নৈহাটি, 1 নভেম্বর: নৈহাটির বড়মা এবং তারাপীঠের মা তারা ৷ কালীপুজোর অমাবস্যার রাতে দুই দেবীর সাক্ষাতের বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত ৷ অমাবস্যা তিথি পড়তেই ভিডিয়ো কলে দুই মন্দিরের দেবীর সাক্ষাৎ করানো হল ৷
বিশালাকার মূর্তি ৷ তাঁর চোখে প্রখর তেজ ৷ আর রুপোর অলংকারে সজ্জিত নৈহাটির বড়মার দর্শন করতে প্রতিবছর কালীপুজোর দিন লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী ভিড় করেন ৷ কথিত আছে, বড়মার কাছে এই দিনে ভক্তি ভরে কিছু চাইলে, তা অবশ্য়ই পূরণ হয় ৷ তাই তাঁকে 'বড়মা' বলেই সবাই ডাকেন ৷ এ বছর নৈহাটির এই ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো 101 বছরে পদার্পণ করল ৷
এ দিন অমাবস্যা তিথি পড়তেই নৈহাটির বড়মার পুজো আয়োজনের কর্তৃপক্ষ ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ করে তারাপীঠের মা তারার মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ৷ ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে দুই মন্দিরের মা কালীর সাক্ষাৎ করানো হয় ৷ আর সেই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী রইলেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত ৷ ডিজিটাল যুগে এই উদ্যোগ বেশ চমকপ্রদও বটে ৷
তবে, এ নিয়ে নৈহাটির বড়মার পুজোর উদ্যোক্তা তথা নৈহাটি বড়কালি প্রসার সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, "নৈহাটির বড়মা এবং তারাপীঠের মা তারার মধ্যে কোনও তফাৎ নেই ৷ দুই মাকেই আমরা বড়মা বলি ৷ তাই অমাবস্যা লাগতেই দুই বড়মাকে সাক্ষাৎ করানো হয়েছে ৷ গত পুজোতেও ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে নৈহাটির বড়মা এবং তারাপীঠের মা তারার সাক্ষাৎ করানো হয়েছিল । তবে, বিষয়টি গতবার সেভাবে জনসমক্ষে আসেনি ৷"
নৈহাটির বড়মার অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল এ বছর ৷ এর জন্য বিশেষ 'জয় বড় মা' অ্যাপ চালু করা হয়েছে বড়কালি প্রসার সমিতির তরফে ৷ রাজ্য, দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা অনলাইনে পুজো দিয়েছেন ৷ অনলাইনে পুজো দেওয়ার সময়সীমা ছিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত ৷ মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার অনলাইনে পুজো দেওয়ার আবেদনের সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ ৷ যা উৎসাহিত করেছে মন্দির কমিটিকে ৷
উল্লেখ্য, প্রতিবছর নৈহাটির বড়মার পুজো শুরু না-হলে, সেখানকার অন্য কোনও কালীপুজো শুরু হয় না ৷ সেই রীতি এবারেও পালন করা হয়েছে ৷ রাত 11টা বাজতেই রীতি মেনে সবার আগে শুরু হয় নৈহাটির বড়মার পুজো ৷ অন্যান্যবারের মতো, বড়মার মন্দিরের ভিতরে থাকা মূর্তিকে 100 ভরি সোনার গয়না দিয়ে সাজানো হয়েছে ৷ আর মণ্ডপে থাকা বড়মার বিশাল মূর্তি 200 ভরি রুপোর গয়না দিয়ে সাজানো হয়েছিল ৷
প্রতিবারের মতো এবারেও তিল ধারণের জায়গা ছিল না নৈহাটির স্টেশন রোড সংলগ্ন অরবিন্দ রোডে ৷ রাত 1টায় অঞ্জলি দেওয়ার সময় গোটা অরবিন্দ রোড চলে যায় ভক্তদের দখলে ৷ যদিও, ভিড় উপচে পড়ে পুজোর আগের দিন, বুধবার দুপুর থেকেই ৷ গতবছর রাত আড়াইটে থেকে শুরু হয়েছিল দণ্ডি কাটা ৷ এবছর সেখানে বুধবার রাত সাড়ে দশটা থেকে দণ্ডি কাটা শুরু হয়ে যায় ৷