ইসলামপুর, 17 জুলাই: তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ ৷ ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইসলামপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার গভীর রাতে ৷ প্রশ্নের মুখে খোদ পুলিশ প্রশাসন ৷
গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা লাকি পারভিন বলেন, "আমি বাড়িতে ছিলাম না সেই সময় আমার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয় ৷ সেসময় স্বামী জানলার ধারেই ছিলেন ৷ বোমাগুলি ঘরে পড়লে আমার স্বামী আহত হতেন ৷ আমি একজন পঞ্চায়েত সদস্যা অথচ আমার কোনও নিরাপত্তা নেই ৷ আমার বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা করা হল প্রশাসন কী করছে ? রাজনৈতিক কারণেই কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে ৷ প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলব ৷"
যদিও গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ । এই ঘটনায় ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস ফোনে জানিয়েছেন, "গোবিন্দপুর এলাকায় রবিবার রাতে পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়ি লক্ষ্য করে কেউ বোমা ছুড়েছে । পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছে । ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে । তবে আমরা এখনও এই ব্যাপারে লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি ।"
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই ইসলামপুর থানা এলাকার শ্রীকৃষ্ণপুরে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার স্বামী বাপি রায়ের গুলির আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ৷ তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ । পরপর এই ধরনের ঘটনায় আতঙ্কিত শাসকদলের কর্মী সমর্থকেরা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ।
অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে চোপড়া বিধানসভা ও ইসলামপুর থানার অন্তর্গত গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা লাকি পারভিনের বাড়িতে একাধিক বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা । ঘটনায় কোনওরকমে প্রাণে বাঁচেন পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ফারিয়াদ আলম । ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই সেখানে আসে পুলিশ ।
তৃণমূল নেতা ওরফে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ফারিয়াদ আলমের কথায়, "আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম ৷ সেসময় জানলা খোলা ছিল ৷ জানলার 2 ইঞ্চি দূরেই দুটি বোমা ছোড়া হয় ৷ বাড়ি পুরো ধোয়ায় ভরে যায় ৷ বোমার খোলও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ৷ কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বুঝতে পারছি না ৷ আমাদের সঙ্গে কারোর শত্রুতা নেই ৷"
উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে চোপড়া বিধানসভার অধীন এই গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসকের কোন্দল এতটাই ব্যাপক ছিল যে এখানে কাউকে তৃণমূলের টিকিট দেওয়া হয়নি । সবাই লড়াই করেছিলেন নির্দল হয়ে । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের অনুগামী ও চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের অনুগামীরা এখানে নির্দল হিসাবে লড়াই করেছিলেন । আর এতে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে ওই পঞ্চায়েত দখল করে কানাইয়ালালের অনুগামীরা । পরপর ইসলামপুরে শাসকদলের নেতা নেত্রীদের উপর হামলার ঘটনায় ফের একবার গোষ্ঠীকোন্দলের তত্ত্ব খাড়া হয়েছে ৷