ব্যারাকপুর, 28 জানুয়ারি: জনবহুল এলাকায় একের পর এক বোমা ছুড়ে পালাল দুষ্কৃতীরা ৷ বোমাবাজিতে আহত হয়েছেন দু'জন ৷ বোমার আঘাতে একজনের হাত উড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ রবিবার দুপুরের এমনই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার কাঁচড়াপাড়ার মণ্ডল বাজার এলাকায় ৷ সূত্রের খবর, আহত দু'জনেই স্থানীয় একটি স্ক্র্যাপের গোডাউনের কাজ করেন ৷ ঘটনার সময় তাঁরা দোকানের সামনে বসে কাজ করছিলেন ৷ তখনই দোকান লক্ষ্য করে পরপর তিনটি বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ৷
এই ঘটনায় দু’টি বোমা ফাটলেও অপরটি দোকানের পাশের নর্দমায় পড়ে যায় ৷ পরে পুলিশ এসে সেই বোমাটি উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে ৷ গুরুতর আহত অবস্থায় আহতদের কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ সেখানেই আপাতত চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা ৷ তবে, কী কারণে ও কারা এই বোমাবাজির ঘটনায় জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে বীজপুর থানার পুলিশ ৷
কাঁচরাপাড়ার সুবোধ রায় সরণিতে একচিলতে ঘরে দীর্ঘদিন ধরে স্ক্র্যাপের ব্যবসা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা মধু রায় ৷ এটি তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা ৷ তিনি না থাকলে মাঝেমধ্যে ব্যবসার কাজ সামলান তাঁর বিবাহিতা মেয়ে অনিতা কৈরী এবং ছেলে চন্দন রায় ৷ এদিন দুপুরের দিকে দোকানের ঠিক পাশে বসে ক্যানসার আক্রান্ত মাকে ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন অনিতা ৷ তখনই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা ৷ আতঙ্কে মাকে নিয়ে তড়িঘড়ি বাড়িতে ঢুকে যান তিনি ৷ পরে, বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন সেখানে ৷
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাঁরা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে দু'জনকে পড়ে থাকতে দেখেন ৷ তাঁদের মধ্যে একজনের হাত আলাদা হয়ে পাশে পড়েছিল ৷ সেই দৃশ্য দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা ৷ একাংশের দাবি, "একটি টোটোতে করে আততায়ীরা এসেছিল ৷ এরপর গোডাউন লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি বোমা ছুড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷"
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলের কাছেই রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৷ ছুটির দিন হওয়ায় স্কুল বন্ধ ছিল ৷ তা না হলে, ঘটনাস্থল দিয়ে ওই সময় রোজ পড়ুয়ারা যাতায়াত করে ৷ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর শর্মিষ্ঠা মজুমদার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, অন্য কোনও দিনে এমন ঘটনা ঘটলে, বড় অঘটনও ঘটতে পারত ৷
এদিকে, ঘটনার পর অনিতা কৈরী বলেন, "গোডাউনের ঠিক পাশে বসে ক্যানসার আক্রান্ত মাকে ওষুধ খাওয়াচ্ছিলাম ৷ তখনই ঘটে এমন ঘটনা ৷ আতঙ্কে কোনওক্রমে মাকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে যাই ৷ দুষ্কৃতীদের ঠিকভাবে দেখতে পায়নি ৷ কী কারণে এভাবে বোমাবাজি করা হল, তা বুঝেই উঠতে পারছি না ।"
এই বিষয়ে অনিতার ভাই চন্দন রায় বলেন, "স্ত্রী'র কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি, দুষ্কৃতীরা দোকান লক্ষ্য তিনটি বোমা ছুঁড়ে পালিয়েছে ৷ তাতে দোকানের দুই কর্মচারী গুরুতর আহত হয়েছেন ৷ কারও সঙ্গে আমাদের কোনও গণ্ডগোল কিংবা শত্রুতা নেই ৷ উলটে লোকের বিপদআপদে পাশে দাঁড়িয়েছি ৷ তা সত্বেও কেন এই ঘটনা বলতে পারব না ।" ঘটনার নিন্দা করেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং ৷ পুলিশ হামলাকারী দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতার করবে বলে আশাবাদী তিনি ৷
আরও পড়ুন: