কলকাতা, 16 জুলাই: জেল সুপারের কাছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট তলব করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ । মঙ্গলবার প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিন মামলায় এই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে ৷
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থা কেমন, তা জানতে চায় আদালত । তাই আদালতের নির্দেশ, জেল সুপারকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিভিন্ন পরীক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে । এসএসকেএমের চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল টেস্ট করবেন ৷ তার পরর আগামী 2 অগস্ট জেল সুপারকে সেই রিপোর্ট জমা করতে হবে হাইকোর্টে । 2 অগস্টের পরে এই মামলার শুনানি হবে ।
এ দিন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর তরফে আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁকে (জ্যোতিপ্রিয়) ইডি গ্রেফতার করেছে । যে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সত্য নয় । 26 অক্টোবর 2023 ওঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি । তারপর গ্রেফতার করা হয় । গ্রেফতারের পর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখান থেকে কমান্ডে হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে । পরে চিকিৎসা হয় এসএসকেএমে । জেলের ডাক্তাররাও চিকিৎসা করছেন । কিন্তু প্রতিদিন তাঁর শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছে। অবস্থা খারাপ হচ্ছে । তাঁর ডায়ালিসিস করতে হবে । পরে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট । একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া হয়ছে । দিন দিন অবস্থার অবনতি ঘটছে ।’’
তিনি আরও জানান, এখনও ইডি কোনও তথ্য দিতে পারেনি। জামিন চাইছেন না । অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হোক । কারণ, জ্যোতিপ্রিয় অসুস্থ ৷ প্রথম থেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
যদিও ইডির আইনজীবী প্রাথমিকভাবে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করে পরীক্ষা করার বিরোধিতা করেন । ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদীর বক্তব্য, এসএসকেএমের বিষয়ে ইডির পূর্ব অভিজ্ঞতা ভালো নয় । তবে জেল সুপারের তত্ত্বাবধানে এসএসকেএমে পরীক্ষার ব্যাপার তিনি শেষ আপত্তি করেননি ।
বিচারপতি ঘোষের বক্তব্য, প্রাক্তন মন্ত্রীর এখনকার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায় আদালত । তার জন্য জেল সুপারকে দু’সপ্তাহের মধ্যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অসুস্থতার রিপোর্ট আদালতে জমা করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ।
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । রেশন দুর্নীতিতে প্রায় 20 হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুমান ইডির । তাদের বক্তব্য, এই দুর্নীতির কিংপিন হচ্ছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী । দুর্নীতির বিপুল টাকা সরাসরি তাঁর কাছে আসত বলেই অনুমান ইডির ।
যদিও জ্যোতিপ্রিয়র দাবি করেছেন, তিনি আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত নন । একই সঙ্গে ইডির হাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ না থাকার সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে ৷ সেটা করা যায় না বলেও দাবি তাঁর আইনজীবীর ।