সন্দেশখালি, 26 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালির বেড়মজুর গ্রামের আগুন যেন কিছুতেই নিভছে না ৷ ঝুপখালি, কাছারি, বটতলার পর এবার পোলপাড়া এলাকার শাসকদলের নেতা শঙ্কর সর্দারের বাড়িতে হামলা মারমুখী জনতার । সোমবার এবার গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়লেন শাহজাহান এবং তাঁর ভাই সিরাজউদ্দিন ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শঙ্কর সর্দার । এই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, "পোলপাড়ায় বর্গা জমি লুট করে শঙ্কর সেই জমি সিরাজউদ্দিনের হাতে তুলে দিয়েছে । আবাস এবং জব কার্ডের টাকাও সে হাতিয়ে নিয়েছে । এনিয়ে কোনও কিছু বলতে গেলে হুমকি দেওয়া হত গ্রামবাসীদের । বন্ধ করে দেওয়া হত রেশনও ।" শুধু তাই নয়, 42 বিঘা জমির ভুয়ো নথি তৈরি করে তা বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে । সেই অনৈতিক কাজে সিরাজউদ্দিনকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি এবং শঙ্কর সর্দার । এমনটাই দাবি করছেন আদিবাসী মহিলাদের।
এলাকায় অশান্তির খবর পেয়েই উপস্থিত হয় বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গ্রামের মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আইন হাতে তুলে নিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিকল্পনা করে আপনারা অশান্তিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন । কোনও ক্ষোভ থাকলে সেটা পুলিশের ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ করুন । অভিযোগ খতিয়ে দেখে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে ।" পুলিশ সুপারের এই আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ পড়লেও, গ্রামবাসীদের ক্ষোভ তুষের আগুনের মতো জ্বলছে ৷
সূত্রের খবর, এদিন বেলা গড়াতেই ছোট কলাগাছি নদীর ধারে ঝাঁটা, লাঠি হাতে নিয়ে গ্রামের আদিবাসী মহিলারা জড়ো হতে শুরু করেন। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শঙ্কর সর্দারের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী । এরপরই আন্দোলনকারী মহিলারা ঝাঁটা,লাঠি হাতে নিয়ে আচমকা পোলপাড়ার দিকে শঙ্করের বাড়িতে চড়াও হন ৷ আদিবাসী মহিলারা হামলা চালালেন শঙ্করের বাড়িতে ।
এদিকে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শঙ্কর সর্দারের পরিবার অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, "সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। জমি দখল অথবা দুর্নীতির সঙ্গে কোনও যোগ নেই শঙ্করের। হামলা চালাতে হবে বলেই এই ধরণের অভিযোগ তোলা হচ্ছে ।" অন্যদিকে, এই ঘটনায় 3 গ্রামবাসীকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ । ফের যাতে শঙ্করের বাড়িতে জনরোষ আছড়ে পড়তে না পারে, বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে ।
আরও পড়ুন: