ETV Bharat / state

উত্তরবঙ্গের পুলিশ-সরকারি কর্মীদের বড় অংশের ভোট বিজেপিতে, বলছে পোস্টাল ব্যালটের হিসেব - POSTAL VOTES IN NORTH BENGAL - POSTAL VOTES IN NORTH BENGAL

Postal Votes in North Bengal: ঘাসফুল থেকে মুখ ফিরিয়েছেন উত্তরবঙ্গের সরকারি কর্মীরা ৷ রাজ্য পুলিশেরও একটা বড় অংশের ভোট গিয়েছে বিজেপিতে ৷ এমনটাই বলছে পোস্টাল ভোটের হিসাব ৷

Postal Votes
হিসাব পোস্টাল ভোটে (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 6, 2024, 6:20 PM IST

মালদা, 6 জুন: রাজ্য সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন সরকারি কর্মীরা ৷ অন্তত উত্তরবঙ্গেজুড়ে তেমনই ছবি ধরা পড়েছে ৷ বিষয়টি নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়তে বাধ্য রাজ্যের শাসকদলের ৷ কেন এই ছবি ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালদা জেলার একাধিক সরকারি কর্মী জানিয়েছেন, এমনটা নাকি হওয়ারই ছিল ৷ পাহাড় থেকে গঙ্গা অববাহিকা ৷ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গোটা উত্তরবঙ্গেই পোস্টাল ব্যালটের ভোট মূলত বিজেপির দিকে গিয়েছে ৷ দার্জিলিং কেন্দ্রের মধ্যে কালিম্পং, দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও চোপড়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটিতেই দেখা যাচ্ছে, পোস্টাল ব্যালটের ভোটে এগিয়ে পদ্মপ্রার্থী ৷

এই লোকসভা কেন্দ্রে বৈধ 7 হাজার 620টি পোস্টাল ভোটের মধ্যে রাজু বিস্তা পেয়েছেন 4 হাজার ভোট ৷ গোপাল লামা ও মুনীশ তামাং পেয়েছেন যথাক্রমে 2017 ও 777 টি ভোট ৷ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে 6 হাজার 353 টি বৈধ পোস্টাল ভোটের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে 3 হাজার 332 ভোট ৷ তৃণমূল পেয়েছে 2 হাজার 379 ভোট ৷ অর্থাৎ এখানেও সরকারি কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী জয়ন্তকুমার রায় ৷ আলিপুরদুয়ারেও সরকারি কর্মীদের ভোটে তৃণমূলকে পিছনে ফেলেছে বিজেপি ৷ এখানে মোট 6 হাজার 729 টি বৈধ ভোটের মধ্যে বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্‌গা পেয়েছেন 3 হাজার 781 ভোট ৷ তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বড়াইক পেয়েছেন 2 হাজার 381 টি ৷

এবারের নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একমাত্র কোচবিহার আসনটি নিজেদের দখলে আনতে পেরেছে রাজ্যের শাসকদল ৷ তবে অদ্ভূত বিষয়, এই আসনেও পোস্টাল ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির নিশীথ প্রামাণিকের থেকে পিছিয়ে রয়েছেন ৷ বিজয়ী জগদীশ যেখানে 2 হাজার 628 টি পোস্টাল ভোট পেয়েছেন, সেখানে নিশীথ পেয়েছেন 3 হাজার 981টি ৷ অন্যদিকে, উত্তরের সমতলের জেলাগুলির মধ্যে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দিকে এবার নজর ছিল সবার ৷ কারণ, এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর বিপক্ষে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল ৷ এখানে সুকান্ত পেয়েছেন 2 হাজার 71টি পোস্টাল ভোট, বিপ্লব পেয়েছেন 1 হাজার 358 ভোট ৷ রায়গঞ্জ কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছে 2 হাজার 253 টি ভোট ৷ তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে 1 হাজার 550 টি ৷ মালদা উত্তর কেন্দ্রে 3 হাজার 769 টি বৈধ পোস্টাল ভোটের মধ্যে বিজেপির খগেন মুর্মু পেয়েছেন 1 হাজার 914 টি, তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায় পেয়েছেন 1 হাজার 81 টি ভোট ৷

মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রের পোস্টাল ভোটের হিসাবটা একটু আলাদা ৷ এই কেন্দ্রে জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি ৷ তৃতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল ৷ মোট 5 হাজার 237 টি পোস্টাল ভোটের বেশিরভাগ গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে ৷ তারা পেয়েছে 2 হাজার 496টি, কংগ্রেস পেয়েছে 1 হাজার 429টি এবং তৃণমূল পেয়েছে মাত্র 1 হাজার 201টি ভোট ৷ যদি পোস্টাল ভোটের ফলাফল সরকারি কর্মীদের রাজনৈতিক অবস্থানের মাপকাঠি হয়, তবে একথা বলা যেতেই পারে, গোটা উত্তরবঙ্গে সরকারি কর্মীদের পছন্দের প্রথমে বিজেপি ৷ মালদা জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “এর মূল কারণই ডিএ ৷ গোটা দেশের সরকারি কর্মীদের তুলনায় আমরা সবচেয়ে কম ডিএ পাই ৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকার শুধু নানা আছিলায় ছুটি বাড়িয়ে সরকারি কর্মীদের মন পেতে চায় ৷ কিন্তু সরকারি কর্মীরা ছুটি চান না ৷ তাঁরা কাজ করতে চান ৷ নিজেদের হকের টাকাও চান ৷ যতদিন না আমাদের মহার্ঘভাতা অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সমান্তরাল রেখায় যাচ্ছে, ততদিন পোস্টাল ব্যালটে ঘাসফুল পিছিয়েই থাকবে ৷”

প্রায় একই বক্তব্য জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের ৷ তিনি বলছেন, “শুধু মহার্ঘভাতা নয়, আমাদের সমস্যা আরও বেশি ৷ দীর্ঘদিন ধরে পুলিশে প্রচুর পদ ফাঁকা ৷ অফিসার নিয়োগ হচ্ছে না ৷ ফলে একজন আধিকারিককে দিনরাত কাজ করে যেতে হচ্ছে ৷ তিনি বিশেষ প্রয়োজনেও ছুটি পাচ্ছেন না ৷ অথচ তাঁরও পরিবার রয়েছে, শরীর রয়েছে ৷ কর্তারা সেসব দেখতে চান না ৷ এসব কারণেই পুলিশের সিংহভাগ এবার বিজেপিকে সমর্থন করেছে ৷”

মালদা, 6 জুন: রাজ্য সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন সরকারি কর্মীরা ৷ অন্তত উত্তরবঙ্গেজুড়ে তেমনই ছবি ধরা পড়েছে ৷ বিষয়টি নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়তে বাধ্য রাজ্যের শাসকদলের ৷ কেন এই ছবি ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালদা জেলার একাধিক সরকারি কর্মী জানিয়েছেন, এমনটা নাকি হওয়ারই ছিল ৷ পাহাড় থেকে গঙ্গা অববাহিকা ৷ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গোটা উত্তরবঙ্গেই পোস্টাল ব্যালটের ভোট মূলত বিজেপির দিকে গিয়েছে ৷ দার্জিলিং কেন্দ্রের মধ্যে কালিম্পং, দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও চোপড়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটিতেই দেখা যাচ্ছে, পোস্টাল ব্যালটের ভোটে এগিয়ে পদ্মপ্রার্থী ৷

এই লোকসভা কেন্দ্রে বৈধ 7 হাজার 620টি পোস্টাল ভোটের মধ্যে রাজু বিস্তা পেয়েছেন 4 হাজার ভোট ৷ গোপাল লামা ও মুনীশ তামাং পেয়েছেন যথাক্রমে 2017 ও 777 টি ভোট ৷ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে 6 হাজার 353 টি বৈধ পোস্টাল ভোটের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে 3 হাজার 332 ভোট ৷ তৃণমূল পেয়েছে 2 হাজার 379 ভোট ৷ অর্থাৎ এখানেও সরকারি কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী জয়ন্তকুমার রায় ৷ আলিপুরদুয়ারেও সরকারি কর্মীদের ভোটে তৃণমূলকে পিছনে ফেলেছে বিজেপি ৷ এখানে মোট 6 হাজার 729 টি বৈধ ভোটের মধ্যে বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্‌গা পেয়েছেন 3 হাজার 781 ভোট ৷ তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বড়াইক পেয়েছেন 2 হাজার 381 টি ৷

এবারের নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একমাত্র কোচবিহার আসনটি নিজেদের দখলে আনতে পেরেছে রাজ্যের শাসকদল ৷ তবে অদ্ভূত বিষয়, এই আসনেও পোস্টাল ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির নিশীথ প্রামাণিকের থেকে পিছিয়ে রয়েছেন ৷ বিজয়ী জগদীশ যেখানে 2 হাজার 628 টি পোস্টাল ভোট পেয়েছেন, সেখানে নিশীথ পেয়েছেন 3 হাজার 981টি ৷ অন্যদিকে, উত্তরের সমতলের জেলাগুলির মধ্যে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দিকে এবার নজর ছিল সবার ৷ কারণ, এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর বিপক্ষে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল ৷ এখানে সুকান্ত পেয়েছেন 2 হাজার 71টি পোস্টাল ভোট, বিপ্লব পেয়েছেন 1 হাজার 358 ভোট ৷ রায়গঞ্জ কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছে 2 হাজার 253 টি ভোট ৷ তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে 1 হাজার 550 টি ৷ মালদা উত্তর কেন্দ্রে 3 হাজার 769 টি বৈধ পোস্টাল ভোটের মধ্যে বিজেপির খগেন মুর্মু পেয়েছেন 1 হাজার 914 টি, তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায় পেয়েছেন 1 হাজার 81 টি ভোট ৷

মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রের পোস্টাল ভোটের হিসাবটা একটু আলাদা ৷ এই কেন্দ্রে জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি ৷ তৃতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল ৷ মোট 5 হাজার 237 টি পোস্টাল ভোটের বেশিরভাগ গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে ৷ তারা পেয়েছে 2 হাজার 496টি, কংগ্রেস পেয়েছে 1 হাজার 429টি এবং তৃণমূল পেয়েছে মাত্র 1 হাজার 201টি ভোট ৷ যদি পোস্টাল ভোটের ফলাফল সরকারি কর্মীদের রাজনৈতিক অবস্থানের মাপকাঠি হয়, তবে একথা বলা যেতেই পারে, গোটা উত্তরবঙ্গে সরকারি কর্মীদের পছন্দের প্রথমে বিজেপি ৷ মালদা জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “এর মূল কারণই ডিএ ৷ গোটা দেশের সরকারি কর্মীদের তুলনায় আমরা সবচেয়ে কম ডিএ পাই ৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকার শুধু নানা আছিলায় ছুটি বাড়িয়ে সরকারি কর্মীদের মন পেতে চায় ৷ কিন্তু সরকারি কর্মীরা ছুটি চান না ৷ তাঁরা কাজ করতে চান ৷ নিজেদের হকের টাকাও চান ৷ যতদিন না আমাদের মহার্ঘভাতা অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সমান্তরাল রেখায় যাচ্ছে, ততদিন পোস্টাল ব্যালটে ঘাসফুল পিছিয়েই থাকবে ৷”

প্রায় একই বক্তব্য জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের ৷ তিনি বলছেন, “শুধু মহার্ঘভাতা নয়, আমাদের সমস্যা আরও বেশি ৷ দীর্ঘদিন ধরে পুলিশে প্রচুর পদ ফাঁকা ৷ অফিসার নিয়োগ হচ্ছে না ৷ ফলে একজন আধিকারিককে দিনরাত কাজ করে যেতে হচ্ছে ৷ তিনি বিশেষ প্রয়োজনেও ছুটি পাচ্ছেন না ৷ অথচ তাঁরও পরিবার রয়েছে, শরীর রয়েছে ৷ কর্তারা সেসব দেখতে চান না ৷ এসব কারণেই পুলিশের সিংহভাগ এবার বিজেপিকে সমর্থন করেছে ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.