কলকাতা, 11 মার্চ: প্রতিদিন সময় চাইছে স্কুল সার্ভিস কমিশন । এতেই চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক । এ দিন এই নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, "স্কুল সার্ভিস কমিশন যদি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে না পারে, তাহলে বলে দিক ৷ আমরা সেই ভাবেই মামলার শুনানি করার ব্যবস্থা করব ৷"
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে আজও আদালতে প্রযোজনীয় তথ্য দিতে পারেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন । আদালতের কাছে আরও সময় চেয়ে আবেদন করেন কমিশনের আইনজীবী । কমিশনের ভূমিকায় বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ । কমিশন আদালতের কোনও প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারছে না বলে জানিয়েছেন বিচারপতি ৷ তিনি বলেন, মামলায় সহযোগিতা করতে পারছে না কমিশন ৷
বিচারপতি দেবাংশু বসাকের কথায়, "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই শুনানি চলছে । কমিশন এখনও কোনও তথ্য দিতে পারছে না । সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট সময়সীমা বলা আছে । আমি জানি না কতদিন ধরে এই শুনানি পর্ব চলবে । কমিশন যদি তথ্য দিতে না পারে সেটা হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দিক । আমরা সেইভাবে মামলা এগিয়ে নিয়ে যাব ৷"
গত শুক্রবার আদালতে হাজির হয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, সোমবার কমিশন আদালতের চাহিদামতো তথ্য যতটা সম্ভব জোগান দেবে । এ দিন চেয়ারম্যান আদালতে হাজির থাকলেও আইনজীবী আদালতকে জানান, তথ্য সরবরাহ করতে আরও কয়েকদিন সময় প্রয়োজন । কমিশনের এ ধরনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ আদালত ।
উল্লেখ্য, ওএমআর প্রস্তুতকারী সংস্থা নাইসা ডাটা স্ক্যানটেক নামে একটা সংস্থাকে দিয়ে তাদের ডেটা স্ক্যান করতে দিয়েছিল । এই তথ্য সিবিআই হলফনামা দিয়ে হাইকোর্টকে জানিয়েছে । সে ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশন কিছু জানে কি না, তা জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক । কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী সেই তথ্য দিতে না পারায় কমিশনের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য আধিকারিকদের হাইকোর্টে তলব করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ । শুক্রবার চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার আদালতে এসে জানান, সোমবার তিনি চেষ্টা করবেন এ ব্যাপারে আদালতকে সহযোগিতা করতে । কিন্তু এ দিন ও তিনি ফের জানান, আরও সময় দিতে হবে । তারপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি ।
ক্ষুব্ধ বিচারপতি বসাক বলেন, যদি আইনজীবী কোনও জবাব না দিতে পারেন তাহলে তিনি আদালতে হাজির হয়েছেন কেন ? চেয়ারম্যান এসেই কী করবেন ? কেন আদালতের সময় নষ্ট করছেন ? তখন আইনজীবী বলেন, দুটো দিন সময় দিন ৷ জবাবে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, "কোনওমতেই সম্ভব নয় । আপনি হয় আপনার কথা বলুন নাহলে ছেড়ে দিন । আদালতের সময় নষ্ট করবেন না । আদালত এসএসসি-কে যথেষ্ট সময় দিয়েছে । চলতি সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত শুনানি শেষ করতে চায় আদালত । আদালতের সময় নষ্ট করবেন না ।"
চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার কিছু বলার চেষ্টা করলে তাঁকেও থামিয়ে দেন বিচারপতি ।
আরও পড়ুন: