কাশীপুর, 9 জুন: বাংলাদেশি সাংসদ খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সিয়ামকে গ্রেফতার করার পরই রবিবার বাগজোলা খাল এলাকায় তল্লাশি চালালো সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী আধিকারিকরা। আর সেই খাল থেকেই উদ্ধার হল একাধিক হাড়গোড় ৷ প্রাথমিকভাবে তদন্তকারী আধিকারিকদের অনুমান, এই হাড় আদতে বাংলাদেশের সাংসদ আনওয়ারুল আজিমের ৷
ডিএমজি'র সদস্য এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে এদিন সিআইডির তদন্তকারী সদস্যরা বাগজোলা খালের কৃষ্ণমাটি এলাকায় আসেন। এলাকা শনাক্তকরণের পরেই ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বাংলাদেশের সাংসদ আনওয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় ধৃত মহম্মদ সিয়াম হোসেনকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বাগজোলা খাল থেকে হাড়গোড় উদ্ধার করল সিআইডি।
রবিবার সকালে সিয়ামকে নিয়ে ভাঙড় এলাকায় পৌঁছে বাগজোলা খালে নামেন সিআইডি আধিকারিকেরা । সেখান থেকে উদ্ধার হয় হাড়গোড় । তবে, সেই হাড় বাংলাদেশের সাংসদেরই কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরই তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব বলে মনে করছে সিআইডি ৷ সূত্রের খবর, একটি ঝোপের পাশ থেকে হাড়গোড়গুলি উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশের সাংসদ খুনে বড় সূত্র পেতে চলেছে সিআইডি। এদিন সকালে সিয়ামকে নিয়ে ভাঙড়ের পোলেরহাট থানা এলাকার কৃষ্ণমাটিতে বাগজোলা খালে নামে সিআইডি। তল্লাশির পর একটি ঝোপের পাশ থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয় বলে খবর। হাড়গুলি প্রাথমিকভাবে দেখে অনুমান, সেগুলি মানুষেরই। যদিও তা আনওয়ারুল আজিমেরই কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রসঙ্গত, নিউটাউনের অভিজাত আবাসনে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে কিলো পাঁচেক ছোট ছোট মাংসের টুকরো উদ্ধার করেছিল সিআইডি। সেই মাংস আনোয়ারুলেরই কি না, তা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। এবার হাড়গুলিও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর । হাড়গুলি যদি সত্যিই বাংলাদেশের সাংসদের হয় তা হলে সেটা হবে এই মামলায় সিআইডি তদন্তে বড় অগ্রগতি। হাড়গুলি সত্যিই বাংলাদেশের সাংসদের কি না তা ফরেন্সিক পরীক্ষার পরই জানা যাবে। এর জন্য ডিএনএ প্রোফাইলও করতে পারে বলে খবর ৷ সে জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে হবে আনোয়ারুলের রক্তের সম্পর্কিত কারও থেকে । সিআইডি সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরো বা হাড়ের ডিএনএ প্রোফাইল করতে আনোয়ারুলের কন্যাকে বাংলাদেশে তলব পাঠানো হয়েছে । তিনি এসে নমুনা দেবেন বিশেষজ্ঞদের।
শনিবার সিয়ামকে বারাসত আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে 14 দিন পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন । তারপর রবিবার সকালেই সিয়ামকে নিয়ে কৃষ্ণমাটিতে পৌঁছে গেলেন সিআইডি আধিকারিকেরা। সিআইডি সূত্রে খবর, গত 13 মে আনোয়ারুলকে খুনের পরে নিউটাউনের অভিজাত আবাসন থেকে সাংসদের দেহের অংশ ট্রলি সুটকেসে পুরে কৃষ্ণমাটিতে বাগজোলা খালে ফেলে দিয়েছিল সিয়াম । সঙ্গে ছিল খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জিহাদ হাওলাদার । জিহাদকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সিআইডি । খালে দেহ ফেলে আবার নিউটাউনের অভিজাত আবাসনেই ফিরে এসেছিল সিয়াম বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা । গত 16 মে বিহার হয়ে নেপালে পালিয়ে যায় সিয়াম। ঘটনাস্থলে সংবাদমাধ্যমে কর্মীরা পৌঁছালে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের বাধা দেওয়া হয়।