কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর: রাজ্য প্রশাসনের অংশ হিসেবে নিজেই নিজের দিকে আঙুল তোলা যায় না। বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে আরজি করের আন্দোলন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এভাবেই নিজের মত জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানেই সাংবাদিকদের তরফে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম পর্বে তাঁকে প্রতিবাদে পথে দেখা গিয়েছিল। বর্তমানে আরজি কর আবহে শিল্পী, চিকিৎসক থেকে রাজনৈতিক দলের কর্মীরা সকলেই নিজের মতো করে প্রতিবাদ করছেন। এই অবস্থায় তিনি কী ভাবছেন ? জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা দায়িত্ববান। সেই প্রতিটি প্রতিবাদের সঙ্গেই তাঁর স্বরও মিশে আছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "এই ঘটনা নিন্দনীয়। এর প্রতিবাদ আমিও করেছি। আমার মত অনেকেই করেছেন। তবে নন্দীগ্রাম বা সিঙ্গুরের সময় আমি পথে নেমেছিলাম। সে সময় আমার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। 2011 সাল থেকে আমার একটা রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আমি এই সরকারের অংশ। রাজনৈতিক অঙ্গনে থেকে আমরাও প্রতিবাদ করেছি। আমরাও প্রতিবাদে পথে নেমেছি।"
ব্রাত্য আরও বলেন, "সবাই প্রতিবাদ করলেই হবে না । সেই প্রতিবাদ শোনার জন্য লোক লাগে। এক্ষেত্রে আমরা শুনছি। কিছু লোককে তো শুনতে হবে, বুঝতে হবে। আইন তৈরি করতে হবে। যারা আন্দোলন করছে, তারা দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছেন। আমরা শোনার মাধ্যমে আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।" সরাসরি প্রতিবাদে কতটা সমর্থন আছে, এদিন এই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "যাঁরা প্রতিবাদ করছেন আমার স্বর তাঁদের সঙ্গে আছে। তবে প্রশাসনের অঙ্গ হয়ে প্রতিবাদ করা যায় না। আন্দোলনে অনেকেরই আঙুল প্রশাসনের দিকে উঠছে। আমি তো প্রশাসনের অংশ। আমি কী করে নিজেই নিজের দিকে আঙুল তুলব !"
একই সঙ্গে, যাঁরা পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাঁদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "যাঁরা পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাদের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। প্রত্যেকেরই স্বাধীন মত রয়েছে। কেউ তাঁর পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে যাঁর পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তিনি বামপন্থী নাট্যকার হিসেবে পরিচিত। এই আমলেই তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কার দেওয়ার আগে তিনি ডানপন্থী না বামপন্থী তা ভাবিনি আমরা। আজ তিনি পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আগামিদিনে দেশে এ ধরনের বড় কোনও ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পুরস্কার ফিরিয়ে দেবেন তো !"