কলকাতা, 8 জুলাই: নিজের পছন্দে বিয়ে করতে চাওয়ায় বাড়ির লোক তাকে খুন করতে পারে, এমনই আশঙ্কার কথা দিনকয়েক আগে আদালতকে জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতীতে পঠা রত এক তরুণী। ঘটনায় চরম বিস্মিত হাইকোর্ট। বিষয়টি আদতে 'অনার কিলিং' বা 'সম্মানরক্ষার অছিলায় খুন' বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের ৷ ওই তরুণী ইতিমধ্যেই তাঁর বাবার বাড়ি ত্যাগ করেছেন। এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বাবা।
বিচারপতি অমৃতা সিনহা গত 28 জুন পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়েটিকে কলকাতা হাইকোর্টের এজলাসে নিয়ে আসার। সেই মতো সোমবার পুলিশ তাঁকে হাইকোর্টে নিয়ে আসে। মেয়েটি এখনও পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে আপত্তি জানিয়েছে। এদিন বিচারপতি অমৃতা সিনহা ইলামবাজার থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনওভাবে যেন মেয়েটির ক্ষতি না-হয় সেটা দেখতে হবে । কোনও সমস্যায় পড়লে থানাকে আগে জানাতে হবে। পূর্ব নির্দেশমতো এদিন মেয়েটিকে পুলিশ এজলাসে হাজির করায়।
প্রসঙ্গত, মেয়েটির বাবা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তার মেয়ের বয়স মাত্র 19 ৷ মেয়ের প্রেমিকের বয়স 20 ৷ তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে । কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। আদালতে মামলা দায়ের করেন ওই পড়ুয়ার বাবা ৷
সেই মামালার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন সরকারি আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত আদালতে জানান, মেয়েটি বাবার বাড়িতে ফিরতে চায় না। তাঁর আশঙ্কা বাড়ি ফিরলে বাবা তাঁকে খুন করে ফেলবেন ৷ ইতিমধ্যেই প্রেমিকের বাড়ি গিয়ে তাঁর বাবা এবং অন্যান্যরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। প্রেমিককে বিবস্ত্র করে নৃশংসভাবে মারধর করার অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী ৷ তাই ওই তরুণীর আবেদন তাঁর বাবা-মা যাতে কোনওভাবে তার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে তাকে অত্যাচার করতে না-পারে সেই নির্দেশ দিক আদালত। বিচারপতি অমৃতা সিনহা সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়েটির যাতে কোনও ক্ষতি না-হয় তা দেখতে হবে।
ইলামবাজার থানার পুলিশের তরফে আদালতে জানানো হয়, মেয়েটি এবং তাঁর প্রেমিককে তারা থানায় ডেকেছিল। সেখানে তাঁরা লিখিতভাবে জানিয়েছে তাদের 21 বছর বয়স না-হওয়া পর্যন্ত তারা বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হবে না।