দুর্গাপুর, 5 জুলাই: শ্রমিকদের জন্য সরব হতে গিয়ে বিতর্কে জড়াল তৃণমূল ৷ অভিযোগ, শুক্রবার দুর্গাপুরের গ্যামনে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের ভিতরেই সভা করে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত এসবিএসটিসি এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন ৷ সেই মঞ্চ থেকে 21-এ জুলাইয়ে ধর্মতলায় যাওয়ার স্লোগানও দেওয়া হয় ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় । বিরোধীদের কটাক্ষ, তৃণমূলের এটাই সংস্কৃতি ৷
ঠিকা শ্রমিকদের সঠিক মজুরি, চিকিৎসা পরিষেবা, দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিকদের সরানো, অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ী করা, অত্যাধুনিক বাস রাস্তায় নামানো, ন্যূনতম 26 দিনের কাজ, পে স্লিপ দেওয়া, শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া-সহ একাধিক দাবিতে শুক্রবার এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষের স্মারকলিপি জমা দেয় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন ৷ এসবিএসটিসির শ্রমিকদের সঙ্গে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক ছাড়াও দীপঙ্কর লাহা, প্রভাত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ৷
কিন্তু স্মারকলিপি জমা দেওয়ার আগে কার্যালয়ের মধ্য়ে যে সভা হয়৷ তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয় ৷ এই নিয়ে বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তৃণমূলের এটাই সংস্কৃতি। সরকারি সংস্থার ভেতর দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ডেপুটেশন কর্মসূচি করে সভা । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন কোনও অনৈতিক কাজ বরদাস্ত করা হবে না । কিন্তু দেখা যাচ্ছে শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতিই নিয়ম ভাঙছেন । ওঁরা আগে সরকারি জমি দখল করে রাজনীতি করতো, সেটা এখনও ভুলে যেতে পারছেন না । এই ভাবেই সরকারি জমির উপর, বিভিন্ন কারখানার উপর রাজনীতি করে শ্রমিকদের শোষণ করে চলেছেন ।"
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় পালটা বলেন, "বিজেপি শ্রমিক সংগঠনের কোনও গাইডলাইনই জানে না । ওরা শ্রমিকদের স্বার্থেও কোনও কাজ করে না । ওরা 8 ঘণ্টার পরিবর্তে 12 ঘণ্টার অধিক সময় ধরে শ্রমিকদের কাজ করানোর চেষ্টা করছে । কিন্তু তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন সেইসবের বিরুদ্ধে । আমরা শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি শ্রমিকদের অধিকারের দাবি তুলে । বিজেপি শুধু না জেনে বুঝে নানা ভ্রান্ত মন্তব্য করেই যায় ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার, গণপরিবহণ ব্যবস্থাকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছে । নানারকম আইন করে শ্রমিক সংগঠনগুলিকেও কেড়ে নিতে চাইছে । কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে দেশের মানুষ বিজেপির আসল রূপ খুলে দিয়েছে । পিএফএর টাকাও আটকে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার । শ্রমিকরা সমস্যায় পড়ছে। আর দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার যেসব ঠিকাদাররা শ্রমিকদের পে স্লিপ দিচ্ছে না, তাঁদের ব্ল্যাকলিস্টেড করে দেওয়া হবে ৷’’