কলকাতা, 22 নভেম্বর: দু'বছর আগে 23 নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডঃ সিভি আনন্দ বোস ৷ সেই উপলক্ষ্যে শনিবার রাজভবনে আয়োজন করা হয়েছে দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ৷ রাজ্য তো বটেই, ভিন রাজ্যের বিভিন্ন মহল থেকে প্রায় 200 জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে খবর ৷ কিন্তু সেই তালিকায় নাম নেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ৷ এমনকী, নেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নামও ৷ এমনই খবর রাজভবন সূত্রে ৷
রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপালের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে শনিবার ক্রীড়া, শিল্প, সাহিত্য জগতের সকল মহারথীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ৷ তবে থাকছেন না কোনও রাজনীতিবিদ ৷ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেই বলে জানা গিয়েছে ৷ গত বছর রাজ্যপাল পদে প্রথম বর্ষপূর্তিতে 23 নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৷
রাজ্যপালের বর্ষপূর্তির দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ৷ শনিবার সকালে রাজভবন চত্ত্বরে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে । সস্ত্রীক রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও তাঁর আত্মীয়রা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ৷ সকাল 10টায় প্রদর্শনী ও বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে । বেলা 12টায় বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে বেশ কিছু জিনিসপত্র বিতরণ করা হবে । বিকেল 5টায় রাজভবনের ভিতরেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ৷ অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মমতা শঙ্কর রায়, পূর্ণদাস বাউলের মতো বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন ৷
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রায় 200 জনকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে ৷ রাজভবন সূত্রে খবর, সেই আমন্ত্রণ পত্রের তালিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেই । এমনকী, কোনও রাজনৈতিক নেতার নাম নেই বলে জানা গিয়েছে । সূত্রের দাবি, রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদাধিকারী ৷ তাই তিনি রাজনীতির বাইরে থাকতে চাইছেন । তবে সিনেমা জগতের কয়েকজন উপস্থিতি থাকতে পারেন বলে বৃহস্পতিবার রাতেই বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল ৷ উল্লেখ্য, গোয়া ফিল্ম ফেস্টিভলে সিভি আনন্দ বোসের লেখা 8টি বই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পায় বলে জানা গিয়েছে ৷
দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আগেই 'আপনা ভারত, জাগতা বেঙ্গল' নামে এক কর্মসূচির ঘোষণা করেন রাজ্যপাল ৷ বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভারতের বৈশ্বিক শক্তি সংমিশ্রণকে তুলে ধরতে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় রাজভবনের তরফে ৷ সেই সঙ্গে, কর্মসূচির আওতায় একাধিক সমাজকল্যাণমূলক পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে ৷ শাসন ব্যবস্থার উন্নতি ও সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে রাজ্যপাল জনসাধারণের কাছে পৌঁছতে চাইছেন ৷ একইভাবে প্রশাসনিক মহলেও যাতে যথাযথ কাজ সঠিকভাবে হয়, তার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করেছেন তিনি।
রাজ্যপালের গৃহীত উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি
ফাইল টু ফিল্ড: সরাসরি জনগণের সমস্যার সমাধান করতে 250টি স্থানে প্রশাসনিক সংযোগ স্থাপন করবেন রাজ্যপাল ।
দুয়ারে রাজ্যপাল: আদিবাসী অঞ্চল, অনাথ শিশুদের আশ্রম এবং বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শন করবেন রাজ্যপাল ।
গভর্নর ইন ক্যাম্পাস: শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীল ও মুক্তচিন্তার উদয় ঘটাতে সরাসরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হবেন রাজ্যপাল ৷
সেই সঙ্গে, নারীদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি 'হর ঘর শিক্ষা' গ্রহণ করা হয়েছে রাজভবনের তরফে ।