কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর: অভিযান সংঘের 112 ফুটের দুর্গা প্রতিমায় পুজো হবে কি না, তার জল গড়িয়েছে আদালতেও ৷ রানাঘাটের এই পুজোয় অনুমতি দিতে চাইছে না প্রশাসন ৷ এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, প্রশাসনের বিরোধিতা কোনও পুজো নিয়ে নয় ৷ সাধারণ মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবে এই পদক্ষেপ ৷ ইতিমধ্যে সমাজের একাংশ এই পুজোয় অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, "মানুষ কথায় কথায় কোর্টে চলে যাচ্ছে ৷ কোর্টে গেলেই হবে না ৷ সাধারণ মানুষের কথাও ভাবুন ৷ দায়িত্বশীল হোন ৷" দেশপ্রিয় পার্কের বিশালাকাকৃতি দুর্গা প্রতিমার পুজো শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে হয়েছিল প্রশাসনকে ৷ এবার আগেভাগেই সতর্ক প্রশাসন ৷
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "112 ফুট প্রতিমা করলে কেউ পদপিষ্ট হতে পারে, তার দায়িত্ব কে নেবে ? 112 ফুট কেন, 412 ফুটের প্রতিমা হোক, আপত্তি নেই ৷ কিন্তু সেই প্রতিমা দেখতে গিয়ে যদি মানুষ মারা যায়, তখন কী হবে ! সেখানে মানুষের এন্ট্রি-এগজিটের পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে ৷ শুধু পুজো করলে হবে না, দায়িত্বশীল হয়ে করতে হবে ৷ এমন কিছু করবেন, যাতে পদপিষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যু না-হয় ৷"
2015 সালে দেশপ্রিয় পার্কে 88 ফুট উচ্চতার দুর্গা প্রতিমা দেখতে গিয়ে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন ৷ তখন সেই পুজো বন্ধ করে দিতে হয়েছিল ৷ দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর কথা মাথায় রেখে পরবর্তী সময় নদিয়ার এই পুজোয় অনুমতি দেয়নি রাজ্য প্রশাসন ৷ যদিও পুজো উদ্যোক্তারাও অনড়, তারা গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নাম তুলতে চান ৷ এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন পুজো উদ্যোক্তারা ৷
সম্প্রতি নদিয়ার কমলপুর অভিযান সংঘের পুজোয় অনুমতি না পাওয়ায় পুজো উদ্যোক্তারা কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন ৷ 25 অগস্ট বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি হয় ৷ আদালত নদিয়ার জেলাশাসককে 24 ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেয় ৷ সেই সিদ্ধান্ত পুজো উদ্যোক্তাদেরও জানাতে হবে, নির্দেশ হাইকোর্টের ৷
কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বাম নেতা-আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকেও কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "কোর্টে গিয়ে রাজনীতির কচকচানি যিনি করেন সারাক্ষণ, সব ব্যাপারে নাক গলান ৷ যদি আমি প্রশ্ন করি, আপনি মেয়র থাকাকালীন কলকাতায় কেন চারদিন ধরে জল জমে থাকত ? কথায় কথায় কোর্ট ! আদালত নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই ৷ কিন্তু বিচারের রায় যেন নীরবে নিভৃতে না কাঁদে। এমন কোনও কিছু না-হয়, যাতে মানুষ বিপদে পড়ে ৷"