কলকাতা, 7 ফেব্রুয়ারি: পুজোর আগেই চালু হয়ে যেতে পারে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত হুগলি নদীর নিচ দিয়ে মেট্রো পরিষেবা ৷ আজ দ্বিতীয়বার কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইনের এই অংশ পরিদর্শন করলেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি জনক কুমার গর্গ ৷ আজ তিনি এবং পর্যবেক্ষক দলের বাকিরা হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত খুঁটিনাটি পরিদর্শন করলেন ৷
দেশের মধ্যে শহর কলকাতায় প্রথম ছুটেছিল মেট্রো রেল ৷ সময়টা ছিল 1984 সালের 24 অক্টোবর ৷ ফের এক ইতিহাসের সামনে কলকাতা মেট্রো ৷ নদীর নীচ দিয়ে মেট্রো চালিয়ে আবারও ইতিহাস গড়তে চলেছে এই কল্লোলিনী কলকাতা ৷ তাই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এই অংশের কাজ যে চারটিখানি কথা নয়, সেটা বলাই বাহুল্য ৷ এসেছে বহু বাধা ও বিপত্তি ৷ যদিও ইঞ্জিনিয়ার এবং মেট্রোর কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সফলভবে শেষ হয় সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ ৷ শুধু সুড়ঙ্গের কাজই নয়, সফলভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে সমগ্র প্রক্রিয়া ৷
এখন শুধুমাত্র রেলওয়ে সেফটি বোর্ডের সবুজ সংকেত পাওয়ার অপেক্ষা ৷ তারপরেই যাত্রী নিয়ে নদীর নীচ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এক শহর থেকে মেট্রো পৌঁছে যাবে আরেক শহরে ৷ বাণিজ্যিকভাবে এই মেট্রো চালু করার জন্য সিসিআরএস পরিদর্শন ও তার ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক ৷ তাই চূড়ান্ত অনুমতি দেওয়ার আগে কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইনের এই অংশটি পরিদর্শন করে সব দিক থেকে একেবারে নিশ্চিত হতে চায় সিসিআরএস ৷ তাই পরপর দু’দিন হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ট্রলি ইন্সপেকশন করলেন সিসিআরএস জনক কুমার গর্গ ৷
সকালে হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশন থেকে তিনি পরিদর্শন শুরু করেন ৷ তিনি মেট্রোয় করে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত সফরও করলেন ৷ পাশাপাশি, তিনি হাওড়া ময়দান, হাওড়া, মহাকরণ ও এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের প্রবেশ ও বেরনোর গেটগুলি ঘুরে দেখেন ৷ সঙ্গে এএফসি-পিসি গেটস, টিকিট সিস্টেম, কিউআর কোড ভিত্তিক টিকিট সিস্টেম, স্টেশন কন্ট্রোল রুম, এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম, ট্র্যাকশন সাব-সিস্টেম, ব্যাক আপ কন্ট্রোল সিস্টেম, এসকেলেটর, লিফট, সাইনেজ বোর্ড, ফায়ার ডিটেকশন এন্ড সাপ্রেশন সিস্টেম, ফায়ার অ্যালার্ম, ইমার্জেন্সি টক ব্যাক সিস্টেম, ব্লু লাইট সিস্টেম পরিদর্শন করেন ৷
হওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনটি নদী পৃষ্ঠের অনেক নিচে অবস্থিত হলেও, গভীরতম মেট্রো স্টেশন হল হাওড়া মেট্রো স্টেশন ৷ এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, যে একবার এই স্টেশনটি চালু হলে লক্ষ লক্ষ মানুষের দ্রুত যাতায়াতের পথ খুলে যাবে ৷ তাই এই স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা ও অন্যান্য সুবিধাগুলি বিশেষভাবে পরীক্ষা করেন জনক গর্গ এবং তাঁর দল ৷ পূর্ব রেলওয়ে এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের প্যাসেঞ্জার ইন্টার চেঞ্জিং পয়েন্টগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে ৷
সিবিটিসি সিগন্যালিং সিস্টেম পরীক্ষা করেন ৷ এর পাশাপাশি অ্যান্টি-কলিশন সিস্টেম পরীক্ষা করা হয় ৷ সন্ধের দিকে হাওড়া থেকে এসপ্ল্যানেড স্টেশন পর্যন্ত সর্বোচ্চ 91 কিলোমিটার গতিতে একটি রেক চালিয়ে স্পিড ট্রায়াল করা হয়েছে ৷ সব ঠিকঠাক থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত ছাড়পত্র এসে যাবে ৷ আর তারপরেই উদ্বোধন ৷ হাওড়া, কলকাতা-সহ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ গণ পরিবহন ব্যবস্থার একটি হয়ে উঠবে এই মেট্রো রুট, তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷
আরও পড়ুন: