দাসপুর, 2 জুন: মৃতদেহ সৎকারের জন্য প্রায় 15 বছর ধরে যেতে হয় অন্য গ্রামে ৷ দেহ সৎকার নিয়ে চলে বাকবিতণ্ডা, গন্ডগোল, মারধর । প্রশাসনের কাছে বারবার তদ্বির করেও কোনও লাভ হয়নি ৷ অবশেষে সরকারি সাহায্য ছাড়াই গ্রামের যুবকদের উদ্যোগে রাতারাতি শ্মশানে তৈরি হল চুল্লি ।
দাসপুর এক নম্বর ব্লকের পাঁচবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতসাম গ্রামের শ্মশানে দীর্ঘ 15 বছর ধরে নেই কোনও চুল্লি ৷ গ্রামের কেউ মারা গেলে অনেকটা দূরে গিয়ে রাস্তার ধারে খোলা জায়গাতে সৎকারের কাজ করতে হয় । আবার বর্ষা এলে আর এক সমস্যা ৷ গ্রাম ছাড়িয়ে অন্য গ্রামে গিয়ে সেই গ্রামের মানুষজনের অনুমতি নিয়ে সেখানকার শ্মশানের চুল্লিতে দেহ সৎকার করতে হয় ।
এ ব্যাপারে নিজেদের সমস্যার কথা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি । শুধুই মিলেছে প্রতিশ্রুতি ৷ কাজের কাজ কিছু হয়নি । অবশেষে গ্রামের যুবকেরা চাঁদা তুলে শ্মশানের নতুন চুল্লি তৈরি করলেন । গ্রামের ছেলেদের উদ্যোগে শ্মশানে চুল্লি তৈরি হওয়াতে খুশি গ্রামের সকলেই । গ্রামের যুবকদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ।
গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল সামন্ত বলেন, "আমরা যে গ্রামে থাকি তা দুটো গ্রামের শেষ প্রান্ত । আমাদের এখানে শ্মশান চুল্লি করে দেওয়ার বিষয়ে সরকারি কোনও হেলদোল নেই । বছরের পর বছর ধরে মৃতদেহ সৎকারে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের । এ জন্য অন্য গ্রামে যেতে হয় । অনেক ঝামেলায় পড়তে হয় ৷ তাই গ্রামের যুবকদের সাহায্য নিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে আমরা শ্মশান চুল্লি তৈরি করেছি গ্রামের মানুষের স্বার্থে ।"
যদিও এই বিষয়ে নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি । দাসপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন, "আমাদের এখানে 162টি গ্রাম আছে ৷ প্রত্যেকেরই শ্মশানে চুল্লি করে দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম ৷ কিন্তু তা পূরণ হয়নি । তবে গ্রামের মানুষ এবং গ্রামের যুবকরা যে উদ্যোগ নিয়ে এই চুল্লি তৈরি করেছে, তার সাধুবাদ জানাই । অনেকেই গ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ভূমিকা নিতে পারে ৷ আমাদের সমর্থন রয়েছে তাঁদের সঙ্গে ।"