কলকাতা, 2 এপ্রিল: একঝাঁক নতুনের মাঝে সিপিআইএমের প্রবীণ নেতা সুজন চক্রবর্তীকে দমদম লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বামফ্রন্ট ৷ তিনি যাদবপুর তথা দক্ষিণ 24 পরগনা তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা ৷ সেখান থেকে সোজা দমদম লোকসভায় প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী ৷ কিন্তু, তা তিনি মানেন না ৷ পলিটব্যুরো সদস্য সুজনের কাছে, পুরো পশ্চিমবঙ্গটাই তাঁর ৷ পুরো রাজ্যটাকেই তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন ৷ তাঁর কথায়, তিনি ভোটের জন্য রাজনীতি করেন না ৷ রাজনীতি করেন মানুষের জন্য ৷
তিনি বলেন, "অবিভক্ত 24 পরগনা আমার কাজের জায়গা ছিল ৷ পরবর্তীকালে জেলা ভাগ হয়ে যায় ৷ বারুইপুর, যাদবপুর একাধিক জায়গা থেকে আমি প্রার্থী হয়েছি ৷ দমদমে আমার দীর্ঘদিনের যাতায়াত ৷ উত্তর চব্বিশ পরগনা জুড়ে নানা কাজে যুক্ত থাকি ৷ ফলে, এখনকার সবকর্মীরা আমাকে চেনেন, জানেন ৷ তাছাড়া, ভোটের জন্য পার্টি করি না ৷ সারা বছর নানান কাজে যুক্ত থাকি ৷ দমদম-যাদবপুরে জিতবই, এভাবে নাম ধরে না বলাই উচিত ৷ রাজ্যের একাধিক আসনে আমরা জিতব ৷"
ইটিভি: প্রচারে কোনও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন?
সুজন: না ৷ ওরকম প্রতিশ্রুতি দিই না ৷ এই 500 টাকা দিয়েছি, ভোট দিবি না মানে ? এরকম বলাটা অন্যায় ৷ ওটা রাজনীতি নয় ৷ এটা মানুষ ভালোভাবে নেয় না ৷ এরকমভাবে বিজেপি-তৃণমূলের দাপট চলে ৷ তাই, আমরা কখনই এরকম বলি না ৷ কিন্তু, মানুষের পাশে আছি ৷ ভরসা রাখুন, পাশে থাকব, আমরা আছি ৷ কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আমরা আছি ৷ যে কোনও প্রয়োজনে আমরা আছি, সেকথা বলছি ৷
ইটিভি: তিনবারের সংসদ সৌগত রায়কে নিয়ে কিছু বলবেন ?
সুজন: সৌগতবাবু বয়সে আমার থেকে অনেক বড় ৷ বাম আমলে মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল, বলেই উনি সাংসদ হয়েছিলেন ৷ কিন্তু, সাধারণ মানুষের কাজ যিনি করেছেন, তিনি তো অমিতাভ নন্দী ৷ আমি তো ওঁর সঙ্গেই থাকতাম ৷ আমি যখন যাদবপুরের সংসদ, অমিতাভ তখন দমদমের সাংসদ ৷ দু'জনে অনেক সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি ৷ আমি তো দমদমে বহুবার ওর প্রকল্পের কাজে এসেছি ৷
ইটিভি: এবারে ভোটের প্রার্থী ঘোষণার আগে সৌগতবাবুর গলায় আশঙ্কার স্বর শোনা গেছিল ! উনি কি ভেবেছিলেন, যে বার প্রার্থী হতে পারবেন না বা দমদমের মানুষ ওনার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ?
সুজন: উনি প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতে অথবা, দল চেয়েছে ৷ না হলে তোষামোদ করে ৷ কিন্তু, উনি এবার প্রার্থী হয়েছেন ৷ সাংসদ তো হননি ৷ মানুষ ওনাকে ভরসা করতে পারবেন কিনা জানি না !
ইটিভি: তাহলে কি এটা আপনাকে বাড়তি অ্যাডভান্টেজ দেবে ?
সুজন: অ্যাডভান্টেজ, ডিজঅ্যাডভান্টেজের ব্যাপার না ৷ সৌগতবাবুর জায়গায় অন্য কেউ প্রার্থী হলে হয়তো একই হত ৷ কারণ, কথাটা হল ব্যক্তি নয়, নীতি ৷ যে নীতি নিয়ে তৃণমূল চলছে, তাতে শিবু হাজরা-শাহজাহানদের জন্য তৃণমূল ৷ সাধারণ মানুষের জন্য নয় ৷ বাড়ি ভেঙে পড়ে গেল ৷ 10 মারা গেলেন-খুন হয়ে গেল ৷ ওদিকে কাউন্সিলরের 5 কোটি টাকার গাড়ি ৷ এদের জন্য তৃণমূল ৷ সাধারণ মানুষের জন্য নয়, ছাত্র-যুবদের জন্য নয় ৷ কিন্তু, বামেরা সাধারণ মানুষের জন্য সবসময় আছে ৷
আরও পড়ুন: