তারকেশ্বর, 30 নভেম্বর: ভিন রাজ্যে আলু পাঠাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ তাই ধর্মঘটের পথে হাটল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। হিমঘর মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী বৈঠকের পরই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার রাত থেকেই আলু ব্যবসায়ীরা কর্মবিরতিতে সামিলে হবেন বলে জানিয়েছেন আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়।
আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয় রাজ্য সরকার ও আলু ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে ৷ এর আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আলু ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না ৷ বৈঠকের পর মন্ত্রী দাবি করেন, বাজারে আলুর দাম 30 টাকার মধ্যেই রাখা হবে ৷ কিন্ত এই সপ্তাহে প্রথমে বাজার খোলার পর থেকে আলু দাম কমেনি।
রাজ্য সরকারের তরফে তিনদিন আগেই ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয় । তাতে আটকে যায় আলুর সমস্ত ট্রাক । এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হিমঘর মালিকদের একটি বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, "বাইরের রাজ্যে আলু যাওয়া এখনও স্বাভাবিক হয়নি ৷ সমস্ত সীমানা আটকে রাখা হয়েছে ৷ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ গাড়ি আটকে চালককে কেস দিয়ে চালান করে দিচ্ছে । এর প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে আমরা কর্মবিরতিতে যাব ৷ বাজারে আলু সরবরাহের কাজ ব্যবসায়ীরা বন্ধ রাখবে । সোমবার রাত থেকে রাজ্যের কোন হিমঘর থেকে কোন আলু নামান হবে না ৷
হিমঘর মালিক এসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি শুভজিৎ সাহা বলেন, "আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আজ আমাদের বৈঠক হয়েছে । আমরা তাঁদের কর্মবিরতিকে নৈতিক সমর্থন করেছি ৷ যদিও হিমঘর খোলা থাকবে ৷ কিন্ত ভিন রাজ্যে আলু না-পাঠালে আলু ব্যবসার ক্ষতি হবে ৷ আখেরে কৃষক দাম পাবে না ৷ ক্ষতির মুখে পড়বে তাঁরা ৷ যেভাবে কোন অর্ডার ছাড়া পুলিশ আলুর ট্রাক আটকাছে, তাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । যদি কোন প্রতিকার না হয়, ধর্মঘট চলবে।"
রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না ইটিভি ভারতকে ফোনে জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে আলু চাষ পিছিয়েছে। রাজ্যে যা আলু মজুত রয়েছে, তাতে জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। এমতাবস্থায় যদি আলু রপ্তানি হয়, তাতে আলুর দাম বাড়বে। এতে সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার যে কোন সময় উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে।