ETV Bharat / state

সীমান্তের মানুষেরা সজাগ হতেই চোরা চালানে ছেদ, দাবি বিএসএফের

স্থলবন্দর গেদেতে বিএসএফের 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেখা গিয়েছে আমূল পরিবর্তন।

SUCCESS OF BSF
সজাগ হতেই চোরা চালানে ছেদ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 9, 2024, 3:56 PM IST

নদিয়া, 9 নভেম্বর: সীমান্তের মানুষেরা সজাগ হতেই চোরা চালানে ছেদ, হয়েছে ধর্মের মিলনও ৷ এমনটাই দাবি বিএসএফ-এর ৷ আন্তর্জাতিক সীমান্ত শুনলে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে কাঁটাতার, বিবিধ নিষেধ, বিএসএফের বুটের শব্দ এবং গুলির আওয়াজ। কিন্তু এই সব কিছুকেই ভুল প্রমাণ করে নজির গড়ল নদিয়া জেলার আন্তর্জাতিক একমাত্র স্থলবন্দর গেদে ও তার আওতাভুক্ত সীমান্ত এলাকা।

গেদে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর হলেও এখানে বাংলাদেশে যাতায়াতকারী দুই দেশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না এতদিন। ফলে রোদ বৃষ্টিতে প্রচণ্ড কষ্ট করে বর্ডারে ঢোকা, বেরোনো এবং চেকিং করাতে হত। কিন্তু সেই স্থলবন্দর গেদেতে বিএসএফের 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেখা গিয়েছে আমূল পরিবর্তন। উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য মাথায় ছাউনি, বসার জায়গা, কোলড্রিংস, বিস্কুট এবং বিনামূল্যে ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সজাগ হতেই চোরা চালানে ছেদ (ইটিভি ভারত)

অন্যদিকে, গেদের পূর্ব দিকে বর্ডার থেকে সামনের দিকে রাস্তা ধরে এগিয়ে চললেই বাণপুর পার করেই পৌঁছে যাওয়া যায় টুঙ্গিতে। এই টুঙ্গি গ্রাম একসময় দুর্বৃত্তদের পাচারের আখড়া হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেখানে আজ বর্ডারের সাধারণ মহিলাদের সেলাইয়ের ট্রেনিং দিচ্ছে 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ জওয়ানরা। এছাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সামনেই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে পার্কের বন্দোবস্ত করেছে এই ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা।

মূলত মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলা ও বর্ডারের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোই উদ্দেশ্যে এই ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে তাঁরা। টাঙ্গির সীমান্তে গেলে দেখা যাবে প্রচুর মানুষ যেমন সীমান্ত দর্শন করতে যাচ্ছেন প্রতিদিন পাশাপাশি গ্রামের মানুষেরা শরীর চর্চা করছেন। এখানে এত মানুষের ভিড় হচ্ছে যার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও এখানে ব্যবসা করতে শুরু করেছেন। গেদে বর্ডারের পশ্চিম দিকে বেশকিছুটা এগিয়ে গেলেই কাদিপুর চেকপোস্ট চোখে পড়ে। এই চেকপোস্টের তরফ থেকে মহিলাদের সেলাই, ওপেন জিমের পাশাপাশি স্থানীয় মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্দেশে বেকারির খাবারের ট্রেনিং দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এক ফুড ক্যাফের ৷ যেখানে কম মূল্যে স্থানীয় মহিলাদের হাতের তৈরি জন্মদিনের কেক থেকে বার্গার ও পিৎজা সবই পাওয়া যাচ্ছে ৷

এছাড়া বর্ডারের তারকাটার ঘেরাটোপে স্থানীয়দের সাহায্যে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করা হচ্ছে, মৌমাছির মধু তৈরি এবং বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ-সহ নানা রকম মাছের চাষ। সীমান্তের কাঁটাতারে মধু চাষের ফলে একদিকে চোরা কারবারিরা তার কাছে আসতে সাহস পাচ্ছেন না মৌমাছির ভয়ে, অন্যদিকে এই মৌমাছি পালনে স্থানীয় মানুষদের মধু চাষ করে প্রচুর আয় হচ্ছে। এই কাদিপুর সীমান্ত থেকে আরেকটু এগিয়ে গেলেই চাপড়ার মলুয়াপাড়া বর্ডার চোখে পড়বে। যেখানে অধিকাংশ এলাকায় এখনো কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হয়নি। গ্রামবাসীদের বেশিরভাগ অংশই বাংলাদেশের দিকে ভারতের সীমান্তে বসবাস করেন। কিছুদিন আগে এই এলাকা ছিল চোরাকারবারীদের অন্যতম ঘাঁটি। কিন্তু 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সেই চিত্রে পরিবর্তন এসেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ওই এলাকার মহিলাদের ধূপকাঠি তৈরি ও প্যাকেজিং-এর ট্রেনিং দিয়ে তাদের হাতে মেশিনারি-সহ সমস্ত প্রকার কাঁচামাল তুলে দিয়েছেন বিএসএফ ক্যাম্পের জওয়ানরা। আর এই পন্থা অবলম্বন করে বিএসএফ সাফল্য পেয়েছে হাতেনাতে । বর্তমানে কোন অচেনা ব্যক্তি গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামের পুরুষ এবং মহিলারা সঙ্গে সঙ্গে বিএফ আধিকারিকদের জানিয়ে দেন। যার ফলে চোরা কারবারীরাও এখন চোরা পথের অবলম্বন করতে সাহস পাচ্ছে না।

নদিয়া, 9 নভেম্বর: সীমান্তের মানুষেরা সজাগ হতেই চোরা চালানে ছেদ, হয়েছে ধর্মের মিলনও ৷ এমনটাই দাবি বিএসএফ-এর ৷ আন্তর্জাতিক সীমান্ত শুনলে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে কাঁটাতার, বিবিধ নিষেধ, বিএসএফের বুটের শব্দ এবং গুলির আওয়াজ। কিন্তু এই সব কিছুকেই ভুল প্রমাণ করে নজির গড়ল নদিয়া জেলার আন্তর্জাতিক একমাত্র স্থলবন্দর গেদে ও তার আওতাভুক্ত সীমান্ত এলাকা।

গেদে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর হলেও এখানে বাংলাদেশে যাতায়াতকারী দুই দেশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না এতদিন। ফলে রোদ বৃষ্টিতে প্রচণ্ড কষ্ট করে বর্ডারে ঢোকা, বেরোনো এবং চেকিং করাতে হত। কিন্তু সেই স্থলবন্দর গেদেতে বিএসএফের 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেখা গিয়েছে আমূল পরিবর্তন। উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য মাথায় ছাউনি, বসার জায়গা, কোলড্রিংস, বিস্কুট এবং বিনামূল্যে ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সজাগ হতেই চোরা চালানে ছেদ (ইটিভি ভারত)

অন্যদিকে, গেদের পূর্ব দিকে বর্ডার থেকে সামনের দিকে রাস্তা ধরে এগিয়ে চললেই বাণপুর পার করেই পৌঁছে যাওয়া যায় টুঙ্গিতে। এই টুঙ্গি গ্রাম একসময় দুর্বৃত্তদের পাচারের আখড়া হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেখানে আজ বর্ডারের সাধারণ মহিলাদের সেলাইয়ের ট্রেনিং দিচ্ছে 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ জওয়ানরা। এছাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সামনেই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে পার্কের বন্দোবস্ত করেছে এই ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা।

মূলত মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলা ও বর্ডারের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোই উদ্দেশ্যে এই ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে তাঁরা। টাঙ্গির সীমান্তে গেলে দেখা যাবে প্রচুর মানুষ যেমন সীমান্ত দর্শন করতে যাচ্ছেন প্রতিদিন পাশাপাশি গ্রামের মানুষেরা শরীর চর্চা করছেন। এখানে এত মানুষের ভিড় হচ্ছে যার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও এখানে ব্যবসা করতে শুরু করেছেন। গেদে বর্ডারের পশ্চিম দিকে বেশকিছুটা এগিয়ে গেলেই কাদিপুর চেকপোস্ট চোখে পড়ে। এই চেকপোস্টের তরফ থেকে মহিলাদের সেলাই, ওপেন জিমের পাশাপাশি স্থানীয় মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্দেশে বেকারির খাবারের ট্রেনিং দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এক ফুড ক্যাফের ৷ যেখানে কম মূল্যে স্থানীয় মহিলাদের হাতের তৈরি জন্মদিনের কেক থেকে বার্গার ও পিৎজা সবই পাওয়া যাচ্ছে ৷

এছাড়া বর্ডারের তারকাটার ঘেরাটোপে স্থানীয়দের সাহায্যে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করা হচ্ছে, মৌমাছির মধু তৈরি এবং বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ-সহ নানা রকম মাছের চাষ। সীমান্তের কাঁটাতারে মধু চাষের ফলে একদিকে চোরা কারবারিরা তার কাছে আসতে সাহস পাচ্ছেন না মৌমাছির ভয়ে, অন্যদিকে এই মৌমাছি পালনে স্থানীয় মানুষদের মধু চাষ করে প্রচুর আয় হচ্ছে। এই কাদিপুর সীমান্ত থেকে আরেকটু এগিয়ে গেলেই চাপড়ার মলুয়াপাড়া বর্ডার চোখে পড়বে। যেখানে অধিকাংশ এলাকায় এখনো কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হয়নি। গ্রামবাসীদের বেশিরভাগ অংশই বাংলাদেশের দিকে ভারতের সীমান্তে বসবাস করেন। কিছুদিন আগে এই এলাকা ছিল চোরাকারবারীদের অন্যতম ঘাঁটি। কিন্তু 32 নম্বর ব্যাটেলিয়ান দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সেই চিত্রে পরিবর্তন এসেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ওই এলাকার মহিলাদের ধূপকাঠি তৈরি ও প্যাকেজিং-এর ট্রেনিং দিয়ে তাদের হাতে মেশিনারি-সহ সমস্ত প্রকার কাঁচামাল তুলে দিয়েছেন বিএসএফ ক্যাম্পের জওয়ানরা। আর এই পন্থা অবলম্বন করে বিএসএফ সাফল্য পেয়েছে হাতেনাতে । বর্তমানে কোন অচেনা ব্যক্তি গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামের পুরুষ এবং মহিলারা সঙ্গে সঙ্গে বিএফ আধিকারিকদের জানিয়ে দেন। যার ফলে চোরা কারবারীরাও এখন চোরা পথের অবলম্বন করতে সাহস পাচ্ছে না।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.