কলকাতা, 8 এপ্রিল: গার্ডেনরিচের নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা পৌরনিগম আর রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ ৷ গার্ডেনরিচের ঘটনায় এ দিন আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছে রাজ্য এবং কলকাতা পৌরনিগম । রিপোর্ট দেখে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, "এই ধরনের গ্রেফতারি দেখতে ভালো লাগে । কিন্তু পৌরসভার যে আধিকারিকদের সাহায্য পেয়ে এই ধরনের বেআইনি নির্মাণ হল, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে ?"
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, "পৌরনিগমের যে আধিকারিকরা চুপ করে বসেছিলেন, চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন, তাঁরাই আসল দোষী । এটাই তদন্ত করে দেখতে হবে । পৌরনিগমের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ? বেআইনি নির্মাণ দেখেও যাঁরা চুপ করে বসেছিলেন পৌরসভার সেই আধিকারিকদের কি আপনারা পুরস্কৃত করেছেন ? আদালত চায়, এই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং সাসপেন্ড করা হোক ।"
এর পরই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করে, "পৌরনিগমের যে আধিকারিকরা চোখ বন্ধ করে বসেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে ?" এর উত্তরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, "এই ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, একজন এখনও পলাতক । এই ঘটনায় পৌরসভার বেশ কিছু আধিকারিককে শোকজ করা হয়েছে ।" এর পরই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ পৌরনিগমের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করার এবং প্রয়োজন হলে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেয় ৷
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এই ঘটনায় করা জনস্বার্থ মামলা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন ৷ তিনি আদালতে বলেন, "মামলাকারীর দাবি, তিনি 2022 সাল থেকেই এই ধরনের বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করে আসছেন । কিন্তু তিনি আদালতে আসার সময় পেলেন না কেন ? এই ধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনস্বার্থ মামলা বন্ধ হওয়া উচিত ।"
এর পালটা বিচারপতি বাগচী বলেন, "রাজ্যের আধিকারিকরা কী করছিলেন ? বেআইনি নির্মাণের উপর নজরদারি এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আইন তো আছে । মানুষের প্রাণ এবং সম্পত্তি রক্ষা করার বৈধ উপায় তো আছে । যাঁরা এই মামলা করেন তাঁদের থেকে অনেক বেশি দায়িত্ব এই সমস্ত বিধিবদ্ধ সংস্থার আধিকারিকদের ৷ সমস্ত কিছু যাতে আইন মেনে হয়, তার জন্যই এই সরকারি আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া আছে । তাঁরা কী করছিলেন ? এই বাড়িগুলির নির্মাণ বন্ধ করার জন্য কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি ।"
আরও পড়ুন: