সন্দেশখালি, 11 মার্চ: ইডির উপর হামলার তদন্তে ফের সন্দেশখালিতে গেল সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল । সোমবার বিকেলে হামলার তথ্য সংগ্রহে সিবিআইয়ের কয়েকজন আধিকারিক পৌঁছে যান ন্যাজাট থানার অন্তর্গত রাজবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে । সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও । সূত্রের খবর, ফাঁড়ির কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে হামলার ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা । খতিয়ে দেখা হয় হামলার ভিডিয়ো ফুটেজও । বেশ কিছুক্ষণ ওই পুলিশ ফাঁড়িতে ছিলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা । এরপর তাঁরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সরবেড়িয়ায় শাহজাহান ঘনিষ্ঠ আরও দু'জনের বাড়িতে তলবের নোটিশ দিয়ে আসেন বলে জানা যায় ।
সিবিআইয়ের অনুমান, ইডির উপর হামলার ঘটনায় এঁদেরও যোগ রয়েছে । তাই এই দু'জনকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তাঁরা । সেই কারণেই তলবের নোটিশ দেওয়া হয় শাহজাহান ঘনিষ্ঠ দু'জনের বাড়িতে গিয়ে । রবিবার রাতেও সরবেড়িয়ার বাসিন্দা এই দু'জনের বাড়িতে সিবিআইয়ের একটি দল গিয়েছিল নোটিশ পৌঁছে দিতে । কিন্তু,বারবার ডাকাডাকি করার পরও সাড়া মেলেনি পরিবারের কারও । একপ্রকার খালি হাতেই সেখান থেকে ফিরে আসতে হয় সিবিআইয়ের আধিকারিকদের । তাই সোমবার নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে তাঁরা শরনাপন্ন হন পুলিশের ।
ইতিমধ্যে ইডির উপর হামলার ভিডিয়ো ফুটেজ হাতে এসেছে সিবিআইয়ের । সেই ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার কাজও করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । সেই মতো নোটিশ দিয়ে শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের একে একে তলব করা শুরু হয়েছে । সোমবারই হামলা-কাণ্ডে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জেরা করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা । তলব করা হয়েছে শেখ শাহজাহানের পরিবারের কয়েকজন সদস্যকেও । সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়া তৃণমূল নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সরবেড়িয়া-আগরহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান জিয়াউদ্দিন মোল্লাও । সেই জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যেই সোমবার বিকেলে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলের ফের সন্দেশখালিতে যাওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে ।
প্রসঙ্গত, গত 5 জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তদন্ত করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয় আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে । সেদিন শাহজাহান বাহিনীর হামলায় রক্তাক্ত হন ইডির কয়েকজন আধিকারিক । রীতিমতো প্রাণ হাতে নিয়ে কোনও রকমে পালিয়ে বাঁচেন ইডির তদন্তকারীরা । সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ন্যাজাট থানায় পৃথক তিনটি মামলা রুজু হয় । একটি শাহজাহানের কেয়ারটেকারের অভিযোগের ভিত্তিতে, অপর দুটির মধ্যে পুলিশের একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা এবং হামলার অভিযোগের ভিত্তিতে ইডির করা অন্য একটি মামলা রয়েছে । শেষ দুটি মামলার তদন্ত করতেই সিবিআই এখন তৎপর হয়ে উঠেছে । মামলার গতি-প্রকৃতি এগিয়ে নিয়ে যেতে বারবার তাঁদের হানা দিতে হচ্ছে সন্দেশখালিতে । উদ্দেশ্য একটাই, যেন তেন প্রকারে ইডির উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তথ্য সংগ্রহ করা, যা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷
আরও পড়ুন: