ETV Bharat / state

তৃণমূলের সুমন কাঞ্জিলালের নাম কেন তাদের বক্তা তালিকায় ? দ্বিতীয়ার্ধেও ওয়াক আউট বিজেপি'র - BJP stages walkout

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 29, 2024, 3:41 PM IST

Updated : Jul 29, 2024, 7:10 PM IST

BJP stages walkout: তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুমন কাঞ্জিলালের নাম কেন বিজেপির বক্তা তালিকায় ? এই প্রশ্নে উত্তাল হল বিধানসভার দ্বিতীয়ার্ধ ৷ এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ৷ এবিষয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর যুক্তি দেওয়ায় তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা ৷ তাঁদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন ৷

ETV BHARAT
বিধানসভার দ্বিতীয়ার্ধেও ওয়াক আউট বিজেপি'র (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 29 জুলাই: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের পরেও আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামের পাশে বিজেপি কেন লেখা হয়েছে ? এই প্রশ্ন তুলে বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধেও ওয়াক আউট করল বিজেপি । বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পক্ষপাতদুষ্ট বলে তাদের অভিযোগ ৷ যদিও উত্তরবঙ্গের সংকটের কথা বলতে বাধা দেওয়ায় বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন সুমন কাঞ্জিলাল ৷

সুমন কাঞ্জিলালকে নিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির (নিজস্ব চিত্র)

সোমবার বিধানসভার প্রথমার্ধ ছিল নীতি আয়োগ ইস্যুতে উত্তাল ৷ এরপর দ্বিতীয়ার্ধে আলোচনার শুরুতেই সুমন কাঞ্জিলালের বিষয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ । সুমন কাঞ্জিলালের নাম তাঁদের বক্তা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান তিনি ।

শঙ্কর ঘোষ বলেন, "ইতিমধ্যেই সুমন কাঞ্জিলাল দলত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন । অথচ বিধানসভার মধ্যে তাঁকে বিজেপি বিধায়ক হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হয় । আমাদের তরফ থেকে তাঁর নাম বক্তা তালিকায় না-দেওয়া হলেও তিনি ভুটান পাহাড় থেকে আসা নদীগুলিতে পর্যবেক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আনা প্রস্তাবে বক্তা হলেন ।"

কিন্তু অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, "সুমন কাঞ্জিলাল ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে এই প্রস্তাবে বক্তব্য রাখার জন্য আবেদন করেছিলেন । এক্ষেত্রে আমি তাঁকে অনুমোদন দিয়েছি । অতএব তিনি বক্তব্য রাখতে পারবেন ।" অধ্যক্ষ আরও বলেন, "এই প্রস্তাবের প্রস্তাবকের তালিকতেই সুমন কাঞ্জিলালের নাম ছিল । অতএব এই প্রস্তাবে তিনি যে বলবেন, তা সকলেরই জানা ছিল । আগের দিন বক্তব্য রাখার পর, আজকে এই বিষয়টি নিয়ে বিরোধিতা অর্থহীন ।"

তবে অধ্যক্ষের কথা মানতে চাননি বিজেপি বিধায়করা ৷ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন যে, "বিজেপি পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে তো সুমন কাঞ্জিলালের নাম দেওয়া হয়নি । অধ্যক্ষ যেভাবে বিধানসভা চালাচ্ছেন তা অসংসদীয় । এই ধরনের রাজনৈতিক দ্বিচারিতা এর আগে কখনও দেখা যায়নি । তাই এই আলোচনা বয়কট করল বিজেপি ।"

এরপর বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভা কক্ষ থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন । আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল প্রশ্ন তোলেন, "সুমন কাঞ্জিলাল কবে থেকে বিজেপি হলেন ? তিনি একসময় বিজেপিতে ছিলেন । তিনি টিএমসিতে যোগ দেবেন, টিএমসির বেঞ্চে বসবেন, টিএমসির হয়ে ভোট দেবেন, আর বক্তব্য রাখার সময় তাঁর নামের পাশে বিজেপির নাম লেখা হবে ?" এই প্রশ্ন তুলে বিধানসভার অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ করেন অগ্নিমিত্রা ৷ তাঁর কথায়, "দ্বিচারিতা চলবে না এবং বিজেপি এই দ্বিচারিতা মানবে না ।"

যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে সুমন কাঞ্জিলাল বলেন যে, "ডুয়ার্সের সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্যায় ভুগছেন, আজ বিধানসভায় সেই কথা বলতে বাধা দেওয়া হয় এবং এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক । সাংবিধানিক জটিলতা দেখিয়ে সেই কথা বলতে না দেওয়া খুবই দুর্ভাগ্যের ।" তাহলে তিনি কি বর্তমানে বিজেপিতে নাকি তৃণমূলের বিধায়ক ? এই প্রশ্নের জবাবে সুমন বলেন, "আমি মানুষের দলে আছি । আজ আমি ডুয়ার্সের যে অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে সেটা নিয়েই বলেছি । সেটায় বাধা দেওয়া হয় । এর থেকে পরিষ্কার যে, উত্তরবঙ্গ ভাগকেই তাহলে বিজেপি সমর্থন করছে ।"

বিজেপিকে কটাক্ষ করে সুমন বলেন, "আজ বিজেপি বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেল ৷ গত 26 জুলাই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে তারা বিরোধিতা করবে । কিন্তু আদতে এই বিরোধিতায় তাদের মুখ পুড়বে এবং বুমেরাং হয়ে দেখা দেবে । উত্তরবঙ্গের মানুষ বুঝতে পারবেন যে বিজেপি উত্তরবঙ্গকে জল যন্ত্রণা থেকে বের করার বিষয়ে বিরোধিতা করছে । তাই মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছল যে, তারা দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধির ভূমিকা পালন করছে না ।" এদিন বিরোধিতা না-করে সবাই মিলে একটা প্রতিনিধি দল গঠন করে দিল্লি গিয়ে বিষয়টি আলোচনা করা উচিত ছিল বলে মত সুমন কাঞ্জিলালের ৷

কলকাতা, 29 জুলাই: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের পরেও আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামের পাশে বিজেপি কেন লেখা হয়েছে ? এই প্রশ্ন তুলে বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধেও ওয়াক আউট করল বিজেপি । বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পক্ষপাতদুষ্ট বলে তাদের অভিযোগ ৷ যদিও উত্তরবঙ্গের সংকটের কথা বলতে বাধা দেওয়ায় বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন সুমন কাঞ্জিলাল ৷

সুমন কাঞ্জিলালকে নিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির (নিজস্ব চিত্র)

সোমবার বিধানসভার প্রথমার্ধ ছিল নীতি আয়োগ ইস্যুতে উত্তাল ৷ এরপর দ্বিতীয়ার্ধে আলোচনার শুরুতেই সুমন কাঞ্জিলালের বিষয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ । সুমন কাঞ্জিলালের নাম তাঁদের বক্তা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান তিনি ।

শঙ্কর ঘোষ বলেন, "ইতিমধ্যেই সুমন কাঞ্জিলাল দলত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন । অথচ বিধানসভার মধ্যে তাঁকে বিজেপি বিধায়ক হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হয় । আমাদের তরফ থেকে তাঁর নাম বক্তা তালিকায় না-দেওয়া হলেও তিনি ভুটান পাহাড় থেকে আসা নদীগুলিতে পর্যবেক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আনা প্রস্তাবে বক্তা হলেন ।"

কিন্তু অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, "সুমন কাঞ্জিলাল ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে এই প্রস্তাবে বক্তব্য রাখার জন্য আবেদন করেছিলেন । এক্ষেত্রে আমি তাঁকে অনুমোদন দিয়েছি । অতএব তিনি বক্তব্য রাখতে পারবেন ।" অধ্যক্ষ আরও বলেন, "এই প্রস্তাবের প্রস্তাবকের তালিকতেই সুমন কাঞ্জিলালের নাম ছিল । অতএব এই প্রস্তাবে তিনি যে বলবেন, তা সকলেরই জানা ছিল । আগের দিন বক্তব্য রাখার পর, আজকে এই বিষয়টি নিয়ে বিরোধিতা অর্থহীন ।"

তবে অধ্যক্ষের কথা মানতে চাননি বিজেপি বিধায়করা ৷ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন যে, "বিজেপি পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে তো সুমন কাঞ্জিলালের নাম দেওয়া হয়নি । অধ্যক্ষ যেভাবে বিধানসভা চালাচ্ছেন তা অসংসদীয় । এই ধরনের রাজনৈতিক দ্বিচারিতা এর আগে কখনও দেখা যায়নি । তাই এই আলোচনা বয়কট করল বিজেপি ।"

এরপর বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভা কক্ষ থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন । আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল প্রশ্ন তোলেন, "সুমন কাঞ্জিলাল কবে থেকে বিজেপি হলেন ? তিনি একসময় বিজেপিতে ছিলেন । তিনি টিএমসিতে যোগ দেবেন, টিএমসির বেঞ্চে বসবেন, টিএমসির হয়ে ভোট দেবেন, আর বক্তব্য রাখার সময় তাঁর নামের পাশে বিজেপির নাম লেখা হবে ?" এই প্রশ্ন তুলে বিধানসভার অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ করেন অগ্নিমিত্রা ৷ তাঁর কথায়, "দ্বিচারিতা চলবে না এবং বিজেপি এই দ্বিচারিতা মানবে না ।"

যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে সুমন কাঞ্জিলাল বলেন যে, "ডুয়ার্সের সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্যায় ভুগছেন, আজ বিধানসভায় সেই কথা বলতে বাধা দেওয়া হয় এবং এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক । সাংবিধানিক জটিলতা দেখিয়ে সেই কথা বলতে না দেওয়া খুবই দুর্ভাগ্যের ।" তাহলে তিনি কি বর্তমানে বিজেপিতে নাকি তৃণমূলের বিধায়ক ? এই প্রশ্নের জবাবে সুমন বলেন, "আমি মানুষের দলে আছি । আজ আমি ডুয়ার্সের যে অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে সেটা নিয়েই বলেছি । সেটায় বাধা দেওয়া হয় । এর থেকে পরিষ্কার যে, উত্তরবঙ্গ ভাগকেই তাহলে বিজেপি সমর্থন করছে ।"

বিজেপিকে কটাক্ষ করে সুমন বলেন, "আজ বিজেপি বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেল ৷ গত 26 জুলাই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে তারা বিরোধিতা করবে । কিন্তু আদতে এই বিরোধিতায় তাদের মুখ পুড়বে এবং বুমেরাং হয়ে দেখা দেবে । উত্তরবঙ্গের মানুষ বুঝতে পারবেন যে বিজেপি উত্তরবঙ্গকে জল যন্ত্রণা থেকে বের করার বিষয়ে বিরোধিতা করছে । তাই মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছল যে, তারা দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধির ভূমিকা পালন করছে না ।" এদিন বিরোধিতা না-করে সবাই মিলে একটা প্রতিনিধি দল গঠন করে দিল্লি গিয়ে বিষয়টি আলোচনা করা উচিত ছিল বলে মত সুমন কাঞ্জিলালের ৷

Last Updated : Jul 29, 2024, 7:10 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.