কলকাতা, 30 জানুয়ারি: বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকা বন্দি-মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বৃহস্পতিবার এই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আদালত এই ঘটনার তদন্ত নতুন করে করার নির্দেশ দিয়েছে ৷ সেই তদন্তে কী তথ্য মিলল, তা আট সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷
এর আগে এই ঘটনার তদন্ত করেছিল সিআইডি ৷ তাদের তরফে জমা দেওয়া রিপোর্ট নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এডিজি সিআইডি-কে আদালতের নির্দেশ, এবার উচ্চতর পদে থাকা কোনও আধিকারিককে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে ৷
চারবন্দির মৃত্যুর ঘটনা হয়েছিল 2022 সালে ৷ আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত জানান, দক্ষিণ 24 পরগনার একাধিক থানা এলাকা থেকে 2022 সালের মাঝামাঝি সংশ্লিষ্ট চারজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ ধরা পড়ার পর তাদের যখন আদালতের নির্দেশে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়, তখন তাঁদের ঠাঁই হয় বারুইপুর সংশোধনাগারে ৷ বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীন ওই চারজনের মৃত্যু হয় ৷
যে চারজন মারা গিয়েছেন, তাঁদের নাম হল - আব্দুল রেজ্জাক দেওয়ান, জিয়ারুল লস্কর, সাইদুল মুনসি ও আকবর খান ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চারজনের শরীরে মোট 39টা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় । যদিও রাজ্যের দাবি ছিল, এরা প্রত্যেকেই ড্রাগ অ্যাডিক্টেড ছিল । গ্রেফতারের আগেই তাঁদের গায়ের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল । এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ হামলা দায়ের করে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর । আবেদনকারীর দাবি, এঁদের প্রত্যেককে পিটিয়ে মারা হয়েছে ।
মামলা চলাকালীন বারুইপুর সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় 2023 সালের 21 অগস্ট ৷ কিন্তু সেই রিপোর্ট দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সিআইডি-কে এই মামলার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত ৷ সেই তদন্তের রিপোর্টেও খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট ৷
এদিন রাজ্য়ের আইনজীবী আদালতে জানান যে রাজ্য ইতিমধ্যেই ক্রিমিনাল সেকশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ৷ তার সন্তুষ্ট হয়নি আদালত ৷ তাই এবার সিআইডি-র উচ্চতর কোনও আধিকারিককে দিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ আট সপ্তাহ পর এই নিয়ে রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দিতে হবে সিআইডি-কে ৷ এখন দেখার সেই রিপোর্ট দেখে আদালত সন্তুষ্ট হয় কি না !
পাশাপাশি রাজ্যের থানাগুলোর সিসিটিভি যাতে সবসময় কার্যকর থাকে, সেই ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নজরদারি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত । কোনও থানা এই ব্যাপারে গাফিলতি করলে, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ডিজিকে । এই মামলায় থানার সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা করতে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । কিন্তু সেখানেও দেখা যায় সিসিটিভি কার্যকর ছিল না ।