ETV Bharat / state

সুস্থ-স্বাভাবিক ব্যক্তি পাচ্ছেন মানবিক-পেনশন, বিধবাভাতা পান স্ত্রী ! শান্তিপুরে দুর্নীতির অভিযোগ - CORRUPTION IN SANTIPUR MUNICIPALITY

অভিযুক্ত দম্পতির ছেলে কর্মরত সেনাবাহিনীতে ৷ ঘটনার দায় অস্বীকার শান্তিপুর পুরসভার 23 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের ৷

CORRUPTION IN SANTIPUR MUNICIPALITY
সুস্থ-স্বাভাবিক হয়েও মানবিকভাতা স্বামীর, স্ত্রী পাচ্ছেন বিধবাভাতা ! (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 11, 2025, 5:16 PM IST

শান্তিপুর, 11 জানুয়ারি: সরকারি প্রকল্পের টাকায় আরও একটি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এল শান্তিপুর পুরসভায় ৷ সেখানে 21 নম্বর ওয়ার্ডের পর এবার 23 নম্বর ওয়ার্ডেও স্বামী জীবিত থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী বিধবাভাতা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এমনকি সংশ্লিষ্ট মহিলার স্বামী সুস্থ-সবল হওয়া সত্ত্বেও মানবিক পেনশন অর্থাৎ, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য সরকারি অনুদানের টাকা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ ৷

সম্প্রতি শান্তিপুর পুরসভার 21 নম্বর ওয়ার্ডের এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল ৷ অভিযোগ, তাঁর কারসাজিতে স্বামী জীবিত থাকা সত্ত্বেও, এক মহিলা বিধবাভাতা পাচ্ছিলেন ৷ দু’বছর পর বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে ৷ অভিযোগ, তদন্ত শুরু হতেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গা-ঢাকা দিয়েছেন ৷

সুস্থ-স্বাভাবিক হয়েও মানবিকভাতা স্বামীর, স্ত্রী পাচ্ছেন বিধবাভাতা ! (ইটিভি ভারত)

আর এবার শান্তিপুর পুরসভার 23 নম্বর ওয়ার্ডে একই রকম ঘটনা সামনে এল ৷ ওই ওয়ার্ডের গায়েনপাড়ার বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন গায়েন ৷ তিনি চলাফেরা করতে পারেন ৷ এমনকি তাঁর শারীরিক কোনও সমস্যাও নেই, যার জন্য কাজ করতে পারেন না ৷ অভিযোগ, তা সত্ত্বেও তিনি প্রতিমাসে রাজ্য সরকারের মানবিক পেনশন বা মানবিকভাতার টাকা পাচ্ছেন ৷ এমনকি, নাজিমুদ্দিন বেঁচে থাকা সত্ত্বেও, তাঁর স্ত্রী ফতেমা বিবি প্রতিমাসে এক হাজার টাকা বিধবাভাতা পান ! সঙ্গে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাও পাচ্ছেন ৷

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে শান্তিপুর পুরসভা এলাকায় ৷ এ নিয়ে নাজিমুদ্দিন গায়েনের দাবি, "আমি বার্ধক্যভাতার জন্য আবেদন করেছিলাম ৷ কিন্তু, মানবিকভাতার টাকা কেন ঢুকছে জানি না ৷ ছেলের বন্ধুরা আবেদন করেছিল ৷ ওঁরা বলতে পারবে ৷ আর আমি এই আবেদন পঞ্চায়েতে করেছিলাম ৷ শান্তিপুর পুরসভায় নয় ৷"

এখানেও দুর্নীতির অভিযোগ করেছে বিরোধী বিজেপি ৷ তাদের প্রশ্ন, শান্তিপুর পুরসভার নাগরিক হয়ে কীভাবে পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান নাজিমুদ্দিন ? যার কোনও জবাব নাজিমুদ্দিন দেননি ৷ প্রতি ক্ষেত্রেই ছেলের বন্ধুদের কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে ৷ কিন্তু, তাঁদের নাম-পরিচয় বলতে চাননি তিনি ৷

আর নাজিমুদ্দিন বেঁচে থাকা সত্ত্বেও, কীভাবে তাঁর স্ত্রী বিধবাভাতা পাচ্ছেন ? তাঁর দাবি, "আমার স্ত্রী লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পায় ৷ কিন্তু, এখন তো শুনছি বিধবাভাতাও পায় ৷ কিন্তু, কীভাবে পায় আমি জানি না ৷ আমি কোনও আবেদন করিনি ৷" উল্লেখ্য, নাজিমুদ্দিন গায়েনের ছেলে সেনাবাহিনীতে কাজ করেন ৷

আবাসের টাকা নয়ছয়ে 4 উপভোক্তার বিরুদ্ধে এফআইআর, দুর্নীতি রুখতে কড়া পুরসভা

এই ঘটনা নিয়ে 23 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজাহান শেখ বলেন, "আমি জানি না কীভাবে একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ মানবিকভাতা পাচ্ছেন ৷ এমনকি ওঁর স্ত্রী বিধবাভাতা পান ৷ তার জন্য মৃত্যু শংসাপত্র প্রয়োজন ৷ আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও, ওঁদের এই পরিষেবাগুলির আবেদন আমার মাধ্যমে করা হয়নি ৷ এইসব অযোগ্যদের জন্য, আমার ওয়ার্ডের প্রায় তিনশো যোগ্য লোকজনের ভাতা আটকে রয়েছে ৷"

এই ঘটনা জানাজানি হতেই, ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন সরকারি পরিষেবার যোগ্য দাবিদাররা ৷ ইনতেয়াজ শেখ বলেন, "আমার বাবা মারা গিয়েছেন, তা সত্ত্বেও মা বিধবাভাতা পান না ৷ বয়স হয়ে গিয়েছে বলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারও মেলে না ৷ এমনকি বার্ধক্যভাতার আবেদন করতে গিয়েছিলাম, বলল এখন বন্ধ আছে ৷ এইসব অযোগ্যদের জন্য, আমরা সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি ৷"

এই নিয়ে শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন সুব্রত ঘোষ বলেন, "বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারি ৷ আমি ইতিমধ্যেই ওই এলাকার কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ নিজেও তদন্ত শুরু করেছি ৷ এই ঘটনা সত্যি হলে, অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷"

যদিও, পুরো বিষয়টিকে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও বিজেপি নেতা চঞ্চল চক্রবর্তী ৷ তিনি বলেন, "আমি নির্দিষ্ট করে বলছি, এর পিছনে তৃণমূলের লোকজন রয়েছে ৷ এঁরা যোগ্য লোকজনকে বঞ্চিত করে, অযোগ্যদের টাকা পাইয়ে দিচ্ছে ৷ বদলে তাঁদের থেকে কমিশন নিচ্ছে ৷ অবিলম্বে শান্তিপুর পুরসভার এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে ৷ সত্যিকারের প্রতিবন্ধী যাঁরা, তাঁদের প্রাপ্য দিতে হবে ৷ এর আগে 21 নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে ৷ এবার 23 নম্বর ওয়ার্ডে একই ঘটনা সামনে এল ৷"

শান্তিপুর, 11 জানুয়ারি: সরকারি প্রকল্পের টাকায় আরও একটি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এল শান্তিপুর পুরসভায় ৷ সেখানে 21 নম্বর ওয়ার্ডের পর এবার 23 নম্বর ওয়ার্ডেও স্বামী জীবিত থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী বিধবাভাতা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এমনকি সংশ্লিষ্ট মহিলার স্বামী সুস্থ-সবল হওয়া সত্ত্বেও মানবিক পেনশন অর্থাৎ, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য সরকারি অনুদানের টাকা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ ৷

সম্প্রতি শান্তিপুর পুরসভার 21 নম্বর ওয়ার্ডের এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল ৷ অভিযোগ, তাঁর কারসাজিতে স্বামী জীবিত থাকা সত্ত্বেও, এক মহিলা বিধবাভাতা পাচ্ছিলেন ৷ দু’বছর পর বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে ৷ অভিযোগ, তদন্ত শুরু হতেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গা-ঢাকা দিয়েছেন ৷

সুস্থ-স্বাভাবিক হয়েও মানবিকভাতা স্বামীর, স্ত্রী পাচ্ছেন বিধবাভাতা ! (ইটিভি ভারত)

আর এবার শান্তিপুর পুরসভার 23 নম্বর ওয়ার্ডে একই রকম ঘটনা সামনে এল ৷ ওই ওয়ার্ডের গায়েনপাড়ার বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন গায়েন ৷ তিনি চলাফেরা করতে পারেন ৷ এমনকি তাঁর শারীরিক কোনও সমস্যাও নেই, যার জন্য কাজ করতে পারেন না ৷ অভিযোগ, তা সত্ত্বেও তিনি প্রতিমাসে রাজ্য সরকারের মানবিক পেনশন বা মানবিকভাতার টাকা পাচ্ছেন ৷ এমনকি, নাজিমুদ্দিন বেঁচে থাকা সত্ত্বেও, তাঁর স্ত্রী ফতেমা বিবি প্রতিমাসে এক হাজার টাকা বিধবাভাতা পান ! সঙ্গে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাও পাচ্ছেন ৷

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে শান্তিপুর পুরসভা এলাকায় ৷ এ নিয়ে নাজিমুদ্দিন গায়েনের দাবি, "আমি বার্ধক্যভাতার জন্য আবেদন করেছিলাম ৷ কিন্তু, মানবিকভাতার টাকা কেন ঢুকছে জানি না ৷ ছেলের বন্ধুরা আবেদন করেছিল ৷ ওঁরা বলতে পারবে ৷ আর আমি এই আবেদন পঞ্চায়েতে করেছিলাম ৷ শান্তিপুর পুরসভায় নয় ৷"

এখানেও দুর্নীতির অভিযোগ করেছে বিরোধী বিজেপি ৷ তাদের প্রশ্ন, শান্তিপুর পুরসভার নাগরিক হয়ে কীভাবে পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান নাজিমুদ্দিন ? যার কোনও জবাব নাজিমুদ্দিন দেননি ৷ প্রতি ক্ষেত্রেই ছেলের বন্ধুদের কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে ৷ কিন্তু, তাঁদের নাম-পরিচয় বলতে চাননি তিনি ৷

আর নাজিমুদ্দিন বেঁচে থাকা সত্ত্বেও, কীভাবে তাঁর স্ত্রী বিধবাভাতা পাচ্ছেন ? তাঁর দাবি, "আমার স্ত্রী লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পায় ৷ কিন্তু, এখন তো শুনছি বিধবাভাতাও পায় ৷ কিন্তু, কীভাবে পায় আমি জানি না ৷ আমি কোনও আবেদন করিনি ৷" উল্লেখ্য, নাজিমুদ্দিন গায়েনের ছেলে সেনাবাহিনীতে কাজ করেন ৷

আবাসের টাকা নয়ছয়ে 4 উপভোক্তার বিরুদ্ধে এফআইআর, দুর্নীতি রুখতে কড়া পুরসভা

এই ঘটনা নিয়ে 23 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজাহান শেখ বলেন, "আমি জানি না কীভাবে একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ মানবিকভাতা পাচ্ছেন ৷ এমনকি ওঁর স্ত্রী বিধবাভাতা পান ৷ তার জন্য মৃত্যু শংসাপত্র প্রয়োজন ৷ আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও, ওঁদের এই পরিষেবাগুলির আবেদন আমার মাধ্যমে করা হয়নি ৷ এইসব অযোগ্যদের জন্য, আমার ওয়ার্ডের প্রায় তিনশো যোগ্য লোকজনের ভাতা আটকে রয়েছে ৷"

এই ঘটনা জানাজানি হতেই, ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন সরকারি পরিষেবার যোগ্য দাবিদাররা ৷ ইনতেয়াজ শেখ বলেন, "আমার বাবা মারা গিয়েছেন, তা সত্ত্বেও মা বিধবাভাতা পান না ৷ বয়স হয়ে গিয়েছে বলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারও মেলে না ৷ এমনকি বার্ধক্যভাতার আবেদন করতে গিয়েছিলাম, বলল এখন বন্ধ আছে ৷ এইসব অযোগ্যদের জন্য, আমরা সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি ৷"

এই নিয়ে শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন সুব্রত ঘোষ বলেন, "বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারি ৷ আমি ইতিমধ্যেই ওই এলাকার কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ নিজেও তদন্ত শুরু করেছি ৷ এই ঘটনা সত্যি হলে, অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷"

যদিও, পুরো বিষয়টিকে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও বিজেপি নেতা চঞ্চল চক্রবর্তী ৷ তিনি বলেন, "আমি নির্দিষ্ট করে বলছি, এর পিছনে তৃণমূলের লোকজন রয়েছে ৷ এঁরা যোগ্য লোকজনকে বঞ্চিত করে, অযোগ্যদের টাকা পাইয়ে দিচ্ছে ৷ বদলে তাঁদের থেকে কমিশন নিচ্ছে ৷ অবিলম্বে শান্তিপুর পুরসভার এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে ৷ সত্যিকারের প্রতিবন্ধী যাঁরা, তাঁদের প্রাপ্য দিতে হবে ৷ এর আগে 21 নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে ৷ এবার 23 নম্বর ওয়ার্ডে একই ঘটনা সামনে এল ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.