শিলিগুড়ি, 16 জুলাই: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার তদন্তের প্রভিশনাল রিপোর্ট দিলেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি জনক কুমার গর্গ। মঙ্গলবার তিনি রেল বোর্ডের কাছে ওই রিপোর্ট জমা দেন বলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। আর রিপোর্টে, ওই দুর্ঘটনার সময়কার একাধিক ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। মোট 29 পাতার একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তিনি।
রিপোর্টে জানানো ত্রুটিগুলো হল-
- রাঙাপানি রেল স্টেশন মাস্টারের তরফে অটোমেটিক সিগন্যালিং খারাপ থাকায় T/D 912-এর পরিবর্তে T/A 912 ইস্যু করা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। কারণ T/A 912 ইস্যু করা হলে তাতে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি উল্লেখ করা ছিল না।
- মালগাড়িকে কশন অর্ডার (Caution Order) ইস্যু না-করা।
- মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও ট্রেন ম্যানেজারের কাছে সুরক্ষা সামগ্রী বা ওয়াকিটকি না-থাকা।
- স্টেশন মাস্টারের T/A 912 মেমোতে ট্রেন ম্যানেজারের সই করানো উচিত ছিল, যা করানো হয়নি।
- অটোমেটিক সিগন্যালিংয়ে ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রেন চালক ও স্টেশন মাস্টারদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ।
- T/A 912 ইস্যু করা হলে ট্রেন চালক, ম্যানেজার ও স্টেশন মাস্টার-সহ কর্মীদের কী কী পদক্ষেপ করা উচিত সেই বিষয়ে ট্রাফিক ইনস্পেক্টর ও চিফ লোকো ইন্সট্রাক্টরের অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে।
বিশদ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে ছাড়ার পর মালগাড়ি ট্রেনের চালক ও ট্রেন ম্যানেজারকে ওয়াকিটকি ইস্যু করা হয়নি। তার বদলে ট্রেনের চালক ও ম্যানেজার সিইউজি ফোনে যোগাযোগ রাখছিলেন। ওইদিন মোট ন'টা সিগন্যাল খারাপ ছিল। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সিসিআরএস জানিয়েছেন, এইদিন রাঙাপানির কাছে আরএইচ 1.29-এর একটি বাঁক রয়েছে। ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস 10.97 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় চলছিল এবং বাঁকের পরই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানে ওই বাঁকের কাছেই সেই সময় আপ লাইনে নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ির দিকে আসছিল।
কিন্তু ডাউন লাইনে প্রায় 78 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় যাচ্ছিল মালগাড়ি ট্রেনটি। বাঁকের কারণে আপ লাইনে থাকা নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য ডাউন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ঢাকা পড়ে যায়। বাঁক পার করার পর 332 মিটার আগে AS652 সিগন্যালের কাছে এমার্জেন্সি ব্রেক কষেছিল সহকারি চালক ও চালক। কিন্তু গতি কমে হয়ে যায় প্রায় 40 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ৷ তারপরই মালগাড়ি ট্রেনটি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ধাক্কা মারে।