স্টোরেজের একটা ক্যাপাসিটি আছে। এটুকু বলতে পারি সিসিটিভি ফুটেজ আমরা স্টোর করে রেখে দিই। তদন্তের জন্য চাওয়া হলে, অবশ্যই তা দেওয়া হবে। আমরাও সিসিটিভি ফুটেজ দেখছি না। ফলে কী ফুটেজে আছে বলতে পারছি না। যা আছে সবই রেখে দিয়েছি।"