রায়দিঘি, 26 মে: বামনেতা-কর্মীরা বলেন, "সুন্দরবন জানে ঝড় আসার আগে কান্তি আসেন ৷" আমফান থেকে আয়লা কিংবা যশ, সুন্দরবন তথা রায়দিঘির বুকে যতবার ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে ততবারই সর্বহারা মানুষ পাশে পেয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বাম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে ৷ ঘূর্ণিঝড় রেমালের মুখে আবার সেই সুন্দরবন ৷ শরীরে শক্তি কম, চোখের দৃষ্টি দুর্বল, বয়সের ভারে অনেকটাই নতজানু তবুও ক্লান্তি নেই ৷ এই দুর্যোগে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই নেমে পড়েছেন রাস্তায় ৷ ঘুরে দেখলেন এলাকা ৷ সাবধান করলেন এলাকার বাসিন্দাদের ৷
কান্তি বলেন, "আমি তো সরকারে নেই তাই আশপাশের মানুষের সাহায্য নিয়ে যতটা সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি । আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এক মিটার জলস্তর বাড়বে ৷ রাত্রি 11টা থেকে 12টার মধ্যে জোয়ারও থাকবে ৷ যদি এমন জলস্তর বাড়ে বা ঢেউ বাড়ে তাহলে অনেক বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ৷ সুন্দরবনবাসী আবারও একটা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে ৷ বাঁধ ভাঙা মানেই চাষের জমির বড় ক্ষতি হবে ৷ আর ঝড়ের গিতবেগ বেশি হলে ঘর-বাড়ি ভেঙে যাওয়ারও প্রবল আশঙ্কা থাকছে ৷ সমস্ত সুন্দরবনবাসীর কাছে আমার আবেদন নিরাপদ জায়গায় থাকুন ৷ সাবধানে থাকুন৷"
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে ত্রিপল, ত্রাণের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন বাম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ সকালে পৌঁছে গিয়েছেন সুন্দরবনে। অবস্থা খতিয়ে দেখছেন। তিনি এদিন আরও বলেন, "গত তিরিশ বছর ধরে সুন্দরবনের সব ঝড়ের প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। 2009 সালের 26 মে আয়লা আছড়ে পড়েছিল সুন্দরবনের বুকে। আজও সেই 26 মে। রাজ্য সরকার সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে বলছে। কিন্তু আমি তা লক্ষ্য করছি না। আমার মনে হয় প্রশাসনের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।" ঘূর্ণিঝড় রেমালের ল্যান্ডফলের সময় যত এগিয়ে আসছে, তত রাজ্যজুড়ে খারাপ হচ্ছে আবহাওয়া। প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনা জেলায় ৷ সঙ্গে চলছে দমকা হাওয়া।
আরও পড়ুন রেমালের প্রভাবে দিঘায় উত্তাল সমুদ্র, বাড়ল নজরদারি
ক্ষমতা এখন আর নেই ৷ কিন্তু মানুষ যখন বিপদে পড়ছে তখনই তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ এক সময় দাপুটে বাম নেতা ছিলেন। এমনকী, রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। তাই সুন্দরবনকে চেনেন হাতের তালুর মতো ৷ যখনই সুন্দরবনের আকাশে দুর্যোগের ঘন মেঘ জমেছে তখনই এলাকার মানুষদের পাশে ছুটে এসেছেন বাম নেতা কান্তি। রবিবারও সকালে ধুতি-পাঞ্জাবি পড়ে নদীর তীরে এলাকার মানুষদের হাল-হাকিকত জানতে ত্রাণ সামগ্রিক নিয়ে হাজির হন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় । এদিন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও সকলকে বাড়ি থেকে না বের হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ৷ পাশাপাশি কোনও সমস্যা হলে প্রশাসনের পাশাপাশি রেড ভলান্টিয়াররা তৈরি রয়েছেন বলেও জানান তিনি ৷
আরও পড়ুন: প্রস্তুত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ল্য়ান্ডফলের আগে সাগরের পরিস্থিতি ইটিভি ভারতের ক্যামেরায়