কলকাতা, 25 জুলাই: পরপর তিনদিন বিভিন্ন কারণে সকাল থেকে শুনানি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টে ৷ এদিকে মামলার পাহাড় জমছে ৷ বিরক্ত সাধারণ মানুষ থেকে বিচারপতিরা ৷ এমনভাবে কোর্ট বন্ধ করা নিয়ে বিস্ফোরক বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ৷
এজলাসে বসে ক্ষুব্ধ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে শোকের কর্মবিরতি হচ্ছে ৷ আমরা মাস্টারি করতে এখানে বসিনি ৷ এর দায় নিতে হবে আইনজীবীদেরই ৷ আগে সকাল থেকে বিকেল শুনানিতে অংশ নিন ৷ তারপর আপনাদের আবেদন শুনব ৷ শুনানির দিন বাড়ানোর আবেদন করার আপনাদের কোনও অধিকার নেই ৷ আমরা সার্ভিস দেওয়ার জন্য বসে আছি ৷ কিন্তু আপনারা নিতে চান না। সবকিছুর একটা পদ্ধতি মেনে হওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখানে সেটা হচ্ছে না। আইনের শাসনে এমনটা হয় না। সমাজের যে ক্ষতি হচ্ছে, সেটা আপনাদের বুঝতে হবে। ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে," মন্তব্য বিচারপতির। তাঁর মতোই বিরক্ত বহু বিচারপতি থেকে আইনজীবী।
আবার এদিন বিকেলেই খবর আসে মৃত্যু হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের ৷ তিনি রাজ্যের 21 জুলাই কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন ৷ ফলে আগামিকালও হাইকোর্টে সকালেই কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে ৷ সেক্ষেত্রে এক সপ্তাহে মোট চারদিন শুধু মৃত্যুর শোক জানাতে ও পুলিশের আইনজীবীকে মারের অভিযোগে মামলার শুনানি বন্ধ থাকবে হাইকোর্টে ৷
গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীকে পুলিশ হেনস্থা করেছে, মেরেছে এই অভিযোগে হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন কর্মবিরতির ডাক দেয়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানানো হয়, আগে ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে তারপর আইনজীবীরা শুনানির কাজে অংশগ্রহণ করবেন ৷ ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ৷ পরদিন মঙ্গলবার এক প্রাক্তন বিচারপতির মৃত্যুর কারণে সকালেই শুনানি বন্ধ করা হয় ৷
এদিন সকালে খবর আসে আইনজীবী সৌমিত্র মুখোপাধ্যায় হায়দারাবাদে চিকিৎসার জন্য গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৷ ফলে সকাল থেকে সমস্ত আদালতে শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। আগামিকাল ফের একই ব্যাপার হবে কি না, এখন সেদিকে তাকিয়ে সবাই। এনিয়েই এদিন এজলাসে বসে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী।