কলকাতা, 8 অগস্ট: একাধিক বার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও বেআইনি বাড়ি ভাঙতে সময় চাইল পুরসভা ৷ আর তার জেরেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিচারপতির মন্তব্য, "রাতারাতি বাড়ি তৈরি হয়ে যায়, আর ভাঙতে বছর ঘুরে যায় !"
একবালপুরের ডেন্ট মিশন রোডে একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাকিল আহমেদ সাগর নামে এক ব্যক্তি। ছয় তলা বেআইনি বাড়িটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা। এক বছরের বেশি হয়ে গেলেও পুরসভা এখনও বারবার সময় চাইছে আদালতের কাছে ৷ আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে কলকাতা পুরসভার আইনজীবী একবালপুরের বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়ে ফের অন্তত তিন মাস সময় চান। তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। পুরসভার আইনজীবীর বক্তব্য, "আদালতের নির্দেশ মত ভাঙার কাজ হচ্ছে। কিন্তু সময় দিতে হবে এই কাজ সম্পন্ন করতে।" তারপরই ক্ষুব্ধ বিচারপতি সিনহার মন্তব্য, "বাড়ি তৈরি রাতারাতি হয়, আর ভাঙতে গেলে বছর ঘুরে যায় ! কাজ সম্পন্ন করা যায় না!"
সাকিল আহমেদের আইনজীবী অনিশ মুখোপাধ্যায় বলেন, "বিচারপতি সিনহার তত্তাবধানে এই বাড়ি ভাঙার কাজ চলছে। এদিন পুরসভার আইনজীবী আশ্বাস দিয়েছেন আগামী তিনমাসের মধ্যে এই বাড়ি ভাঙার কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। তারপর বিচারপতি 5 ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন কলকাতা পুরসভাকে।" এর আগে শুনানিতে একবালপুরের বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পুরসভা কেন এত দেরি করছে, সে ব্যাপারে বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছিলেন পুরসভার কাজ নিয়ে। একই সঙ্গে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, "মিউনিসিপ্যাল কমিশনার হলফনামা জমা দিয়ে জানাবে এই নির্মাণ ভাঙতে কী কী যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে। যার জন্য এতো সময় লাগছে।"
পরে পুরসভার তরফে জানানো হয়, ওই এলাকা এতটাই ঘিঞ্জি যে সেখানে পুরসভা তাদের যন্ত্রপাতির ঠিকমতো ব্যাবহার করতে পারছে না। গ্যাসকাটার, হাতুড়ি দিয়ে ছয় তলা বহুতল বাড়ি ভাঙতে হচ্ছে ৷ সে জন্যই কাজ হচ্ছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। বিচারপতি সিনহা একবালপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এলাকায় যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তা লক্ষ রাখতে হবে। এই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি পুরসভাকে তাদের কাজে গতি আনতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ 'না হলে বেআইনি বাড়ি বানাতে যত সময় লাগে তার থেকে বেশি সময় লাগবে ভাঙতে' এমন কটাক্ষও শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়।