কাকদ্বীপ, 22 অক্টোবর: ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতিমধ্যে রাজ্যের উপকূল তীরবর্তী এলাকায় জারি হয়েছে লাল সর্তকতা। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনদের নিরাপদ আশ্রয় চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে ৷ মৎস্যজীবীদের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী ৷
ঘূর্ণিঝড় দানার আতঙ্কে কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে উপকূল তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের। সুন্দরবনের গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, পাথরপ্রতিমা, সাগর বকখালি, নামখানা-সহ একাধিক উপকূল তীরবর্তী এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মাটির নদীবাঁধ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত করার কাজ শুরু করেছে রাজ্যের সেচ দফতর।
মন্ত্রীর উচ্চপর্যায়ের বৈঠক- মঙ্গলবার কাকদ্বীপ মহাকুমার শাসকের দফতরে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরার উপস্থিতিতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করা হয়। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন এলাকার প্রতিটি ব্লকের বিডিও থেকে শুরু করে সেচ দফতরের আধিকারিকরা। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে এলাকার বিধায়করা। প্রতিবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় কাকদ্বীপ মহকুমার এলাকার মৌসুনি দ্বীপ ও ঘোড়ামারা দ্বীপ। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ উপকূল তীরবর্তী এলাকাগুলি।
দানা মোকাবিলায় সতর্কতা- জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলির ওপর বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। কাকদ্বীপ ও গোসাবা, গঙ্গাসাগরে বিপর্যয় মোকাবিলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বিভিন্ন ব্লকগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে ইতিমধ্যে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় ইতিমধ্যে খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। ত্রাণ শিবিরগুলিতে মজুত রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল এবং শুকনো খাবার।
কী বলছেন মন্ত্রী?
- এবিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় ইতিমধ্যে উচ্চপর্যায় বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক সেরে নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের যে সকল নিম্নবর্তী এলাকা রয়েছে সেই সকল এলাকা থেকে ইতিমধ্যে মানুষজনদের সরানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। বিশেষ করে ঘোড়ামারা এবং গঙ্গাসাগরের বেশকিছু এলাকা থেকে মানুষজনদের নিরাপদ আশ্রয় ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে।
- তিনি বলেন, "ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে জেলা প্রশাসন ৷ যে সকল জায়গায় মাটির নদীবাঁধ রয়েছে সে সকল জায়গায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদীবাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সাগরে আছড়ে পড়ার পর যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে দক্ষিণ 24 পরগনা উপকূল তীরবর্তী এলাকায় তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছি। মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।"