জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি, 22 অগস্ট: আরজি কর কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত জলপাইগুড়ির চিকিৎসক সুশান্ত কুমার রায়ের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ বিজেপির। সুশান্ত রায়কে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য পাবে বলে বৃহস্পতিবার দাবি তোলে গেরুয়া শিবির। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে বৃহস্পতিবার অবস্থান বিক্ষোভে বসেন বিজেপির নেতা থেকে কর্মীরা।
সুশান্ত রায়ের নামে অভিযোগ- জলপাইগুড়িতে কর্মরত অবস্থায় চিকিৎসক সুশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে। সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী-সহ ইডি দফতরেও অভিযোগ জমা পড়ে। এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে সুশান্ত রায়ের নাম না-করে সুপার CMOH বলে আখ্যা দেন বিজেপির রাজ্য নেতা দেবাশিস চক্রবর্তী।
বিজেপির জলপাইগুড়ি অভিযান-
এদিন জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের পার্টি অফিস থেকে মিছিল করে বিজেপির নেতা, কর্মীরা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে যান। সেখানে অবস্থান বিক্ষোভ করে আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। গেরুয়া শিবিরের বিক্ষোভের জন্য পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় ৷
জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, "সুশান্ত কুমার রায়কে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক কিছুই জানতে পারবে। বাম থেকে তৃণমূল সরকারের আমল পর্যন্ত দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ডাক্তার সুশান্ত কুমার রায়। সুশান্ত কুমার রায় বাম আমলে মানিক সান্যালের হাত ধরেই দুর্নীতি করেছে। যেই বাম আমলে শেষ হল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে গেলেন মা। বাম আমলে জমি নিলেন, বললেন চিকিৎসা কেন্দ্র করবেন। সেখানে বিলাসবহুল বাড়ি বানালেন।"
তিনি আরও বলেন, "সুশান্ত কুমার রায়ক জেরা করুক সিবিআই সব তথ্য বের হয়ে আসবে। আরজি কর কাণ্ডে আমরা শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ৷ দাবি এও, যে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই ৷" এনিয়ে সুশান্ত কুমার রায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বিজেপির শিলিগুড়ি অভিযান-
- এদিকে, আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ ও স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পথে নামে বিজেপিও ৷ বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ঘেরাওকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে যায়। এদিন শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক ময়দান থেকে মিছিল শুরু করে বিধানরোড হয়ে মহকুমা পরিষদে ঢুকতেই ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয় পুলিশ। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। বিজেপির কর্মী- সমর্থকরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে নিয়ে যান।
- ধস্তাধস্তিতে সেখানেই এক মহিলা পুলিশ কর্মী রাস্তায় পড়ে যান। তাঁকে তার সহকর্মী তোলেন। অন্যদিকে, মহকুমা পরিষদের প্রধান গেটে পুলিশ আটকে থাকলেও সেই গেট ভেঙে ঢুকে যান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। মহকুমা পরিষদের মূল গেট পুলিশ আটকে রাখলেও শেষ রক্ষা হয়নি। কাচ ভেঙে বিজেপি কর্মীরা ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সেখানেই আহত হন একাধিক বিজেপি কর্মী। তাঁদের মধ্যে এক বিজেপি কর্মীকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
- অন্যদিকে, গেটের সামনে বসেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, "আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে আমাদের স্বাস্থ্যবভন কর্মসূচি চলছে। সেই মোতাবেক আমরাও মহকুমা পরিষদে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিস ঘেরাও করছি। আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম, পুলিশ ব্যারিকেড লাগিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্ট করছিল। আমাদের কর্মীরা তা ভেঙে দেয়। আমাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা হয়েছে ৷ এর ফলে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীকে তার পদ থেকে না-সরানো পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।"
- এঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন মেয়র গৌতম দেব ৷ তিনি বলেন, "যারা আরজি করের ঘটনাকে সামনে রেখে নবান্নের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে তাদের মানুষই প্রতিহত করবে।"