দুর্গাপুর, 12 জুন: তাপপ্রবাহে জর্জরিত গোটা বাংলা । পুকুর শুকিয়ে যাচ্ছে ৷ খাঁ খাঁ করছে খাল-বিল ৷ বইছে গরম হাওয়া । নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের, বাদ নেই পাখি-পশুরা ৷ গরমে খুবই দুর্বিসহ অবস্থা তাদের ৷ এক ফোঁটা জলের খোঁজে হন্যে হয়ে এখানে-ওখানে ঘুরছে পশু-পাখিরা ৷ জলের দেখা পেলেই পাইপে বা পাত্রে মুখ দিয়ে মেটাচ্ছে তৃষ্ণা ।
ভাঙা বাড়ি, মন্দির ও বড় গাছের কোটরে বাসা বানিয়ে থাকে টিয়া থেকে খয়েরি হাঁড়িচাচার মতো পাখিরা । ওদের সকালটাই শুরু হয় চেঁচামেচি করে । তারপর খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘোরাঘুরি, সন্ধ্যায় আবার নিজের বাসায় ফিরে যাওয়া ৷ অন্য প্রজাতির পাখিদের সঙ্গে কয়েক হাজার টিয়া আর খয়েরি হাঁড়িচাচা পাখি রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার গভীর জঙ্গলে ৷ তাপপ্রবাহে তৃষ্ণা বাড়ছে পাখিদের । সেই তৃষ্ণা মেটাতে জলের সন্ধান করতে দেখা যাচ্ছে তাদের ।
কয়েকটি খয়েরি হাঁড়িচাচাকে আর টিয়াকে দেখা যাচ্ছে পানীয় জলের পাইপলাইনের সামনে কখন জল আসে তারই অপেক্ষায় বসে রয়েছে । ততক্ষণে যেটুকু ছিটেফোঁটা জল আসছে তাতেই কোনওরকমে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে তারা । আর বেশ কয়েকটি টিয়াকে দেখা যাচ্ছে কেউ পুকুরে গা ভেজাচ্ছে, কেউ জলের ধারে একটু আরাম করছে ৷ আবার কেউ সেই জলপান করে তৃষ্ণা নিবারণ করছে । সূর্যের তাপ কমলেই শিয়ালদের লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে ৷ এই গরমে বনের হরিণরাও ক্লান্ত হয়ে পড়ছে ৷ স্থানীয়দের মতে জঙ্গলে খাবারের অভাব ৷ তাই খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসছে পশুরা ।
দুর্গাপুর রেঞ্জের এক আধিকারিকরা বলেন, "গোটা জঙ্গলমহলে বিশেষ নজরদারি চলছে । জঙ্গলের মাঝেও বেশ কয়েকটি জলাশয় রয়েছে । সেখানেও ময়ূর আর অন্য পাখিরা জলপান করছে । জঙ্গলের মাঝে নির্দিষ্ট বেশ কয়েকটি পাত্রে ওআরএস মিশিয়ে জল রাখা হচ্ছে । কোনও পশু বা পাখি অসুস্থ হলে বন দফতরের চিকিৎসকেরা পৌঁছে যাচ্ছেন এবং শুশ্রূষা করছেন ।"