কলকাতা, 23 এপ্রিল: আবার নতুন করে 2016 সালের এসএসসি? 282 পাতার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে রয়েছে তেমনি ইঙ্গিত। সোমবারের রায়ের পর মঙ্গলবার এবিষয়ে ব্যাখ্যা দেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীরা। সেখানেই চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যতের কথা জানানো হয়।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের 2016-র সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সোমবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায়দানে 25 হাজার 753 জনের নিয়োগ বাতিল করেছে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ কলকাতা হাইকোর্টের তরফে যে প্যানেল বাতিলের কথা বলা হয়েছে তার সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা এদিন দেন আইনজীবীরা। সেই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নতুন করে পরীক্ষায় বসতে হবে 2016 সালের সকল প্রার্থীদের, যা শুনেই মাথায় হাত সদ্য চাকরিহারাদের।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে বলা হচ্ছে, প্রায় 26 হাজার জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে যাদের নিয়োগে কারচুপি রয়েছে অর্থাৎ যাদের ওএমআরশিটে সমস্যা রয়েছে তাঁদেরকে 12 শতাংশ সুদে পুরো বেতন ফেরত দিতে হবে। অন্যদিকে, বাকিদের বেতন ফেরত না-দিলেও এই মুহূর্তে তাঁরা আর চাকরি করতে পারবেন না। পুরো প্যানেলটাই বাতিল করা হয়েছে।
কিন্তু শুধু প্যানেল নয়, মঙ্গলবার জানা গেল নতুন করে পরীক্ষায় বসতে হবে তাঁদের । ওই সময় তাঁদের যা বয়স ছিল তার ভিত্তিতেই ফের 2024 সালে পরীক্ষা নেবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার 15 দিনের মধ্যে এই পুরো বিষয়টি করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। এই পরীক্ষায় নতুন কোনও এসএসসির পরীক্ষার্থীরা বসতে পারবে কি না সেই সিদ্ধান্তের ভার রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওপর ৷
এরসঙ্গে আরও বলা হয়েছে, প্রত্যেকের ওএমমআর কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরবে ৷ সেখানেই সকলের সামনে স্পষ্ট হবে দুর্নীতি। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর সদ্য চাকরি হারিয়েছেন অশোকনগরের স্বর্ণালী চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "আমি 2016 সালে একজন পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছিলাম আজ আমি একজনের মা, আমার সংসার আছে। স্বাভাবিকভাবেই আগের মতো পরীক্ষা আমি দিতে পারব না এবার। ফলে একটা অনিশ্চয়তার প্রশ্ন উঠছে আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে। এছাড়াও অযোগ্যদের সঙ্গে আমাদেরকে মিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবনে অন্ধকার নামিয়ে আনল কলকাতা হাইকোর্ট।"
অন্যদিকে, চাকরির দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন গান্ধিমূর্তির পাদদেশে ধরনায় ছিলেন পলাশ মণ্ডল। তাঁর মুখেও শোনা গেল একইকথা। তিনি বলেন, "নতুন করে পরীক্ষা দেওয়া মানে আবার আমি যোগ্য কি না সেই প্রমাণ দেওয়া। আসল দুর্নীতি হয়েছে ইন্টারভিউতে সেখানে গিয়ে স্বজন-পোষণ হবে কি না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এটা রাজ্য সরকার এবং কমিশনের ব্যর্থতা। তাদের জন্য অযোগ্যদের পাশাপাশি যোগ্যদেরও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে সারা জীবন আমরা খালি পরীক্ষাই দিয়ে যাব।"
আরও পড়ুন: