কলকাতা, 15 নভেম্বর: ট্যাবের সরকারি টাকার প্রতারণার ঘটনায় এবার ময়দানে নামল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি ৷ এই ঘটনার সঙ্গে ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের যোগ পেয়েছেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা ৷ এসব রাজ্যের বিশেষ কিছু গ্যাং এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে আজ ভবানী ভবন থেকে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার ৷
এই প্রতারণা মামলা নিয়ে সল্টলেকে শিক্ষা দফতর অর্থাৎ বিকাশ ভবনে গিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা ৷ একাধিক তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে ৷ এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন, "এই বিষয়ে আমরা রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ মোট 1 হাজার 911 জন পড়ুয়া প্রতারিত হয়েছে ৷ শিক্ষা দফতর ট্যাব কেনার টাকা দিতে যে সংস্থার মাধ্যমে পড়ুয়াদের তথ্য সংগ্রহ ও তা আপলোডের কাজ করিয়েছে, তাদের সঙ্গেও কথা বলা হবে ৷"
তাঁর দাবি, রাজ্যজুড়ে প্রতারিত একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও পর্যন্ত মোট 93টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ আর সবমিলিয়ে 11 জনকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশ ৷ এমনকি রাজ্য সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা এই প্রতারণার ঘটনায় বাইরের রাজ্যে চলে গিয়েছে ৷ সুপ্রতিম সরকার এও বলেছেন, "যে সব পড়ুয়া প্রতারিত হয়েছে, তারা প্রত্যেকে টাকা পেয়ে যাবে ৷"
ট্যাব প্রতারণা-কাণ্ডে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভিনরাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে আনেন ৷ শিলিগুড়িতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "ট্যাব নিয়ে সিট গঠন করেছি ৷ সেটা পুলিশ ও প্রশাসনের কাজ । কোনও মিডিয়া ট্রায়ালের ব্যাপার নয় ৷ প্রতারকরা মহারাষ্ট্র, রাজস্থান-সহ অন্যান্য রাজ্যেও এটা করেছে ৷ সব রাজ্য থেকে হ্যাক করেছে ৷ প্রতারকদের গ্রুপটাকে আমরা ধরতে পেরেছি ৷ আমাদের প্রশাসন খুব কঠের, রাফ অ্যান্ড টাফ ৷ সিট গঠন হয়েছে ৷ বাদ বাকি যা করার করবে তারা ৷ আর যারা টাকা পায়নি, তাদের সবাইকে টাকা পাঠানো হয়ে গিয়েছে ৷"
এই ট্যাব প্রতারণা-কাণ্ডে কলকাতা পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে ৷ লালবাজারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করা হয়েছে ৷ আর এই তদন্তকারী দলের মাথায় রয়েছেন একজন অতিরিক্ত নগরপাল পদমর্যাদা আধিকারিক ৷ এর পাশাপাশি ওই দলে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল ও ব্যাংক ফ্রড সেকশনের গোয়েন্দারা ৷
লালবাজার সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি, শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের আওতাধীন একাধিক থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ যার মধ্যে রয়েছে যাদবপুর, গল্ফগ্রিন, সরশুনা, বেহালা-সহ একাধিক থানা ৷ বৃহস্পতিবারও একাধিক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে একাংশ পড়ুয়া ৷
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, "আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি ৷ প্রয়োজনে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ-এর সাহায্য নেওয়া হবে ৷"