ভাটপাড়া, 28 অগস্ট: বাংলা বনধের সকালে গুলি চলার পর বেলা গড়াতেই ফের উত্তেজনা ছড়াল ভাটপাড়ায় । এদিন মেঘনা মোড়ে অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা । সেই সময় ব্যারাকপুর প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়ির কাছে এলে পালটা তাঁর অনুগামীরাও স্লোগান দিতে থাকেন । একসময় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অর্জুন সিং-সোমনাথ শ্যামের অনুগামীরা কার্যত সম্মুখ সমরে নেমে পড়ে । ঠেলাঠেলি এবং দু'পক্ষের ধস্তাধস্তিতে পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা । যা সামলাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তাদের । শেষে পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে দলের কর্মী-সমর্থকদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যান অর্জুন-সোমনাথ, দু'জনেই ।
যদিও, এই নিয়ে যুযুধান দু'পক্ষই একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে । অর্জুন সিং তো একদম এগিয়ে কীভাবে তৃণমূল দলকে শায়েস্তা করতে হয়, তাঁরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন । তবে,অর্জুনের এই হুঁশিয়ারিকে পাত্তা দিতে নারাজ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম । এরপরই তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম ও তাঁর আত্মীয় সৌরভ সিংয়ের কথা বলতেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ । এই বিষয়ে অর্জুনের বক্তব্য,"পুলিশ সরে গেলে এঁদের কোনও দাম নেই । আমি বলছি, পাঁচ মিনিট পুলিশকে সরিয়ে দিন । কত ধানে কত চাল বুঝিয়ে দেব ! বনধ সফল হয়েছে তৃণমূলের যত জ্বালা ।"
জোর করে বনধ সফল করার অভিযোগও এদিন উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং । তাঁর কথায়,"মানুষ যেভাবে সাড়া দিয়েছে তাতেই বনধ সফল হয়ে গিয়েছে । জোরজবরদস্তি'র রাস্তা নিতে হবে কেন ? কোনও গুণ্ডামি করা হয়নি । আর তাতে উসকানি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না । তৃণমূল যা বলছে সেটাই শুনুন আপনারা ।"
তবে,অর্জুনের এই হুঁশিয়ারিকে পাত্তা দিতে নারাজ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম । তিনি বলেন,"দলীয় কর্মী,সমর্থকদের নিয়ে কাঁকিনাড়া বাজারে বসেছিলাম । হঠাৎ জানতে পারি মেঘনা জুটমিলে শ্রমিকদের জোর জবরদস্তি বের করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে । এই কথা জানতে পেরে মেঘনা জুটমিলে যাই ৷ তখনই অর্জুন দলবল নিয়ে এসে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে । পুলিশ না থাকলে গন্ডগোল বাঁধিয়ে দিত ।গন্ডগোল পাকানোই অর্জুনের স্বভাব । যা এখনও 'ও' ছাড়তে পারেনি ।"
প্রসঙ্গত, বনধের সকালে ভাটপাড়ায় অর্জুন ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা প্রিয়াংঙ্কু পাণ্ডের গাড়ি লক্ষ্য করে প্রায় ছ'রাউন্ড গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে ।তাতে আহত হয়েছেন দু'জন । একজনের আবার গুলি লেগেছে বলেও দাবি করেছেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ । যা ঘিরে যখন সরগরম ভাটপাড়া পৌরসভা এলাকা । তারপরেই আবার অর্জুন সিং-সোমনাথ শ্যামের অনুগামীদের হাতাহাতি এবং ধস্তাধস্তিতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় জগদ্দলের মেঘনা মোড়ে ।