কলকাতা, 21 মার্চ: মতুয়া সম্প্রদায়ের মহাসংঘের দায়িত্ব কার হাতে থাকবে, সেই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর । সেই মামলায় মমতাবালা ঠাকুরের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ না করতে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । একই সঙ্গে আয়কর দফতরকেও ওই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।
তবে মতুয়া মহাসংঘের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যাপারে আদালত মনে করছে প্যান কার্ডের অপব্য়বহার হয়েছে ৷ তাই পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । 1 এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ।
মতুয়া মহাসংঘের লেনদেনের ব্যাপারে এ দিন মমতাবালার আইনজীবী সোমেন চট্টোপাধ্যায় আদালতে দাবি করেন, "মতুয়া মহাসংঘ বহু বছর আগে তৈরি হয়েছে । বড়মার মৃত্যুর পর, শান্তনু ঠাকুর কোনোভাবেই সংঘাধিপতি নন । অন্য কেউ কোনও একটা প্যান কার্ড ব্যবহার করে সংঘের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে । সেই কারণেই মমতাবালা এফআইআর করেছেন থানায় ।"
বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেন, "মামলাকারী সব অধিকার দাবি করছে না । উনি আগে থেকেই সংঘাধিপতি । ওঁর আইনসঙ্গত অধিকার আছে এমনিতেই । আদালতকে ব্যাংকের আইটি রিটার্ন ফাইল সংক্রান্ত তথ্য দেখানো হোক, যেটা মমতাবালা ঠাকুর ফাইল করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে ।"
রাজ্যের আইনজীবী বলেন, "মমতাবালা ঠাকুর নিজে ওই অ্যাকাউন্টের আইটি রিটার্ন ফাইল করেছেন বলে রাজ্যের কাছে তথ্য জমা পড়েছে । তাছাড়া মতুয়া মহাসংঘে সংঘাধিপতি বলে কোনও পদই নেই ! পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে । সেটা এফআইআর হয়েছে । পুলিশ তারপর তদন্ত শুরু করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সিজ করেছে । পুলিশ তাদের কাজ করেছে ।" কিন্তু বিচারপতি সেনগুপ্তর প্রশ্ন, "এই আইটি ফাইল করার ক্ষেত্রে কোন ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে ? প্রশ্ন হল, তিনি আইটি রিটার্নটা ফাইল কী করে করলেন ? যেখানে ফোনের ওটিপি অন্য কারও কাছে আসছে ।"
শান্তনু ঠাকুরের তরফে আইনজীবী জয়দীপ কর বলেন, "ব্যাংকের আসল পাসবুক তো শান্তনুর কাছে আছে । 1 কোটি 44 লক্ষর মতো টাকা অ্যাকাউন্টে জমা আছে । তবে এটাও সত্য পুলিশ তদন্তের বিষয়ে যথেষ্ট পক্ষপাতদুষ্ট । 6 তারিখ মেলা রয়েছে । যদি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হয় মেলা করা যাবে না ।"
উল্লেখ্য, মতুয়া সম্প্রদায়ের মহাসংঘের দায়িত্ব কার হাতে থাকবে, সেই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর । কারণ, রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । যার ভিত্তিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সিজ করে দেয় ।
আরও পড়ুন: